সাংবাদিকতার আড়ালে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ সেই জুলুর বিরুদ্ধে

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনঃ- রাজশাহী মহানগরীতে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী করে ৫০কোটি টাকার মালিক হওয়া সাংবাদিক নামধারী নজরুল ইসলাম জুলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন রাজশাহী মহানগরীর টিকাপাড়া(খুলিপাড়া) এলাকার মেরাজুল ইসলামের ছেলে আজিজ আলম। গত ৪ আগষ্ট পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে তিনি এ অভিযোগপত্র প্রেরন করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের অনুলিপি পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন অভিযোগকারী আজিজ আলম।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম জুলু রাজশাহী মহানগরীর টিকাপাড়া(খুলিপাড়া) এলাকার নজীর ড্রাইভারের ছেলে। খুলিপাড়া এলাকাসহ আশে পাশের অসংখ্য নিরীহ মানুষের জন্য আতঙ্কের নাম এই জুলু। তার দৃশ্যমান কোন পেশা নাই। বহুকাল থেকে সে সাংবাদিক নামে ছদ্মবেশে শহরে বসবাসরত লোকজনদের টার্গেট করে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী করে অর্থ উপার্জনে নেমেছে। সে কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অর্থশালী লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজী করায় তার একমাত্র পেশা। রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাসহ অন্যান্য থানাগুলোতে সে চালাক, সন্ত্রাসী, ধূর্ত, চাঁদাবাজ ও বোমারু জুলু নামে পরিচিত। রাজশাহী মহানগরীর থানাগুলোতে তাকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ হিসেবে চিনলেও প্রশাসনে তার পরিচিত কিছু কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গায় থাকার কারণে সে পার পেয়ে যায়। এ ছাড়াও তার সাঙ্গ পাঙ্গ কিছু দুষ্কৃতকারীরা তার আশে পাশে থাকায় সাধারণ নিরীহ মানুষ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।

অভিযোগে আরো উল্লেখ আছে, নজরুল ইসলাম জুলু বিলসিমলাতে একটি অফিস করে চাঁদাবাজির কার্যক্রম চালাচ্ছিল এমন খবরে সেখানকার এলাকাবাসীরা তাকে উচ্ছেদ করলে সে বর্তমানে সাহেববাজার আরডি মার্কেটে একটি রুম ভাড়া নিয়ে “খবর২৪ঘন্টা” নামে একটি অনলাইন পত্রিকার আড়ালে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার অফিসে সব সময় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা লেগেই থাকে।

এছাড়াও জুলু বিএনপি ও জামায়াত দলের সাথে নিজে জড়িত এবং জামায়ত শিবিরের ক্যাডারদের অর্থ ও অস্ত্রের যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত। নজরুল ইসলাম জুলু দীর্ঘকাল থেকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে রাজশাহী শহর ও আশে পাশে নামে বেনামে কিনেছে বহু জমি। সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের একাউন্টে তার প্রায় ২০ কোটি টাকা জমা রয়েছে। সে যে বাড়িতে থাকে সে বাড়ির নাম সখের বাড়ি। সে বাড়িটি কোন রাজমহলের চেয়ে কম নয়। বাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকার ওপরে। খুলিপাড়াতে যে জায়গা আছে তার মূল্য আনুমানিক ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। রামচন্দ্রপুর হাটে জমি আছে ১০ বিঘা, আনুমানিক মূল্য ২ কোটি, বিলসিমলাতে তার প্লট আছে ৪ কোটি টাকার। রাজশাহী উপশহরে তার দখলকৃত ২টি প্লট আছে যার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।

অভিযোগে আরো উল্লেখ আছে, অত্র এলাকার নতুন কোন বাড়ি নির্মাণ ও জমি কিনতে গেলে তাকে চাঁদা না দিয়ে কেউই পার পায় না। নির্মাণাধিন নতুন বাড়ি ও নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে দুষ্কৃতীকারী ও সাংবাদিক নামধারী সাঙ্গ পাঙ্গদের কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সে নিজেই লোক মারফত থানাতে অভিযোগ করে আবার উভয় পক্ষকে ডেকে মোটা অংকের চাঁদার মাধ্যমে মিমাংসা করে থাকে। এছাড়াও তার দামী কয়েকটি মোটরসাইকেল ও কার আছে। যেহেতু বাহ্যিক ও দৃশ্যমান আয়ের কোন উৎস নেই সেজন্য এই সম্পত্তিগুলো তার আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে আমি এবং এলাকার লোকের দৃঢ় বিশ্বাস।

এ ছাড়াও অভিযোগে তার নামে বোয়ালিয়া মডেল থানায় ২টি ধর্ষণ, খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জবরদখল, ডাকাতি, লুট, সন্ত্রাসী, রবি হত্যাসহ ২৫টি মামলা ও ২২টি জিডির কথা উল্লেখ আছে।

সর্বশেষে অভিযোগকারী আজিজ আলম উপরোক্ত বিষয়গুলি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক নজরুল ইসলাম জুলুর সন্ত্রাস,চাঁদাবাজি,হত্যা ও অবৈধ আয় বহিভ’ত সম্পদের ব্যাপারে দেশের প্রচলিত সর্বচ্চ আইনে ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানান।

এমন অভিযোগের বিষয়ে নজরুল ইসলাম জুলুর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার নামে কোন থানায় কোন মামলা নেই। আমার বিরুদ্ধে আপনার পত্রিকার (দৈনিক উপচার)ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নুরে ইসলাম মিলন যাদের নিয়ে সড়যন্ত্র করছে তা আমি জানি। আমার নামে কিছু লেখা হলে আদালতে কথা হবে বলে জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী বরাবর যোগাযোগ করা হলে তারা এমন অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত পূর্বক পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।

বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মনকে সাংবাদিক নামধারী নজরুল ইসলাম জুলুর বিরুদ্ধে আপনার থানাসহ বিভিন্ন থানায় কতগুলো মামলা ও সাধারণ ডায়েরী (জিডি) আছে জিঙ্গাসা করলে তিনি বলেন, নজরুল ইসলাম জুলুর বিরুদ্ধে থানা রেকর্ডে ১৫টি মামলা আছে। আর একাধিক জিডি রয়েছে। গননা না করে জিডির সংখ্যা বলতে পারি না বলে জানান তিনি।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.