With-the-intervention-of-the-Prime-Minister-there
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সর্বক্ষেত্রে নারীদের প্রশংসনীয় উত্থান ঘটেছে - মেয়র লিটন

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সর্বক্ষেত্রে নারীদের প্রশংসনীয় উত্থান ঘটেছে – মেয়র লিটন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

ষ্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: দেশ গঠনে সামরিক-বেসামরিক উভয়ক্ষেত্রে নারীদের চমৎকার প্রশংসনীয় একটা উত্থান এই দেশে ঘটেছে, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এসকল কথা বলেন। 

 

রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল ১১টায় কলেজ চত্বরে জাতীয় পতাকা, কলেজ ও পুনর্মিলনীর পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। 

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন। সেই মেট্রোরেলের চালক ছিলেন একজন নারী। এটি নারীদের জন্য একটা গর্বের বিষয়। বিমান তো বহু আগে থেকে বাংলাদেশের মেয়েরা চালায়। মেয়েরা এখন ডিসি, এসপি, পুলিশ কমিশনার সবই হচ্ছে, এমনকি র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি সর্বত্র তারা সার্ভিস দিচ্ছে। প্রায় একশ বছর আগে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত বলেছিলেন, ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিতা করিয়া কার্য্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্ন, বস্ত্র উপার্জন করুক।’ আজকে তাই হয়েছে। নারীরা শিক্ষিত হচ্ছে এবং নিজেরা নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। তারা পরবর্তীতে তার পরিবারের, সমাজের, আত্মীয়-স্বজনের এবং দেশের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। 

 

রাসিক মেয়র লিটন বলেন, দীর্ঘদিন অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে ঘরে বসিয়ে রাখার প্রবণতা আমাদের সমাজে ছিল। নানা কারণে ছিল, রক্ষণশীলতার কারণে ছিল, ধর্মীয় ভুল ব্যাখা দেওয়ার কারণে ছিল। সেই অর্ধেক জনগোষ্ঠী ঘরে বসে থেকে শুধু রান্না করে, বাচ্চার দেখাশোনা করে তাহলে তাদের যে মেধা আছে, দেশকে দেবার আছে, তাহলে সেটাতো নষ্ট হয়ে গেল, সেটাতো জাতি পেল না। সেই জন্য আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আজকে মেয়েদেরকে উঠিয়ে নিয়ে আসছেন সর্বক্ষেত্রে। 

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লিটন বলেন, দেশের সব জেলা শহরে বিশ্ববিদ্যালয় হবে। ইতোমধ্যে দেশের সকল উপজেলায় ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। পুঁথিগত যে জ্ঞান আমরা অর্জন করি সেটা তো থাকল, পাশাপাশি হাতে-কলমে কাজ শিক্ষা, যে শিক্ষা আমাদের ছেলে ও মেয়েদের সাবলম্বী হতে সাহায্য করবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে, সেই শিক্ষা প্রদানে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি আমাদের ছেলে এবং মেয়েরা সমানভাবে গ্রহণ করছে। রাজশাহীতে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। রাজশাহীকে আমরা শিক্ষানগরী বলি। এখানে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘাটতিও রয়েছে। রাজশাহীতে আমরা গালর্স ক্যাডেট কলেজ করতে চাই, যার বাস্তবতা এখানে রয়েছে,’ যোগ করেন নগর পিতা। 

 

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনীর এই অনুষ্ঠান আমাকে উদ্দীপিত করেছে। আমি এই কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলাম। কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুতে ছাত্রীদের ভর্তি করার জন্য খোঁজা হচ্ছিল। সে সময় আমি অন্য সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। তখন কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবাকে আমাকে এই কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। বাবা তখন সেই অনুরোধ রাখেননি।

 

যখন তারা আমাদের বাসা থেকে বেরিয়ে যান, তখন আমি দৌড়াতে দৌড়াতে তাদের কাছে গিয়ে বললাম, আমি আব্বাকে শান্ত করে এই কলেজে ভর্তি হব, আপনারা আমাকে ভর্তি করে নিন। সেই কারণে আজকে এই অনুষ্ঠানে এসে আমার প্রাণের টান বলে অনুভূত হয়েছে। এই অনুভবের জায়গাটিকে আলোকিত করার জন্য যদি আরও কিছু করার প্রয়োজন হলে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। 

 

সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা বলেন, রাজশাহীর সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ। নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কলেজটি। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পারিবারিক জমি দান এই কলেজ গড়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এই কলেজের কৃতি শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে কলেজকে করেছে মহিমান্বিত ও গৌরবান্বিত। সবাইকে এক জায়গায় গড়তে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গড়ে তোলা হয়েছে। সবাই একত্রে থেকে আগামীতে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। 

 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তানবিরুল আলম, লেখক ও গবেষক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা, প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নাজনীন সুলতানা, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সঙ্গীত শিল্পী রিজিয়া পারভীন প্রমুখ। 

 

 …………………..


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.