si-saminul-and-asi-ainul-rmp-db
১ লক্ষ টাকা নিয়ে কথা রেখেছেন রাজশাহী মহানগর ডিবি এসআই সামিনুল এবং এএসআই আইনুল

১ লক্ষ টাকা নিয়ে কথা রেখেছেন রাজশাহী মহানগর ডিবির এসআই সামিনুল এবং এএসআই আইনুল

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: ক্রিমিন্যাল সাইন্সের একটা চেপ্টার রয়েছে সেটাকে বলা হয় ক্রিমিনোলজি। সচারাচর আমাদের দেশে এই বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ানো হয়না। কিন্তু ৪র্থ প্রজন্মের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই বিষয়গুলো পড়ানো হয়। যেমন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি, ক্যাম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি। সে যাই হোক পুরা বিষয়টিকে বলা হয় অপরাধ বিজ্ঞান। অপরাধ বিজ্ঞান সব সময় একটা কথা বলে, কোন অপরাধী যখন অপরাধ করে তখন সে তার ফুটপ্রিন্ট বা প্রমান রাখবেই।

 

তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত বলেন – অপরাধের ফুটপ্রিন্ট রাখা অপরাধীর ঐশ্বরিক বৈশিষ্ট্য মাত্র।

 

 

 

তেমনি ২০২২ সালের ২০ শে সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেট্রোপলিটন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সামিনুল ইসলাম মতিহার থানা এলাকার প্রায় ১১ টি মামলার আসামী কাদোঁ নামে এক মহিলাকে হেরোইনসহ গ্রেফতার করেন। এ সময় এসআই সামিনুল ইসলামের টিমে ছিলেন এএসআই আইনুল ( যিনি দাম্ভিকতার সাথে বলে থাকেন আমি র‍্যাব ৫ থেকে এসেছি)। স্বাভাবিক ভাবেই কাদোঁকে গ্রেফতার করার পর কাঁদোর বোন মেরী কে দেখা যায় ডিবি অফিসে। উল্লেখ্য যে, মেরী আগে রাজশাহী গোদাগাড়ী এলাকায় বসবাস করত এবং মাদক ব্যবসাও করত । তবে স্বভাবতই অনুমেয়, হেরোইন ব্যবসায়ী কাদোঁর কাছে যে হেরোইন উদ্ধার হয় তা তার বোন সেই মেরীর।

 

 

 

কাঁদো গ্রেফতারের পর পরেই কাঁদোর বোন মেরী লোভনীয় অফার দেন – রাজশাহী মহানগর ডিবির এসআই সামিনুল এবং এএসআই আইনুলকে। রাজশাহী ডিবি অফিস সংলগ্ন চায়ের ষ্টলে মেরী তাদের বলেন ৪ লাখ টাকা নেন এবং আমার বোনকে ছেড়ে দেন। তখন এসআই সামিনুল আসামী কাদোর বোন মেরিকে বলে আমাদের ডিবি অফিসে কোন আসামি ঢুকে যাওয়ায় পরে ছাড়ার কোন উপায় নাই, বরং আপনি ২ লাখ টাকা দিলে আপনার বোনকে হিরোইন মামলার পরিবর্তে ১০ পিছ ইয়াবা দিয়ে মামলা দিতে পারবো। তখন মেরি এসআই সামিনুলকে বলেন ঠিক তাই করেন তবে আমাকে টাকা নিয়ে আসার জন্য কিছুক্ষণ সময় দেন বলে সেখান থেকে চলে যায়।

 

 

 

ঠিক এ সময় উক্ত চায়ের ষ্টলে থাকা কয়েকজন সাংবাদিক বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জনাব আবু কালাম সিদ্দিককে মুঠোফোনে বিষয়টি অবহিত করে। পরবর্তীতে আসামি কাদোর বোন মেরি সামিনুলকে উক্ত ২ টাকা দিতে আসলে এসআই সামিনুল আসামী কাদোর বোন মেরিকে বলে আপনার বোনকে হিরোইন মামলা দেয়ায় লাগবে কারন আমার উপর উর্ধতন অফিসারদের চাপ আছে। তবে আপনি চাইলে এই টাকার বিনিময়ে মামলাতে হিরোইনের পরিমান কমিয়ে দিতে পারবো এবং এই মামলার সাথে আপনার বোনের পূর্বের আর কোন মামলার রেফারেন্স দিব না, এখন আপনি রাজি থাকলে টাকা দিয়ে যান।

 

 

 

তখন মেরি এসআই সামিনুলকে বলে আমি তাহলে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিব কিন্তু আরেকটা কাজ করে দিতে হবে তা হলো,আমার বোনের ছবি প্রকাশ করা যাবে না। এসআই সামিনুল এবং এএসআই আইনুল কাদোঁর মামলায় হিরোইনের পরিমান কমিয়ে দেয়া,মামলায় পূর্বের কোন মামলার রেফারেন্স না দেয়া এবং তার ছবি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েবসাইটে ও প্রেস রিলিজে না দেয়ার শর্তে মাদক ব্যবসায়ী কাদোঁর বোনের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহন করেন। যেই কথা সেই কাজ। তবে সত্যি সত্যি এই কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী কাদোঁর মামলায় হিরোইনের পরিমান কমিয়ে দেয়া হয় মাত্র ১১ গ্রাম, মামলার সাথে পূর্বের কোন মামলার রেফারেন্স দেয় নাই এছাড়াও সরকারী প্রেস রিলিজে ছবি ছিল না কিংবা রাজশাহী মহানগর ডিবির ফেসবুক পেজেও ছিলনা ছবির কোন অস্তিত্ব। অথচ ১০ গ্রাম হেরোইন কিংবা ১ গ্রাম গাঁজা নিয়ে কোন আসামী ধরা পড়লেও তার ছবি দেয়া হয় কিন্তু এত বড় মাদক ব্যবসায়ী ধরার পর তার ছবি কেনো প্রাকাশ্য আসলোনা তা প্রশ্নবিদ্ধ বটে ।

 

 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর ডিবির এসআই সামিনুলের ০১৭১৬৯২৬৩৮১ নাম্বারে ফোন দিলে তিনি জানান – এটা হতেই পারেনা আপনি ওয়েবসাইটে দেখেন আমরা ছবি তুলে দিয়েছি।

 

 

নিম্নে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েবসাইটের স্ক্রীনশট দেয়া হলো যেখান উক্ত দিনের মাদক ব্যবসায়ী কাদোঁর কোন ছবিই নেই।

 

এর কিছুক্ষন পরেই মাত্র ১ মাস আগে রাজশাহী র‍্যাব ৫ থেকে আসা রাজশাহী মহানগর ডিবির এক এএসআই আইনুল দাম্ভিকতার সাথে উল্টো তার ব্যাক্তিগত ০১৭১৪৬৯১৩৪৯ নাম্বার থেকে ফোন করে সাংবাদিকদের বলেন – আমাকে চেনেন আমি র‍্যাব ৫ থেকে এসেছি রাজশাহী মহানগর ডিবিতে। আমাকে অনেকেই চেনে।

 

পরবর্তীতে রাজশাহী মহানগর ডিবির ১ নং টিমের টিম ইনচার্জ এসআই মাহফুজুর রহমানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান – মাদক ব্যবসায়ী কাদোঁর গ্রেফতারের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

 

এদিকে অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মানবিক পুলিশ কমিশনার জনাব আবু কালাম সিদ্দিক রাজশাহী মহানগর ডিবির এক যোগে ৪১ পুলিশ অফিসার বদলীর মধ্যে দিয়ে নিযুক্ত করেন রাজশাহী মহানগর ডিবির বর্তমান ডিসি আরেফিন জুয়েলকে। যার দিক নির্দেশনায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে রাজশাহী মহানগর ডিবি। যা হাত ধরেই রাজশাহী মহানগর ডিবি ফিরে পেয়েছে তার গৌরব । ঘাতক, মাদক, সন্ত্রাসী এবং জামাত শিবিরসহ অসংখ্য অপরাধীদের জন্য রাজশাহী মহানগর ডিবি এখন আতংকের নাম। রাজশাহী মহানগর ডিবির বর্তমান ডিসি আরেফিন জুয়েলের তত্ত্বাবধায়নে যে পরিমান মাদক, অস্ত্র, উদ্ধার হয়েছে তা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

 

 

অথচ এসআই সামিনুল এবং এএসআই আইনুলদের মত পুলিশ সদস্যদের কারনেই ম্লান হয়ে যায় কিছু অর্জন কিছু গৌরব।

 

 

 


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.