যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জোট গড়ছে রাশিয়া-ভারত-চীন! : রাশিয়া:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

অনলাইন রিপোর্ট,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন:: চীন সোমবার নিশ্চিত করেছে যে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙ জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠেয় আসন্ন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রাশিয়া ও ভারতের নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন। মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিরগিজ রাজধানী বিশকেকে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ বৈঠকের সময়ই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দ্বিতীয় রুশ-ভারত-চীন সম্মেলনের ধারণা দেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তিন দেশেরই বাণিজ্য উত্তেজনা থাকার প্রেক্ষাপটে ত্রিদেশীয় বৈঠকটি নিশ্চিতভাবেই ওসাকা জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সর্বোচ্চ মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

এই তিন দেশের নেতারা (তারা বিশ্বের শীর্ষ ১০ অর্থনীতির দেশ) এই প্রথম জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন এমন নয়। আগেও অনানুষ্ঠানিক রাশিয়া-ভারত-চীন সম্মেলন হয়েছে। বিশেষ করে বুয়েনেস আয়ার্সে গত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়ও তারা বসেছিলেন।
অবশ্য, গত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় রাশিয়া ও চীনের সাথে যৌথভাবে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদের বিরোধিতা করলেও ভারত কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানি নেতাদের সাথেও বসে সামুদ্রিক নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কথা বলেছে। ভারত ধারাবাহিকভাবে তার ইউরেশিয়া প্রতিবেশী ও ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্রদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে উভয়ের কাছ থেকেই কিছু সুবিধা লাভ করছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আছে এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অংশীদার। তবে তা সত্ত্বেও বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের সর্বশেষ শিকার হয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ৫৪ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় পণ্যের ওপর থেকে জিএসপি সুবিধা বাতিল করেছে। জবাবে মার্কিন ২৮টি পণ্যের ওপর করারোপ করেছে ভারত।

আর রাশিয়া ও চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দপা অবরোধ আরোপ করেছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এখন পূর্ণ মাত্রায় বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চীন ও রাশিয়া চলতি মাসের শুরুর দিকে তাদের সম্পর্ককে ব্যাপকভিত্তিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকে নিয়ে যেতে সম্মত হয়। তারা একে অন্যের আরো নির্ভরযোগ্য অংশীদারে পরিণত হতে রাজি হয়। মোদির দ্বিতীয় রাশিয়া-ভারত-চীন শীর্ষ বৈঠকের উদ্দেশ্য যাই থাকুক না কেন, এবারের ত্রিদেশীয় বৈঠকটি বাণিজ্যযুদ্ধের বর্তমান অবস্থার বিরুদ্দে আরো সুনির্দিষ্ট ফলাফল বয়ে আনবে বলে আশা করা যায়।

ত্রিদেশীয় বৈঠকটিকে আরো বাস্তববাদী অবস্থায় নিয়ে যেতে হলে ভারতের পরিকল্পনাগুলো পরোক্ষভাবে সমর্থন প্রদান করার বদলে চীনকেই নিজস্ব প্রস্তাব নিয়ে সামনে আসতে হবে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা কেবল স্লোগান দিয়ে হাসিল করা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এসসিও কাঠামো বা ব্রিকস কাঠামোকে কিভাবে আরো সহযোগিতার জন্য কাজে তা নিয়ে ভাবতে হবে। এর আগে রাশিয়া ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে আন্তসংযোগ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, যাতে তাদের মধ্যে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোরটেশন করিডোরকে সংযুক্ত করা সম্ভব কিনা তা বিবেচনা করা।

অধিকন্তু ভারত সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সহযোগিতায় বিশেষভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। ইরানের ওপর মার্কিন অবরোধের কারণেই ভারত এই উদ্যোগ নিয়েছে, তা বোঝা যায়। ভারত হলো ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক। চীন হলো বিশে।বর দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক, ভারত হলো চতুর্থ। দেশ দুটি বিপুল পরিমাণে তেলও আমদানি করে। ফলে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে তাদের বিপুল ক্রয় শক্তি রয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, ভারত ও চীন তেলের মূল্য প্রশ্নে প্রধান প্রধান তেল সরবরাহকারীর প্রভাব হ্রাসের জন্য একটি ক্রেতা ব্লক গঠনের পরিকল্পনা করছে। এদিকে মার্কিন অবরোধের ফলে সৃষ্ট আর্থিক ঝুঁকি এড়ানোর জন্য রাশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডলারকে বাদ দিয়ে একটি ব্যবস্থা প্রবর্তনের চেষ্টা করছে। এই তিন দেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা ও ডলার-বহির্ভূত মুদ্রায় জ্বালানি লেনদেনের একটি সহযোগিতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া খুবই সম্ভব।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.