Rajshahi_Malopara_fari_Incharge_si_haider
রাজশাহীতে ৭ বছর ধরে গ্রেফতার বানিজ্য করেও বহাল তবিয়তে এসআই আবু হায়দার

রাজশাহীতে ৭ বছর ধরে গ্রেফতার বানিজ্য করেও বহাল তবিয়তে এসআই আবু হায়দার

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে মনে করে। বিপদে তাদের সহায়তা সহযো চায়, সেই বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কারণে পুলিশের অনেক প্রশংসামূলক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা পড়ে যায়। 

 

 

পুলিশ সদস্যদের এভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা পুলিশের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মনে করছেন অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা নিজেরা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া, ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়া, ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো, জমি দখলে সহায়তা করা, নিরপেক্ষ না থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পক্ষ নিয়ে মারধরের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছেন পুলিশ সদস্যরা।

 

সম্প্রতি এমনই দুর্নীতিবাজ এক পুলিশ সদস্যর সন্ধান পাওয়া গেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া থানায়। এই পুলিশ সদস্যর নাম আবু হায়দার। তিনি রাজশাহী বোয়ালিয়া থানাধীন মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। অবশ্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে তিনি চাকরী করছেন প্রায় ৭ বছর ধরে। কিন্তু এসব কিছুর তোয়াক্কাই করেননা এসআই আবু হায়দার। এর আগে ২০২৩ সালে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবু হায়দাদের নামে স্থানীয় দৈনিক, জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল ৭ থেকে ৮ বার। কিন্তু সংবাদ প্রকাশ হলে হবে কি এসআই আবু হায়দারের অপর নাম ‘ম্যানেজ মাস্টার’। উনি সবাইকে ম্যানেজ করেই চলাফেরা করেন।

 

অথচ সরকারী চাকরীর অধ্যাদেশ অনুযায়ী মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের ০৮ জুলাই ২০১৫ তারিখের ০৪.০০.০০০০.৫১৩.৩৫.০৩৭.২০১৫-১৯১ নম্বর পরিপত্রের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের বদলির কথা বলা হয়েছে। 

পরিপত্র সারসংক্ষেপ:

একই পদে তিন বছরের অধিক কাল যাবৎ নিয়োজিত কর্মচারীকে বাস্তব অবস্থাভেদে অন্যত্র বদলি করতে হবে।

দুর্গম অথবা প্রতিকুল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন এলাকার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মেয়াদ দুই বছর হলেও তাকে অন্যত্র বদলি করা যেতে পারে।

 

এসআই আবু হায়দারের বিরুদ্ধে জাতীয় গনমাধ্যমে প্রকাশিত ও সম্প্রাচারিত সংবাদের লিংকসমূহ

🔻দৈনিক প্রথম আলো – রাজশাহীতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পালাতে গিয়ে হাসপাতালে তরুণ

🔻 দৈনিক নয়া দিগন্ত –রাজশাহীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ঘটনায় দুই পুলিশ ক্লোজড

🔻 সময় টেলিভিশন – পালানোর জন্য পুলিশ ফাঁড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত আসামি

🔻 দৈনিক জবাবদিহি – অভিযোগ ছাড়াই ১ মাসে তিনবার গ্রেপ্তার চা বিক্রেতা আনারুল

🔻দৈনিক প্রথম আলো – রাজশাহীতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

🔻উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন – মিস্ট্রি এবাউট রাজশাহী মালোপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হায়দার

 

অভিযোগ ১

গেল ২০/০১/২০২৪ তারিখে রাজশাহী মহানগরীর হাদীর মোড় এলাকা থেকে  ৫ জনকে গাঁজাসহ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১| গাজি আলী, পিতা: ইনসার আলী, ২| আব্দুল মালেক পিতা: তোফাজ্জল হোসেন, ৩| আবুল কালাম আজাদ, পিতা : মৃত এরশাদ আলী, ৪| শ্যামল, পিতা : সাইফুল ইসলাম ৫| লিটন আলী, পিতা: তাহসেন আলী। কিন্তু পরবর্তীতে অজানা কারনে তাদের আরএমপি ধারায় চালান দেয়া হয়। এখন প্রশ্ন থেকেই যায় গাঁজাসহ আসামী ধরার পরে তা কিভাবে আরএমপি ধারায় চালান হয়।

 

 

অভিযোগ ২

গত ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর শনিবার আনুমানিক রাত সাড়ে ৮ টার সময় কেঁদুর মোড়ে আমজাদ হোসেনের ছেলে আনারুল ইসলামের চায়ের দোকানে  ৫৫০ টাকার চা-নাস্তা করেন, ওই ফাঁড়ির  এএসআই মামুন ও এ টি এস আই মিনারজুল। কিন্তু বিল পরিশোধ করেন না। সেই সময় তারা আনারুলের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং ফোন নম্বর আদান প্রদান করে তাকে বলেন, যে কোন তথ্য থাকলে আমাদেরকে জানাবেন।

 

এর কিছুক্ষণ পরে এসে তারাই আনারুল কে বিএনপির কর্মী অজুহাত দেখিয়ে আটক করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন আনারুলের দুই ছেলে রাজন ও সজল। এ নিয়ে তাকে উক্ত মাসে আনারুলকে ৩ বার আটক করা হয় । মূলত তার কাছ থেকে উৎকোচ আদায় করতে না পেরেই তাকে মামলা দেয়া হয় বকে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

 

 

অভিযোগ ৩ 

২০২৩ সালের ২২ শে জুলাই রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে  ফাহিম ও আবির নামে ২ কলেজ ছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন এসআই আবু হায়দারের টিমের সদস্য কন্সটেবল মোস্তাফিজ। এরপরব কলেজ ছাত্র ফাহিম ও আবিরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রফতারের পর ফাহিম ও আবিরের স্বজনদের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চান। এরপর  এসআই আবু হায়দারের সাথে দর-কষাকষির পর ২০ হাজার টাকা দিয়ে ফাহিম ও আবিরের স্বজনরা রাত আনুমানিক ২ টার দিকে ফাহিম ও আবিরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

তবে সার্বিক বিষয়ে এসআই আবু হায়দারের   ০১৭১৯৪৭৮২০৪ (01719478204) নং মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। এরপর তাকে কয়েক দফা মুঠোফোনে বার্তা মেসেজ পাঠালেও এসআই আবু হায়দার কোন প্রতিউত্তর করেননি। এছাড়া স্বশরীরে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে গেলেও তার দেখা পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে তিনি গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে কেনো দেখা করেননি এবং ফোন রিসিভ করেননি।?  উত্তর কিন্তু একটাই উপরেল্লেখিত ঘটনাগুলো সবই সত্য। আর এসআই আবু হায়দার সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন।

 

আরোও উল্লেখ্য যে, এসআই আবু হায়দার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের রাজপাড়া ও বোয়ালিয়া থানায় প্রায় ৭ বছর যাবৎ কর্মরত আছেন । তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হলেও আবারোও কয়েকদিন পরেই বহাল তবিয়তে ফিরে আসেন নিজ কর্মস্থলে। বিষয়টি অনেকটা এররকম, রাজশাহী মালোপাড়া  ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হায়দার সকল আইনের ঊর্ধ্বে এবং তিনিও যেন অঘোষিত সর্বেসর্বা।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.