কে এই রনী?
সবুজ শ্যামল গাঁয়ে বেড়ে ওঠা রনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাটিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তার বাবা মো. সেলিম হাওলাদার দীর্ঘ জীবন দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পারিবারিক বিষয়াদি দেখাশোনার পাশাপাশি কৃষিকাজ করছেন। মা রেনু বেগম গৃহিণী ও উদ্যোক্তা।
২ ভাইবোনের মধ্যে রনি বড়। একমাত্র বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। অরাজনৈতিক বাবা-মা নিজেদের কাজের ফাঁকে নানান স্বেচ্ছাসেবায় জড়িত। সেখান থেকে অণুপ্রাণিত হয়ে ১৩ বছর ধরে রনিও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কাজ করছেন।
এই দীর্ঘ সময় সে রোভার স্কাউটে, ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সে, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে কাজ করেছেন। রিপোর্টার হিসেবে ‘হ্যালো.বিডিনিউজ২৪.কম’ ও ‘ইউ-রিপোর্ট গ্লোবাল’- এও কাজ করেছেন। এভাবে ধীরে ধীরে রনি শিখেছেন আর নিজেকে গড়েছেন। বর্তমানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের একজন ট্রেনার হিসেবে আছেন, যেখানে অ্যাক্টিভ সিটিজেনশিপ ট্রেনিং করান তিনি।
এ ছাড়া ‘ইউথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশে’ ঢাকা জেলা কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ‘বিডি-ক্লীন’ বরিশালের জোনের সক্রিয় সদস্য রনি।
[embed]https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//youtu.be/vKh91RT7Cmo[/embed]
নিজের সৃজনশীলতায় টর্চলাইট ফাউন্ডেশন, ফেসবুকভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম আর্টিস্ট ফর চেঞ্জ। যার সদস্য ১০ হাজারের অধিক। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইতিবাচক ও অসাধারণ ভাবনা নিয়ে রনি বিভিন্ন কাজ করেছেন। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে ‘গ্রিন হ্যাপি বার্থডে ক্যাম্পেইন’, আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরতে ‘জাতীয় বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা’, নারীদের জন্য ‘মেকাপ আওয়ার পাওয়ার ক্যাম্পেইন’ উল্লেখযোগ্য। চমৎকার এসব কাজের স্বীকৃতিও মিলেছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃক করোনাকালীন টপ টেন প্রজেক্ট আইডিয়া নির্বাচনে ‘মেকাপ আওয়ার পাওয়ার’ সেরা আইডিয়ার একটি নির্বাচিত হয়। বন্ধুদের মধ্যমণি এই তরুণ নিজকে শুধু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। নানান সময়ে অন্যায় ও অবিচারের মুখোমুখি হলে সেটার প্রতিবাদও করেন। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়েও কাজ করেন।
একবার অ্যাক্সিডেন্ট করে ঢাবির মেডিক্যালে ভর্তি হন। সেখানে নানান সমস্যা ও অপর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবায় ক্ষুব্ধ হয়ে অনশন করে বসেন মেডিক্যাল সেন্টারেই। সর্বশেষ রেলের টিকিট কাটতে গিয়ে যখন প্রতারিত হন নিজে একাই নেমে পড়েন ছয় দফা দাবি নিয়ে। রনি বলেন, পুরো দেশ যখন ঈদ উদযাপনে ব্যস্ত আমি তখন জন অধিকারের প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায়। শুরুতে কেউ গুরুত্ব দিচ্ছিল না, অনেকে করছিল হাসাহাসি।’ তবে সেসবে না দমে গান গেয়ে, শিকল পরে অভিনব পন্থায় আন্দোলন চালিয়ে যান তিনি।
রনি বলেন, আমার কাজ দেখে অনেকে আমাকে পাগলও বলেছে। রেলওয়ে থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর সবাই জেনেছে আন্দোলনের কথা। তখন অনেকে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।’ হুমকি-ধমকি, এ-দ্বার ও-দ্বার ঘুরেছেন।
বিদেশ চলে যেতেও পরামর্শ পেয়েছেন রনি। তবে এসব রনিরা সেসবে কান না দিয়ে নিজের ও নাগরিকদের অধিকারের জন্য লড়ে যান। তার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, নির্ভীক সাহসিকতা জাতিকে মুগ্ধ করে এক দাবিতে একত্রিত করেছে। এরই মধ্যে তার কিছু সাফল্য এসেছে।
বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত স্টেশনের সামনে অবস্থান নেওয়া ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এবার সেখানে গেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
রেলের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
রোববার (২৪ জুলাই) বিকেলে তিনি কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে রনি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ তাকে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত স্টেশনের বাইরে তিনি অবস্থান করছিলেন।
ঢাকা কমলাপুর জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল হক উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন, এখানে যেন কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
এদিকে বিকেলে রনিকে নিয়ে জাফরুল্লাহ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করার জন্য হুইলচেয়ারে বসে ভেতরে প্রবেশ করতে চান। কিন্তু গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তিনি স্টেশনের বাইরে রনির সঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
তবে ড: জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেছেন - একজন রনি পুরো জাতিকে জেতার পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। আগামীর তারুণ্য তার দেখানো পথে নতুন স্বপ্ন দেখতে শিখছে। রনিরাই আনবে নতুন ভোর।গড়ে উঠবে দূর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা।
অন্যদিকে নূর,সাকি ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাথে যে কোন সংলাপে কিংবা বৈঠকে বসবেননা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মহিউদ্দিন রনি।
এক সাক্ষাৎকারে মহিউদ্দিন রনি উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন - আমি চাইনা রাজনৈতিকভাবে আমাকে কেউ কোন সহযোগিতা করুক তাই আমি নূর,সাকি ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাথে কোন সংলাপে যাইনি। কারন রেলের দূর্নীতির বিষয়টি কোন রাজনৈতিক বিষয় নয় বরং সারা বাংলার ১৮ কোটি জনতার।আমি চাই রেল দূর্নীতিমুক্ত হোক।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com