স্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: শহর হোক কিংবা গ্রাম, উপজেলা হোক কিংবা চরাঞ্চল, পুলিশদের হৃদয়ে মানবতা আর মনুষ্যত্ব এখনো বেঁচে আছে। কারন কথায় আছে ‘সব পুলিশ খারাপ হয়না ’ আবার সব পুলিশ ভালোও হয়না। পুলিশে একটা সময় ছিলো, যখন বেপরোয়া গাড়ি চালানো হোক কিংবা রাস্তায় যানজট হোক এ নিয়ে কারো মাথাব্যথা ছিলনা। কিন্তু এখন আইনের শাষন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিধায় নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাই কাজ সম্পর্কে সচেতন ও আন্তরিক। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তার উল্টো, সব সময় দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশেরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে চলেছেন ।রাস্তায় বৃদ্ধ অসহায়দের রাস্তা পারাপার করে দিচ্ছেন ওভার স্পিড, লাইসেন্স বিহিন, যানবাহনকে জরিমানা করছেন। শুধু তাই নয় যে কোন ব্যাক্তি বিপদে পড়লেই তার পাশে যেয়ে দাঁড়াচ্ছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এই সকল সদস্যরা।
তাই তো ভ্যান ওয়ালাকে সাহায্য করা লালমনিরহাট ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই আরিফ, ঢাকা বিমানবন্দরে ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় অন্ত:স্বত্তা নারীর বাচ্চা প্রসব, রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট আশিকুজ্জামানের মানবিকতা এবং চট্রগ্রামের পুলিশ কনস্টেবল মুহাম্মদ শওকত হোসেনদের মত পুলিশ চির স্মরনীয় হয়ে থাকবেন এই দেশের মানুষের মাঝে । আর আজ এ খাতায় যুক্ত হলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কন্সটেবল জামিরুল ইসলাম।
➡ যে দৃষ্টান্তের নজির রাখলেন রাজশাহীর কন্সটেবল জামিরুল
শনিবার বিকাল ৫. ৩০ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা মোড়ে দ্বায়িত্বরত ছিলেন কন্সটেবল জামিরুল ইসলাম। মহানগরীর শেষ প্রান্ত বলে সেখানে ২৪ ঘন্টাই থাকে প্রচন্ড ছোট বড় গাড়ির ভীড় ও মানুষের যানজট।এরই মধ্যে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশের এই কন্সটেবল সত্তোর্ধ এক বৃদ্ধ ব্যাক্তিকে হাত ধরে রাস্তা পারাপারে করিয়ে দিয়ে একটি অটোরিক্সায় তুলে দেন। তবে উপস্থিত অত্র এলাকার দোকানী থেকে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও এ সময় সাধুবাদ জানান ট্রাফিক কন্সটেবল জামিরুলকে। এ সময় স্থানীয় দু একজন সাংবাদিক ঐ ট্রাফিক কন্সটেবলের পূর্নাঙ্গ পরিচয় জানতে চাইলে বলেন -আমি সামান্য একজন কন্সটেবল। আমার ইনচার্জ স্যার চেক পয়েন্টে আছেন আপনি চাইলে তার সাথে কথা বলতে পারেন।
এদিকে রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুকুল উক্ত দৃশ্য দেখে মন্তব্য করে বলেন - ট্রাফিক পুলিশের এহেন মানবতা বাংলাদেশ পুলিশের মান মর্যাদাকে সমুন্নত করে। এরাই বাংলাদেশ পুলিশের গর্ব এবং বিশ্ব দরবারেও বাংলাদেশ পুলিশের মর্যাদাকে দিনে দিনে সমুন্নত করে চলেছে।
কাশিয়াডাঙ্গা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রাজমিস্ত্রী আল-আমীন হোসেন উক্ত দৃশ্য দেখে বলেন - পুলিশকে মানবিক হতে দেখেছিলাম করোনা মহামারিতে আর তারপর আজ দেখলাম একজন নিরহংকার পুলিশ কন্সটেবল একজন বৃদ্ধকে কিভাবে রাস্তা পার করিয়ে দিলেন। নি:সন্দেহে এটা মানবিক কাজ ছিল। যেটা আমাদের করার দরকার ছিল সেটি করলেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্য।
প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও জাতীয় মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং রামেকের সাবেক অধ্যাপক ডা: আহসানুল হাবীব বলেন, ট্রাফিক পুলিশে যারা রোদে ডিউটি করেন তাদের মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তীব্র উৎকণ্ঠা কাজ করে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘক্ষণ ডিউটি করার কারণে রক্তের শ্বেতকণিকারও বেশ ঘাটতি হয়।ফলে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বেশীরভাগ সময় মানষিক স্বাস্থহানীর মুখোমুখি হন এবং বয়স বৃদ্ধি পেতে থাকলে শরীরের বিভিন্ন অংশে তীব্র ব্যাথা বা হাইওব্লাড প্রেসারে ভোগেন। আমরা কেবলই তাদের বাইরেরটা দেখি। ভেতরেরটা দেখি না। বরং পুলিশকে শত্রু নয় বন্ধু ভাবুন। পুলিশ সব সময় আপনার পাশে আছে ও থাকবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com