রাবি প্রতিবেদক,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে মারধর করে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার রাত ২ টায় হলটির ২৪৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. মুন্না ইসলাম। তিনি রাবির রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে অভিযুক্ত শামীম হোসেন নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ২৪৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী হওয়া সত্বেও মারধর এবং গালিগালাজ করে তার বিছানাপত্র বের করে বাহিরে ফেলে দেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ও তার অনুসারীরা। তিনি বলেন, আমি পূর্বে হলের তৃতীয় ব্লকের ৩৫২ নম্বর কক্ষের ফ্লোরিং করে থাকতাম। চলতি মাসের ১২ তারিখে হলের ২৪৮ নম্বর কক্ষটি ফাঁকা হওয়ায় সেই কক্ষে উঠার জন্য হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমি হলের এক আবাসিক শিক্ষকের সুপারিশ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে লিখিত আবেদন দেই। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে ওই রুমে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তারপরে ১৫ জুন আমি ২৪৮ নম্বর কক্ষে উঠি।
শিক্ষার্থী মুন্না আরো বলেন, ১৫ জুন থেকে আমি ২৪৮ নম্বর কক্ষেই অবস্থান করছি। পরে গত বৃহস্পতিবার রাত ২ টায় হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আমার রুমে আসেন। এখনি এই রুম থেকে বের হয়ে যাবি এই বলে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। আমি বের হতে চাইনি বলে আমার ঘার ধরে ধাক্কা মেরে দরজার বাহিরে বের করে দেন তৌহিদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। আমাকে কিল-ঘুষিও মারেন সাধারণ সম্পাদকের সাথে আসা ওই নেতা। আমার বিছানাপত্র বাইরে বের করে দিয়ে আমার সিটে বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আসিফ নামের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে তুলে দিয়েছেন।
উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন- কাউকে নামিয়ে দেয়ার অভিযোগ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই রুমে আমি যাকে উঠাতে চেয়েছি সেই ছেলেটি খুব দরিদ্র। যার কারণে আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে মুন্না নামের ওই ছেলেটির সাথে তাকে বেড শেয়ার করে থাকতে বলেছিলাম। সেখানে মারধর ও বের করে দেয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি।
অন্যদিকে হল প্রাধ্যক্ষ ড. এএইচএম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শোনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। এবং আমরা তাকে আবার তার সিটে উঠিয়ে দিয়েছি। যদি মারধর করার মতো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আব্দুল লতিফ হলে অবস্থান নেন এবং হল প্রভোস্টের সাথে তারা আলোচনায় বসেন।
আলোচনা সভায় শিক্ষাকরা বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয় এভাবে চলতে পারে না। প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমরা শিক্ষক হয়ে সেটা মেনে নিতে পারিনা। এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন দৃষ্টান্ত পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এঘটনায় শিক্ষকরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। উক্ত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সত্যতা মিললে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেছেন হল প্রভোস্ট এএইচএম ড. মাহবুবুর রহমান।
উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. কুদরত-ই জাহান, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান প্রমুখ।
News Source & Ref : BSS। UP। PNS। BNA। UNB । dbcnews । Google News। Yahoo news । Bing news
Shortlink :
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.