যে কারনে ভারতীয় সাংবাদিক আত্মহত্যা করলেন
যে কারনে ভারতীয় সাংবাদিক আত্মহত্যা করলেন

যে কারনে ভারতীয় সাংবাদিক আত্মহত্যা করলেন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

অনলাইন রিপোর্ট, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন  :: ৬০ মাসের বকেয়া বেতন না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন এক ভারতীয় সাংবাদিক। দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে নিজ কার্যালয়ের বার্তা কক্ষেই আত্মহত্যা করেন তিনি। ( খবর- আনন্দবাজার

 

‘ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া’য় (ইউএনআই) কাজ করতেন টি কুমার নামের এই অভিজ্ঞ ফটোসাংবাদিক। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানায়, সোমবার চেন্নাইয়ে ইউএনআই- এর কার্যালয় থেকে টি কুমারের মৃতদেহ ‍উদ্ধার করা হয়। তার বয়স ছিল ৫৬ বছর।

 

টি কুমারকে বার্তাকক্ষে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে দ্রুত তাকে কাছের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেদিনই পরিবারের কাছে তার মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।

 

টি কুমার ১৯৮৬ সালে ইউএনআই তে যোগ দিয়েছিলেন। তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান, তিনি আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন, ‘বেতনও অনেক বকেয়া পড়েছিল’।

 

‘ইউএনআই অল ইন্ডিয়া এমপ্লয়িস ফ্রন্ট’-এর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে টি কুমারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলা হয়, কয়েক মাস আগে তার স্ত্রী দুর্ঘটনায় আহত হন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি অফিসে তার বকেয়া বেতন থেকে অন্তত এক লাখ রুপি দেওয়ার আবেদন করেছিলেন।

 

‘‘কিন্তু তাকে মাত্র ২৫ হাজার রুপি দেওয়া হয়। আগামী সপ্তাহে তার মেয়ের বাগদানের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। ওই অনুষ্ঠানের জন্যও তিনি অফিসে পাঁচ লাখ রুপির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সে বিষয়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি কোনও সাড়া পাননি।”

 

ইউএনআই এমপ্লয়িস ফ্রন্টের বিবৃতিতে টি কুমারের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার পেছনে দায়ীদের কঠোর আইনের আওতায় আনার’ দাবি জানানো হয়েছে।

 

সংগঠন থেকে ইউএনআই কর্তৃপক্ষকে দ্রুত টি কুমারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লাখ রুপি দেওয়া এবং তার যাবতীয় বকেয়া বেতন এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করার চরমপত্রও দেওয়া হয়েছে। যদি তা না হয় তবে তারা ‘পুরো ভারত জুড়ে আন্দোলন শুরুর’ হুমকি দেওয়া হয়েছে।

 

ইউএনআই অল ইন্ডিয়া এমপ্লয়িস ফ্রন্টের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, কুমারের মৃত্যু ‘ভারত জুড়ে আড়াইশ’র বেশি ইউএনআই কর্মীকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। যারা এক দশকের বেশি সময় ধরে দেরি করে বেতন বা বকেয়া বেতনের কারণে মারাত্মক অর্থনৈতিক চাপে রয়েছেন’।

 

৬০ মাসের বেতন বকেয়া পড়ায় কর্মীরা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তারপরও তাদের প্রতি রূঢ় আচরণে কোনও পরিবর্তন আসেনি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের। নয়া দিল্লিতে ইউএনআই বোর্ড ও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে এই সংকট তৈরি করেছে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

 

বলা হয়েছে, ‘‘৬০ মাস ধরে বেতন না হওয়ার বিপরীতে ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের প্রাপ্য বেতন না দিয়ে মাসে ১৫ হাজার রুপি করে বরাদ্দ করেছেন। ‍চাকরিচ্যুতির সময় কর্মীদের গ্রাচুইটি, বেকায়া বেতন এবং আন্যান্য আইনি বকেয়ার কিছুই পরিশোধ করা হয় না।”

 

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন এবং এআইএডিএমকে নেতারাও টি কুমারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল থেকে তার পরিবারকে তিন লাখ রুপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। টি কুমারের পরিবারে স্ত্রী এবং তার দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.