স্টাফ রিপোর্টার,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::- চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের একটি পোশাক কারখানার নারীকর্মী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ২৪শে এপ্রিল। খবর পেয়ে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকার মোগলটুলির বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় ওই কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ আত্মহত্যার কারণ খুঁজে না পেয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। ময়নাতদন্ত শেষে কিশোরীর লাশ স্বজনদের ফিরিয়ে দেন। এরমধ্যে কিশোরীর বোন আত্মহত্যার পেছনে বাদশা নামে এক উবার চালককে দায়ী করেন।
পুলিশ নগরীর পাঠানটুলি এলাকা থেকে বাদশাকে আটক করে ২৮শে এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সফি উদ্দিনের আদালতে প্রেরণ করে। আদালতে ১৬৪ ধারায় নেয়া জবানবন্দিতে উঠে আসে কিশোরী পোশাককর্মীকে প্রাইভেটকারে ধর্ষণের কথা। যার লজ্জা ঢাকতে গিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই কিশোরী।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশিকুর রহমান ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, যৌন হয়রানির বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। কিন্তু মৃত্যুর আগে স্বজনদের কাছে ধর্ষিত হওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি মেয়েটি। অভিযুক্ত বাদশাকে গ্রেপ্তারের পর পুরো বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত বাদশা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই কিশোরী এবং বাদশা এক সময় একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। কিন্তু বাদশা প্রায়ই ওই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করতো। বাদশা পোশাক কারখানা থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে উবার সার্ভিসের প্রাইভেট কার চালানো শুরু করে।
গত ২৩শে এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানায় ছুটির পর বাদশা ওই কিশোরীকে প্রাইভেট কারে তুলে নেয়। প্রথমে আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে যৌন উত্তেজক পানীয় পান করে। এরপর মেয়েটিকে নিয়ে প্রাইভেট কারে করে আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠের পাশে অন্ধকার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে গাড়ির ভেতরে দু‘দফা ধর্ষণ করে। দ্বিতীয়বার ধর্ষণের সময় মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়।
পরে বাদশা ও তার মা মিলে মেয়েটিকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক মেয়েটির শরীর দুর্বল উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়। বাদশা ও তার মা মেয়েটিকে নিজেদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে তাকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করে বাদশা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে কিশোরীর ভগ্নিপতি হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে বোন চাকরিতে চলে যাবার পর একা বাসায় সে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
পরে তার বোন এসে বাদশার যৌন নিপীড়নের বিষয়ে অভিযোগ করে। ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে এজাহার দায়ের করে। জবানবন্দি গ্রহণের পর বাদশাকে কারাগারে প্রেরণ করে আদালত। এছাড়া বাদশার বাসা থেকে কিশোরীর ব্যাগ, মোবাইল ও আইডি কার্ড জব্দ করে পুলিশ। …………………………………………………………………………………………………………………………………….. উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.