ষ্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::৯ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবি না মানায় বুধবার সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান কক্ষে বৈঠক শেষ করে এ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের একজন শিক্ষার্থী তসলিম অভি বাংলাদেশ জার্নালকে কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, আমাদের দাবিগুলোর কোনোটাই মানা হয়নি। হাফ ভাড়াও শুধু ঢাকার মধ্যে কার্যকর হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের কক্ষে যায়। কিন্তু সেখানে কোনো দাবি মানা হয়নি, এমনকি দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাসও দেননি। এ কারণে বুধবার সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। কারো যেন ভোগান্তি না হয় সেবিষয়েও আমরা খেয়াল রেখেছি।
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, শুধু ঢাকায় কেন হাফ ভাড়া হবে? সারা দেশের শিক্ষার্থীরা কী দোষ করেছে? আমাদের দাবি না মানা হলে আরও কঠোর আন্দোলন হবে। ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত টানা আন্দোলন-কর্মসূচি চলবে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ ভবনের সামনে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবিগুলো হলো:
১. দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে মেধাবী শিক্ষার্থী নাঈম হত্যার বিচার করতে হবে ও তার পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. ঢাকাসহ সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথসহ সর্বস্তরে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস নিশ্চিত করতে হবে।
৩. জনসাধারণের চলাচলের জন্য যথাস্থানে ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যাবস্থা দ্রুততর সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সকল যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং স্পেস নির্মাণ ও যথাযথ ব্যাবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতর হবে।
৬. দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি বা মহলকে নিতে হবে।
৭. বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএ’র সকল কর্মকান্ডের উপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. ঢাকাসহ সারাদেশে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রত্যয়ের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন এবং পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৯. ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একে পাঠ্যসূচির অন্তভুর্ক করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশে কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট পালন করতে থাকেন পরিবহন মালিকরা। অঘোষিত এই ধর্মঘটে তিন দিন কেবল ঢাকার মধ্যে নয়, দূরপাল্লার সব বাসও বন্ধ ছিল। তৃতীয় দিনে গিয়ে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। পরে সরকার থেকে বাসের ভাড়া ২৬ শতাংশেরও বেশি বাড়ানো হলে ধর্মঘট তুলে নেন বাস মালিকরা।
তবে তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। কেননা নতুন ভাড়া নিয়েও যাত্রীদের সঙ্গে বচসা নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের দ্বন্দ্বই বেশি ঘটছে। পরে সারাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.