হাইতিতে ২ সাংবাদিককে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা
তৈরি হতে চলেছে বিশ্বের প্রথম ভাসমান শহর
আত্মশুদ্ধির চিকিৎসা করে অন্তরের ১০টি গুণ
সেই দূর্নীতিবাজরা কেমন আছেন ?
হাবিব জুয়েল, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে বিদেশি মদ, অস্ত্র আর বিপুল পরিমাণ নগদ টাকাসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন জিকে শামীম। এরইমধ্যে দুইটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ফেলেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই জামিন বাতিল হয়ে যায় শামীমের।
অস্ত্র মামলায় গত জানুয়ারি মাসে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয় জি কে শামীমের। কিন্তু পরে করোনা শুরু হওয়ায় এখন বিচার কাজ বন্ধ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা। ‘তথ্য গোপন করে’ গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুইটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন তিনি। তাকে অস্ত্র মামলায় ৬ মাস এবং মাদক মামলায় ১ বছরের জামিন দেয়া হয়েছিল। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সেই জামিন পরে বাতিল হয়ে যায়।
ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির আরেক আলোচিত নাম ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। দুইটি মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। অস্ত্র মামলায় গত ৬ নভেম্বর এবং মাদক মামলায় ১৫ ডিসেম্বর চার্জশিট দেয়া হয়। মাদক মামলায় দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এনামুল হক আরমানও আসামি। মামলাগুলোর বিচার এখনো শুরু হয়নি।
গড মাদার কুইন পাপিয়া
গত ২২ ফেব্রুয়ারি দেশের বাইরে পালানোর সময় বিমানবন্দর এলাকা থেকে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হন বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া। তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৯ জুন অস্ত্র আইনের একটি মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার চার্জশিট দেওয়ার কথা রয়েছে চলতি মাসে। মাদক মামলাও রয়েছে পাপিয়ার বিরুদ্ধে।
সাহেদ-সাবরিনা গ্যাম্বলিং
ভুয়া করোনা প্রতিবেদন এবং অবৈধভাবে অর্থ আয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে ৮ আগস্ট। মামলাটি তদন্ত করেছে ডিবি। আর রিজেন্ট হাসপাতালের মো. সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হয় ৩০ জুলাই। তার বিরুদ্ধে ভুয়া করোনা টেস্ট রিপোর্টের তদন্ত চলছে।
জেলখানাতে দূর্নীতির চেস্টা অব্যাহত
এ পর্যন্ত গত কয়েক বছরের আলোচিত ঘটনা ও মামলায় বেশ কয়েকজন কারাবন্দি এখন কারাগারের বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে তারা আসলে ‘ভালো থাকার’ জন্যই নানা কৌশলে হাসাপাতালে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে জি কে শামীম, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও ডেসটিনির রফিকুল আমীন অন্যতম। জি কে শামীম, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এবং ডেসটিনির চেয়ারম্যান রফিকুল আমিন আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। সম্রাটকে কেবিনে রাখা হয়েছে। বাকি দুইজন আছেন প্রিজন সেলে। কারাসূত্রে জানা গেছে ঢাকায় আরো ৯ জন কারাবন্দি এখন কারাগারের বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর কারাগারে থাকা অন্য ‘ভিআইপি’ আসামিরা সেখানে বসেই আইনের বাইরে নানা সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগ উঠেছে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ কাণ্ডে গ্রেপ্তার সাজিন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাদত হোসেনসহ তার সহযোগীরা কারাগারে বসেই বাইরে তাদের টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এআইজি (প্রিজন) মো. মঞ্জুর হোসেন অবশ্য দাবি করে বলেন, বন্দিদের কারাগারের বাইরে আদালতের নির্দেশে অথবা চিকিৎসকদের পরামর্শেই পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্তে কাউকে কারাগারের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠায় না। তার সুযোগও নেই। অনেক সময়ই আদালত বন্দিদের আবেদনে তাদের কারাগারের বাইরে চিকিৎসার আদেশ দেন।
তিনি বলেন, কারাগারে হাসপাতাল আছে। সেখানকার চিকিৎসকরাও বন্দিদের চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। তারাই যাকে বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন বলে মনে করেন তাদের ব্যাপারে সুপারিশ করেন। যারা এখন বাইরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তারা আদালতের নির্দেশ এবং চিকিৎসকের পরামর্শেই আছেন।