রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জয় ভাটি যেভাবে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখালেন

রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জয় ভাটি যেভাবে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখালেন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

মেজবাউল হক, কূটনৈতিক প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: কূটনৈতিক বা কূটনীতিবিদকে ইংরেজিতে diplomat বলা হয়। অর্থাৎ কোন রাষ্ট্র কর্তৃক কূটনীতি বিদ্যায় প্রশিক্ষিত  পদমর্যাদা সম্পন্ন মনোনীত ব্যক্তিকে কূটনীতিবিদ বলা হয়। যেমন বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রদূত অন্য দেশে প্রতিনিধিত্ব করলে তাকে হাইকমিশনার, ডিপ্লোমেট কিংবা এম্বাসেডর হিসেবে পরিগনিত করা হয়।

 

প্রকৃতপক্ষে, ১৯৬৯ সালে কূটনৈতিক চুক্তি সম্পর্কিত ভিয়েনা  কনভেনশন নামে আন্তর্জাতিক খসড়া আইন পাশ হয়। এরপর ১৯৮০ সাল থেকে প্রত্যেক দেশে এই আইন কার্যকর হয়।

 

করোনা উপসর্গের স্টাফদের নিয়েও ভাটি গত ২৬/০১/২০২২ তারিখে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান করেন।
করোনা উপসর্গের স্টাফদের নিয়েও ভাটি গত ২৬/০১/২০২২ তারিখে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান করেন।

কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে একজন কূটনীতিক প্রতিনিধি হিসেবে প্রত্যেক  কূটনীতিক ব্যাক্তি এমন কোন আচরণ কিংবা নিয়ম লংজ্ঞন করতে পারেননা যা উক্ত দেশের আইনি ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে বা উক্ত দেশের জনগনের জনমতের বিরুদ্ধাচারণ করে।  

 

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, খোদ বাংলাদেশের শিক্ষা মহানগরী রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি করোনা উপসর্গ নিয়েই সভা, সমিতি, মিটিং, ও নিত্য দিনের সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

 

কিন্তু  উক্ত বিষয়ে মুঠোফোনে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটিকে  করোনার বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে  তিনি উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের কূটনৈতিক এই প্রতিবেদককে জানান- ” সাব লোগ ঝুট বল রাহা হ্যা। ইয়ে ইয়োলো জার্নালিজম কা হিস্যা হ্যা ” এই কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের কূটনৈতিক প্রতিবেদক তাকে জিজ্ঞাসা করেন – তাহলে আপনার অফিসের ২৪ জন স্টাফের  করোনা পরীক্ষা করা হলেরাজশাহীতেও আপনি কেন পরীক্ষা করেননি। এর কারন কি ? এর কোন সদোত্তর দিতেও পারেননি ভাটি।

 

উল্লেখ্য যে,গত ২৬/০১/২০২২ তারিখে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি তার করোনা আক্রান্ত ২৪ জন স্টাফকে নিয়েই অফিস চালিয়ে যান। অথচ বাংলাদেশের সরকারের নিয়মানুযায়ী ভারতীয় হাই কমিশন অফিস বন্ধ লক ডাউন থাকার কথা ছিল কিন্তু তারপরেও কূটনৈতিক আইন লঙ্গন করে ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি যে কার্যক্রম চালিয়েছেন তাতে আমাদের দেশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তা সহজেই অনুমেয়।

 

অফিসের বাইরে কোন সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তিও ঝোলানো হয়নি। এরই সাথে নতুন করে ভারতে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশীরাও আক্রান্ত হয়েছেন বলে কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছেন।

 

 

অবশ্য ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি করোনা উপসর্গের এই ঘটনা এখন ‘টক অফ দ্যা সিটি’। সঞ্জীব ভাটির এই ধরনের বেপরোয়া আচরন সারা রাজশাহীতে ব্যাপক  সমালোচনা ও বির্তকের জন্মও দিয়েছে বটে। 

 

এবার দেখা যাক আদৌও  কি ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি বাংলাদেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন নাকি পুরোটাই ইয়োলো জার্নালিজমের অংশ।

 

করোনা নিয়ে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র দিবস পালন

করোনা উপসর্গের স্টাফদের নিয়েও ভাটি গত ২৬/০১/২০২২ তারিখে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান করেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে এই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের ভাষন পড়ার সময় ভাটি হঠাৎ  অসুস্থঈ হয়ে পড়েন। তৎক্ষনাৎ তাকে বারিন্দ মেডিকেল কলেজ নিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

 

নাটোর সফর স্থগিত হলো যেভাবে

এই করোনা পজেটিভ অবস্থায় উনি নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী কে এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করার অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রোগাম ঠিক করেছিলেন পরে সে অনুষ্ঠান স্থগিত হয়। উল্লেখ্য যে,ভাটি পজেটিভ হওয়ার পরও সমালোচনা এড়াতে নিজের করোনা টেষ্ট করান। 

 

 

করোনা নিয়েই জয়পুরহাট জেলায় শীতবস্ত্র বিতরন

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় গত ২০/০১/২০২২ তারিখে সঞ্জীব কুমার ভাটি জয়পুরহাট জেলায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন এবং হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জয়পুর পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক ও ধর্মীয় ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করেন। জয়পুরহাট থেকে ফিরেই ভাটি অসুস্থ হয়ে পড়েন কিন্তু নিজে করোনা পরীক্ষা না করে  তার দ্বায়ভার অফিস স্টাফদের উপর চাপান   ভারতীয় সহকারী হাই কমিশবার ভাটি।

 

যা ভাবছে রাজশাহীর সচেতন মহল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রফেসর ওবায়দুর রহমান বলেন – রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভাটি রাজশাহীতেই বসবাস করে আইনকে যেভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখালেন এতে শুধু রাজশাহীবাসী নয় বরং  দেশ তথা সমগ্র  জাতীকে  ছোট করার প্রয়াস চালিয়েছেন ।আর এটাই যদি ইয়োলো জার্নালিজম হয় তবে বলতেই হয়, ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভাটি কি সকল আইনের উর্ধ্বে?

 

প্রতিদিনই ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন অফিসে ভিসা প্রার্থী মানুষের ভীড় হয়। যার ফলে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন রাজশাহী অফিসের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতার  কারনে রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছে সচেতন মহল।


 


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.