নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন : দেশের শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে এবার ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি। তবে অধিকাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগের তীর কিশোর গ্যাং এর দিকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায়ই কিশোর গ্যাং-এর কবলে পড়ে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে অনেকেই।
অনেকেই তাদের ভয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ কিংবা কথা বলতেও সাহস পান না। এলাকাবাসির অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব অপর্কম হলেও অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে এসব কিশোরেরা।
এর কারণ হিসেবে দেখা যায় রাজনৈতিক ছত্রছায়া, এলাকার কথিত বড় ভাইদের অনুচর হিসেবে সক্রিয় থাকছে এসব উঠতি বয়সি বিপদে যাওয়া তরুণ। এলাকাভিত্তিক গড়ে তোলা হচ্ছে ছোট-বড় অপরাধী গ্যাং। তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ফেসবুকে বিভিন্ন নামে গ্রুপ খুলে। যার কারণে অল্প সময়ে এরা সংঘটিত হয়ে অপরাধ ঘটান।
গত কয়েক মাসে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের অপ্রতিরোধ্য অভিযানে কিশোর গ্যাং অনেকাংশে বিধস্ত।
কিন্তু বছরের বিশেষ দিন কিংবা বিশেষ বিশেষ মূহুর্তগুলোতে এই কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
রাজশাহী উপশহর এলাকার ২ নং সেক্টরের প্রফেসর হারুনর রশীদ অভিযোগ করে জানান – সকাল ১০ টার দিকে স্থানীয় উপশহর ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সংঘের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন কিশোর হ্যাপি নিউ ইয়ারের পিকনিকের চাঁদা দাবি করে। আমি তাদের দেখেই বুঝতে পারি এরা বখাটে ও কিশোর গ্যাং এর সদস্য। এসময় স্থানীয় ফাঁড়িকে ফোন দিতে গেলে ঐ সকল কিশোর পালিয়ে যায়।
রাজশাহী সপুরা এলাকার ঔষুধের ব্যবসায়ী ইমরুল কায়েস বলেন – গত ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে কয়েকজন কিশোর এসে টাকা দাবি করলে আমি তাদের ৫০০ টাকা দিই কিন্তু পরবর্তীতে অর্থাৎ ২৮ তারিখে সন্ধ্যার সময় উপশহর এলাকার কয়েকজন কিশোর এসে পিকনিকের টাকা চাইলে, আমি দিতে অস্বীকার করি। এমন সময় তারা আমাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। তবে এরা প্রায় প্রায় স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম করেও বলেন বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে বলেও অভিযোগ জানান এই ক্ষুদে ব্যবসায়ী।
অন্যদিকে রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত এলাকা উপশহরে অবস্থিত একমাত্র তিন তারকা হোটেল ও রিসোর্ট রাজশাহী ইনন রেসিডেন্সিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক – গত তিন দিন ধরে হ্যাপি নিউ ইয়ারের পিকনিকের ওসিলায় কয়েকজন কিশোর বারংবার টাকা দাবি করে আসছে। এমতবস্থায় আমি তাদের সবিনয়ে অনুরোধ জানিয়ে বলি আমি নতুন একজন উদ্যোক্তা আমাকে প্লিজ একটু সময় দিয়ে সহযোগীতা করুন আমি আপনাদের জন্য মাঠে খেলাধূলার জন্য ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন কিংবা কেরাম বোর্ড দিয়ে সহযোগীতা করব। কিন্তু তারপরও তারা আমার কাছে টাকা দাবি করে আসছে যা আমাদের সমাজে আগামী প্রজন্মের জন্য এক ভয়াবহ রুপ ধারন করতে পারে।