করোনা ভ্যাকসিনে বাড়তি ৫৬৫৯ কোটি টাকায় সায় সরকারের

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নভেল করোনা ভাইরাসের টিকা আমদানির জন্য আরও ৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। ফলে টিকার জন্য বাংলাদেশ সরকারের বরাদ্দ বেড়ে ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৫ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক বৈঠকে জরুরি ভিত্তিতে ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপার্ডনেস’ প্রকল্পটি সংশোধন করে টিকা ক্রয়ের জন্য এই বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গেল এপ্রিল মাসে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। আজ বৈঠকে টিকা আমদানির জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বাড়িয়ে সংশোধন করা হলো।’

তিনি বলেন, ‘এই অতিরিক্ত বরাদ্দের অর্থায়নের জন্য বিশ্ব ব্যাংক ৫০ কোটি ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ১০ কোটি ডলার ও আর সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭২ কোটি টাকার যোগান দেবে।’

অপর এক প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাওয়া যাবে। আমরা আশা করছি এবং বিশ্বাস করি, ভ্যাকসিন আমরা পাবো’।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নানের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আমদানির জন্য যে চুক্তি হয়েছিল, সেটি জিটুটি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি ছিল, নাকি সেরাম আর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ছিল।

জবাবে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া যাই হোক না কেন, আমরা সময় মতো তা পাবো।’

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের আথ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী ১৩ কোটি ৭৬ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। এর অংশ হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আমদানি করা হচ্ছে।’

অক্সেফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানি মিলে করোনা ভাইরাসের যে টিকা তৈরি করছে, তার উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া।

এরইমধ্যে গেল ৫ নভেম্বর ‘কোভিশিল্ড’ নামের ওই টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। এই ৩ কোটি ডোজ দেশের নাগরিকদের বিনামূল্যে প্রয়োগ করবে সরকার।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

এরইমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতি ডোজ টিকার ক্রয়মূল্য হবে ৪ ডলার (দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৪০ টাকা)। সব মিলিয়ে এ দাম পড়বে ৫ ডলার (দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৪২৫ টাকা)।

করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তির ধারা অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ৬ মাসে বাংলাদেশকে ৩ কোটি টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিমাসে টিকা আসবে ৫০ লাখ করে। বাংলাদেশ সরকার জনগণকে বিনামূল্যে এ টিকা দেয়ার ঘোষণা আরও আগেই দিয়ে রেখেছে। এছাড়া বেক্সিমকো বেসরকারিভাবেও ৩০ লাখ টিকা আনবে, যার প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১ হাজার ২০০ টাকা।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.