নিজস্ব প্রতিনিধি,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রোহিঙ্গা ডাকাত দলের খোঁজে কক্সবাজারের টেকনাফের শরণার্থী শিবিরের কাছের পাহাড়গুলোতে ড্রোনের পর এবার হেলিকপ্টার দিয়ে অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)-১৫ সদস্যরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টেকনাফের বেশ কয়েকটি দুর্গম পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয়। হেলিকপ্টার থেকে বেশ কয়েকটি ডাকাত দলের আস্তানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। এ সময় স্থলপথেও ওই এলাকায় র্যাবের অপর একটি দল অভিযান চালায়।
সন্ধান পাওয়া ডাকাত দলের আস্তানায় হঠাৎ অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫-এর টেকনাফ সিপিসি-১-এর কোম্পানি কমান্ডার লে. মির্জা শাহেদ মাহাতাব।
হেলিকপ্টার অভিযানে নেতৃত্বে দেন কক্সবাজার স্থল র্যাব ১৫-এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ। তিনি বলেন, এর আগে ড্রোন দিয়ে পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। পাহাড়গুলো অনেক বড় হওয়ায় ড্রোন দিয়ে ডাকাত দলের সন্ধান পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এবার হেলিকপ্টার দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সঙ্গে লাগানো পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ের ভেতরে সন্ধান পাওয়া ডাকাত দলের আস্তানাগুলো চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। পরে ওই সব আস্তানায় অভিযান চালানো হবে।
তিনি বলেন, এসব পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমসহ কয়েকটি ডাকাত দলের সদস্য রয়েছে। তারা খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। অতি দ্রুত র্যাবের জালে আটকা পড়বে তারা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৪টি ক্যাম্প এবং আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেয়। এদের মাঝে কিছু রোহিঙ্গা ডাকাতি, চুরি, হত্যা, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম ও সলিম দুর্ধর্ষ। বিশেষ করে টেকনাফের গহীন বনে আবদুল হাকিম ডাকাতের একাধিক আস্তানা রয়েছে। টেকনাফের ফকিরামুরাসহ গহীন বনের বিশাল এলাকায় এসব আস্তানা গড়ে তোলা হয়। এখানে তার বাহিনীর অন্তত অর্ধশত অস্ত্রধারীর বসতি রয়েছে।
কক্সবাজার ও টেকনাফ শহরের বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের একাধিক সোর্স রয়েছে। পাহাড়ের কোন স্থানে হাকিম কখন অবস্থান করে তা কেউ জানে না। পাহাড়ে রাজার বেশে চলাচল করে হাকিম ডাকাত। চালায় নানা অপকর্ম। তার বিরুদ্ধে টেকনাফের আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলাসহ সাতটি হত্যা, ছয়টি অপহরণ, একটি ধর্ষণ, দুটি মাদক ও দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
পাশাপাশি আরেক রোহিঙ্গা ডাকাত মো. সলিম ওরফে সলিম বাংলাদেশে এসে রাতারাতি হিংস্র হয়ে ওঠে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের নাম সলিম ডাকাত। জাদিমুরা এলাকার যুবলীগ নেতা ওমরকে হত্যা করে আলোচনায় আসেন সলিম। কয়েক সপ্তাহ আগে তাদের একটি গ্রুপের হাতে সলিম ডাকাত নিহত হয়েছে বলে প্রচারও হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এসব ডাকাতদের ধরতে র্যাব ও পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালায়। রোহিঙ্গা ডাকাতের আস্তানা চিহ্নিত করতে গত সপ্তাহে ড্রোন ব্যবহার করে কয়েকটি আস্তানা চিহ্নিত করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গহীন পাড়াড়ে আস্তানা চিহ্নিত করতে এবং রোহিঙ্গা ডাকাতদের ধরতে হেলিকপ্টারযোগে অভিযান চালায় র্যাব।
র্যাব-১৫-এর কোম্পানি কমান্ডার লে. মির্জা শাহেদ মাহাতাব বলেন, গহীন পাহাড়ে হেলিকপ্টারযোগে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি ডাকাত দলের আস্তানার সন্ধান মিলেছে। এসব স্থানে অভিযান চালানো হবে। এর আগে ড্রোন ব্যবহার করে কয়েকটি আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছিল। রোহিঙ্গা ডাকাতদের ধরতে নজরদারি রয়েছে আমাদের।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.