Tasty-treat_
পচাঁ,বাসী,মেয়াদত্তীর্ন, সুগন্ধযুক্ত খাবার পরিবেশনে শীর্ষে রাজশাহীর টেস্টিট্রিট

পচাঁ,বাসী,মেয়াদত্তীর্ন, সুগন্ধযুক্ত খাবার পরিবেশনে শীর্ষে রাজশাহীর টেস্টিট্রিট

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

রমজান আলী, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::  রাজশাহীর মানুষ সহজ সরল বলেই খুব সহজেই বিশ্বাস করে সকলকেই। যেভাবে রাজশাহীবাসী বিশ্বাস করেছিল প্রান গ্রুপ কোম্পানীর টেস্টিট্রিটকে। তাই তো সেই বিশ্বাসকে ভেঙ্গে দিল এবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অফিস। যদিও টেস্টিট্রিট এখন  নেটিজেনদের গালিতে মুখরিত ফেসবুক। আর ফেসবুকের ফুডিজ গ্রুপগুলো ভোক্তা অধিকারের সরকারী ফেসবুকের পেজের ভিডিও এতই শেয়ার করেছেন যে কোন কোন ভিডিও ৪৫ হাজার এ অবস্থান করছে। 

 

 

 

অথচ বর্তমানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের উৎপাদিত পণ্য ১৪৫ টির বেশী দেশে রপ্তানি হলেও কিন্তু বিদেশের কোন দেশে ভেজালের কোন নজির নেই। শুধু বাংলাদেশ ছাড়া। এখন প্রশ্ন আসতে পারে প্রান আরএফএল গ্রুপ কি কারনে টেস্টিট্রিট প্রতিষ্ঠানের নাম রাখল?  লক্ষ্য করলে দেখা যায়, প্রানের অন্যন্য খাবার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নাম পর্যায়ক্রমে প্রাণ কনফেকশনারি লিমিটেড, বঙ্গ বেকার্স লিমিটেড (অলটাইম ও বিস্ক ক্লাব ব্র্যান্ড), প্রাণ ফুডস লিমিটেড, প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড ইত্যাদি। কিন্তু এই সকল ফুড বেভারেজের সুনামের সাথে সাথে কিছুটা বদনামও রয়েছে। বিধায় নাম পরিবর্তনে কিছুটা হলেও ব্যবসায় নতুনত্ব আসে। 

 

❝ কিন্তু কথায় আছে, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে  ❞

 

নাম পরিবর্তন হলেও কিন্তু প্রান আরএফএলের  স্বভাব পরিবর্তন হয়নি। কি বুঝলেন ? মির্জা গালিবের ভাষায় –  কুত্তে কি……… টেরী। 

 

 

🟥 টেস্টিট্রিটে অভিযানে যা বেরিয়ে এলো 

 

রাজশাহীতে  Tasty Treat এ হানা দিতেই বের হয়ে এলো ৩ দিনের বাসী,পচাঁ, বার্গার,ফ্রাইসহ কত কিছু। মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য পণ্য বিক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষণ করার অপরাধে,  ৫০,০০০/- টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অফিস। শুধু রাজশাহীতে অবস্থিত Tasty Treat এর একটি শাখায় নয় বরং টেস্টিট্রিট সাহেব বাজার শাখা, কাজিহাটা শাখা ও উপশহর শাখাকেও জরিমানা করা হয়েছে পৃথক পৃথক দিনে।

 

Tasty Treat এর অফিসিয়াল  ফেসবুক পেজে গিয়া দেখা যা, বাহারী বিজ্ঞাপনে মুখরিত এই পেজটি তবে খুব ছোট করে লেখা  ‘প্রান আরএফএল  গ্রুপ। এছাড়াও ভেরিফাইড পেজটিতে বলা আছে তারা ঘরোয়া তৈরি খাবার পরিবেশন করে কিন্তু সত্য এটাই, তারা বাহির থেকে কিনে এসে প্রিজার্ভ করে তারপর খাবার বিক্রি করে।

 

https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//fb.watch/fL3mlQPrU1/

 

 

🟥 রপ্তানিতে স্বর্ণপদক পাওয়া প্রান আরএফএল কেমন? 

 

এর মানে কি দাঁড়াল?  আমি আপনি জেনে শুনে বিষ খাচ্ছি। খাবারে সুগন্ধি থাকার কারনে বুঝেই উঠতে পারছিনা খাবারটি পচাঁ না বাসী নাকি মেয়াদত্তীর্ন।সবই কেমিক্যালের তেলেসমাতি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ হাইকোর্ট ইতিপূর্বে প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাইসহ প্রানের ৫২টি মানহীন পণ্য বাজারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপরেও প্রাণের দুধে জীবন্ত মাছ পাওয়া গিয়েছিল। পিনাট বাটার বান নামের এক রুটিতে পাওয়া গিয়েছিল ছত্রাক। সবচেয়ে বড় কথা প্রাণের চেয়ারম্যান আহসান চৌধুরীর নামেও বের হয়েছিল গ্রেফতারী পরোয়ানা। চলতি বছরেই কাদিয়ানিদের পৃষ্ঠপোষক ও অর্থায়নকারী হিসেবে চিহ্নিত করে দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএলের উৎপাদিত যাবতীয় পণ্য বয়কটের আহবান জানিয়েছেন দেশের ১০১ আলেম। তারপরও রপ্তানিতে স্বর্ণপদক পাওয়া প্রান আরএফএল গ্রুপ শ্রেষ্ঠ। কবির ভাষায় এক কথায় বলতে গেলে – ❝ হাসালে মোরে ❞

 

 

🟥 ফিরে দেখা 🟥

এবার দেখা যাক ইতিপূর্বে খাদ্যে ভেজাল নিয়ে  কি প্রকাশ করেছিল। ১৯৬০ সালে উপমহাদেশের প্রাচীনতম দৈনিক ‘আজাদ’-এর ‘হুশিয়ারী’ শীর্ষক এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছিল, ‘খাদ্যে ভেজাল মিশানো শুধু অপরাধই নহে, ইহা পাপ বলিয়াও আমাদের মনে হয়। বাহিরের দুশমন অপেক্ষাও খাদ্যে ভেজাল দানকারীরা দেশ ও জাতির অনেক বড় দুশমন। ইহাদের কাজের ফলে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগের মত প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং জাতি ক্রমে জীবনী শক্তিহীন হইয়া উঠিতে থাকে’।১ জন খুনী গুলী করে কাউকে হত্যা করলে ১ জন ব্যক্তিই নিহত হয়। কিন্তু খাদ্যে ভেজাল কোটি কোটি মানুষকে অকাল মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। 

 

 

স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভেজাল এবং এক বা একাধিক রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো খাবার খেলে মানুষের বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি ও স্মরণশক্তি হ্রাস পায়। মানুষ মেধাহীন হয়ে পড়ে। ফলে জাতির বড় শত্রু খাদ্যে ভেজাল প্রদানকারী। 

 

অন্যদিকে যমুনা টিভি তাদের ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ ডিগ্রীর ১৯৯ অনুষ্ঠানে – প্রাণে’র ভিতর বাহির নিয়ে যে অনুষ্ঠান করেছিল তার ধারাবাহিকতায় বজায় রেখেছে প্রান আরএফএল। তার প্রমান আজকের টেস্টিট্রিট। ভিডিওটি না দেখলে এখুনি দেখে নিতে পারেন। 

 

প্রাণে’র ভিতর বাহির Investigation 360 Degree | EP 199

https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//www.youtube.com/watch?v=R3EKqOCtuN4

 

🟥  মারুফ আরাহাহে সাব দূকান বান্দ কারদো 

 

❝ গাব্বার সিং আরাহাহে বাচ্চা লোগ শো যাও ❞ এই হিন্দি ডায়লোগ ছিল  ১৯৭০ দশকের সোলে সিনেমার  কিন্তু ২০২২ সালে এসে বলা হচ্ছে – ❝ মারুফ আরাহাহে সাব দূকান বান্দ কারদো ❞। তবে কি মারুফ কোন দস্যুর নাম ?  না অবশ্যই নয়। মারুফ রাজশাহী মহানগরীর এক আইকনের নাম। যিনি মানুষের খাবারের বিষয়ে কোন কম্প্রপ্রাইজ করেননা সেই সাথে করেননা ক্ষমাও। ভেজালের বিরুদ্ধে যিনি রীতিমতো মূর্তমান আতংক।

 

maruf-al-hasan-
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অফিসের সহকারী পরিচালক মারুফ হাসান

অবশ্য ১৯৭০ দশকে এ না হলেও ২০২২ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অফিসের সহকারী পরিচালক মারুফ হাসান চোখ খুলে দিয়েছেন রাজশাহীবাসীর। যদিও ৫/৬ জন সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হয় রীতিমতো তাকে। তবুও রাজশাহীবাসীর একটু ভাল থাকার জন্য এই মানুষটা বলতে গেলে ১৮ ঘন্টাই শ্রম দেন তার এই দফতরে। আর সেই মানুষের  নিরলস পরিশ্রমে বের হয়ে আসে এই সকল খাবার ও খাবার পরিবেশনের তথ্য। 

 

 

 

এদিকে মারুফ হাসান কর্তৃক টেস্টিট্রিটকে জরিমানা করার পর পরই  কেউ কেউ তো টেস্টিট্রিটকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে হ্যাশট্যাগ যুক্ত করে লেখেছেন – #বয়কটটেস্টিট্রিট  #boycottastytreat সেই সাথে  জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অফিসের সহকারী পরিচালক মারুফ হাসানকে কেউ কেউ উপাধী দিয়েছেন ❝ Maruf The One Man Army ❞

 

 

 

রাবির আইন বিভাগের ছাত্র পলাশ তার ফেসবুক টাইম লাইনে লেখেছেন – অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অনেক সৈন্যর প্রয়োজন হয়না শুধু সদিচ্ছাটুকু থাকলেই চলে।  যার মূর্তমান উদাহারন মারুফ হাসান । 

 

 

এখন বলাই বাহুল্য ❝ প্রানের ভেতর এবং বাহির❞  দুইটো আলাদা আলাদা চরিত্র। তবে টেস্টিট্রিট হোক আর মিষ্টিবাড়ি, আদি চমচম হোক বা স্পঞ্জ মিস্টি খাবার কিভাবে তৈরী হয় তা দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আপনার দেখার ও জানার বিষয়টি সুনিশ্চিত করেছে ‘গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার”। তাই খাবার খাওয়ার পূর্বে সিদ্ধান্ত নিন খাবারটা কতটুকু নিরাপদ আপনার জন্য কিংবা আপনার পরিবারের জন্য।

 

 

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাঃ রইস বলেন – রাজশাহীর অধিকাংশ ফাস্টফুড ব্যবসায়ীরা খাবারের গুনগত মান ঠিক না রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে পেটে বদহজম, হাই কোলষ্ট্রল, গ্যাষ্টিক, আলসার, হার্ট এট্যাক এমনকি ক্যান্সারের মত অসুখ দানা বাধতে পারে শরীরে। অবশ্য খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই এ অসুখ হয়না বরং ধীরে ধীরে এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে।যাকে বলা হয় স্লো পয়জনিং। 

……………………………………………………………….


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.