রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সানিকে মৃত ঘোষণা করেন। খুনের ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পরিবারের সদস্যরা। তাদের আহাজার ও আর্তনাদে এসময় ভারি হয়ে উঠে হাসপাতালের পরিবেশ।
রামেক হাসপাতালে নিহত সানির বাবা রফিকুল ইসলাম পাখি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আজ তার ছোট ছেলে সানির জন্মদিন। তার ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। বন্যার কারণে তাদের পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। খেলতে গিয়ে তার এক বন্ধু আহত হয়। তাকে দেখতে সে হাসপাতালে আসে। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হেতেমখা সবজিপাড়া এলাকার বিএনপি নেতা দিতির ছেলে আন্নাফ দলবল নিয়ে গিয়ে সানিকে হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে মারতে মারতে কুপিয়ে হত্যা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, হেতেমখাঁ সবজিপাড়া মহল্লার সমবয়সী কিছু ছেলের সঙ্গে রেলগেট এলাকার সনিসহ আরও কয়েকজনের বিরোধ চলছিল। এর আগে দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পরে মীমাংসাও হয়েছে। কিন্তু এই বিরোধের জের ধরেই রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে থেকে সনিকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। সনিসহ মোট ৪ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই চারজনের একজনের নাম মো. নয়ন (১৯)। নয়ন জানান, রাতে তারা কয়েক বন্ধু সনির জন্মদিন উদযাপন করেন। সেখানে বাথরুমে পড়ে গিয়ে সিজার (১৮) নামের একজনের থুতনি কাটে। এরপর সনি, নয়ন ও তৈয়বুর নামের আরেকজন আহত সিজারকে হাসপাতালে নিয়ে আসছিলেন। তখনই রামেক হাসপাতালের সামনে চারজনকে একসঙ্গে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় সিজারকে আহত দেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় নয়ন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আর তৈয়বুর ও সনিকে হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সনিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হন তৈয়বুরও।
নিহত সনির চাচা যুবরাজ উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে জানান, দু'জনকে কোপানোর পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে তারা দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সনিকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত তৈয়বুর চিকিৎসাধীন। কেন এ ধরনের ঘটনা তা তিনি জানেন না।
এদিকে ঘটনার রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই উত্তেজনা দেখা দেয়। সনি হত্যার প্রতিবাদে জড়ো হন শতাধিক নারী-পুরুষ। তারা একত্রিত হয়ে হেতেমখাঁ সবজিপাড়ার দিকে যান। এ সময় ওই এলাকাতেও উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রামেক হাসপাতালের সামনে ও হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
অন্যদিকে রাজশাহী বোয়ালিয়া থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মহসীন মাসুদ জানান পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা ঘটনার পরই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পর নিহত সনির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com