Ward-secretary-to-millionaire-businessman-Shamsul
রাসিক কর্মী শামসুলের বর্তমান নির্মানাধীন বাড়িটি দেখলে আপনাকে চমকাতেই হবে।

ওয়ার্ড সচিব থেকে কোটিপতি রাসিক কর্মী শামসুল

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

ওলি আহম্মেদ, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: নাম তার শামসুল। এক সময় ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরের সচিব। করতেন জামাত বিএনপির রাজনীতি। বিয়ে করেছেন রাজশাহী মহানগরীর কাঠালবাড়িয়া এলাকায়। কিন্তু বর্তমানে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কর্মী হিসেবে কর্মরত আছেন। কিন্তু ভাবখানা এমন সিটি কর্পোরেশন তিনিই চালান। অবশ্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের সচিব থাকাকালীন দূর্নীতি দায়ে অভিযুক্ত হলে তাকে রাসিকের উন্নয়ন শাখায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ২০১৪ সালে রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় বিএনপি জামাতের নাশকতা মামলায় শামসুলের নাম আসলেও তা সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন বিএনপির মেয়র বুলবুলের হস্তক্ষেপে সেই মামলার অভিযোগ থেকে অব্যহতি পান রাসিক কর্মী শামসুল। বর্তমানে হাইব্রিড আওয়ামীলীগ সেজে নিজ শ্যালক মনোয়ার হোসেনকেও মাস্টার রোলে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন রাসিকের লাইন শাখায় ।

কিভাবে রাসিক কর্মী থেকে ভূমিদস্যু শামসুল? 

সম্প্রতি রাজশাহী কাঠালবাড়িয়া এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন জমি ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত রাসিকের এই উন্নয়ন কর্মী শামসুল। অবশ্য জমি কেনাকাটার কাজ করে থাকেন তার শ্বশুর মকসেদ আর মকসদের সহযোগী শামসুলের শ্যালক রাসিকের লাইন ম্যান মনোয়ার হোসেন।  অর্থাৎ  রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মী শামসুল ও তার শ্যালক  মনোয়ার আর শামসুলের শ্বশুর মকসেদ মিলে গড়ে তুলেছেন এক ভূমিদস্যু চক্র।

যে সকল জমিতে কিছুটা খাজনা খারিজের সমস্যা থাকে সে সকল জমি কম দামে কিনে নেয় এই চক্র। এরপর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মী ও মেয়র মহোদয়ের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সেই জমি বিভিন্ন ডেভলপার কোম্পানির কাছে চড়া দামে বিক্র‍য় করেন রাসিকের উন্নয়ন কর্মী শামসুল।আর এভাবেই রাতারাতি ❝ আঙুল ফুলে কলাগাছ❞  বনে গেছেন রাসিক কর্মী শামসুল।

রাসিক কর্মী শামসুলের বর্তমান নির্মানাধীন বাড়িটি দেখলে আপনাকে চমকাতেই হবে। কারন রাজশাহী মহানগরীর কাঠালবাড়িয়া এলাকা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা যাওয়ার পথে ৬ তলা (আনুঃ) ফাউন্ডেশন দিয়ে অত্যাধুনিক দামী টাইলস লাগানো দৃস্টি নন্দন বাড়িটি কিভাবে নির্মান করতে পারেন তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

রাসিক কর্মী শামসুলের বর্তমান নির্মানাধীন বাড়িটি দেখলে আপনাকে চমকাতেই হবে।রাজশাহী মহানগরীর কাঠালবাড়িয়া এলাকার স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে  স্কুল শিক্ষক মাজেদ জানান – পাঠখড়ি ও টিনের বাড়িতে থাকা রাসিক কর্মী শামসুল কিভাবে এত টাকার মালিক বনে গেলেন তা আমার বোধগম্য নয়। এটার তদন্ত হওয়া উচিত। 

Rajshahi-City-corporation-worker-shamsul-monowar
ওয়ার্ড সচিব থেকে কোটিপতি রাসিক কর্মী শামসুল

অত্র এলাকার মুদি ব্যবসায়ী আকরাম জানান- আমাদের ভাই ব্রাদার সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করে। কই তারা তো একই চাকুরী করে ১ তালা বাড়িও ঠিকমত নির্মান করতে পারেননি। তাহলে শামসুল আর তার শ্যলক রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন থেকে কি ❝ আলাউদ্দিনের চেরাগ ❞ পেয়েছেন। সবই বুঝি ভাই কিন্তু মুখ খোলা মানা। তারা মেয়র সাহেবের কাছের লোক বলে শুনেছি।

পুলিশি হয়রানি 

এই শামসুল চক্র বিভিন্ন সময় মানুষকে বিভিন্ন চক্রান্ত করে বিপদে ফেলে তার জমি কিংবা বসত ভিটা রাতারাতি লেখে নেয়। আবার দাদন ব্যবসার সাথেও সম্পৃক্ত রয়েছেন শামসুলের স্ত্রী সীমা। এলাকায় অভিযোগ আছে কাউকে কাউকে বড় ধরনের বিপদে ফেলার জন্য রাসিক কর্মী শামসুল নিজ স্ত্রীকেও হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পিছুপা হননা। কাশিয়াডাঙ্গা থানা সূত্র জানায়, নিজে মারামারি করে উল্টো মানুষের নামে থানায় অভিযোগ দিয়ে আসেন শামসুল চক্র।

রাসিকের ১ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলেরর অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে শামসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিলেও শামসুল উপস্থিত না হয়ে উল্টো কাউন্সিলরকে বলে থাকেন ❝ আমি মেয়রের লোক কাউন্সিলরের টাইম আমার কাছে নাই ❞ 

এলাকাসূত্র আরোও জানা যায় ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কর্তৃক সামাজিক বিরোধের নিস্পত্তির জন্য হাজিরের নির্দেশ দিলেও তিনি হাজির হননি। 

এদিকে অপ্রতিরোধ্য রাসিক কর্মী শামসুল ও লাইনম্যান মনোয়ারকে  রুখতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র বরাবর অভিযোগ দাখিল হয়েছে। 

উক্ত বিষয়ে রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিশুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- রাসিক কর্মী শামসুল রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন শাখায় কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে রাসিক অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে।

অন্যদিকে রাজশাহী দুদকের আঞ্চলিক কার্যালয়েও রাসিক কর্মী শামসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে গোপন একটি সুত্র জানিয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী শহর রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জামাত খান বলেন – শান্তির নগরী রাজশাহী। কিন্তু সম্প্রতি রাজশাহীতে বেশকিছু ভূমিদস্যু ও দাঙ্গাবাজ ব্যাক্তি যত্রতত্র পুকুর খনন এবং বসত ভিটাসহ জমি জায়গা দখলের বানিজ্যে নেমেছেন।এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ। নতুবা এই সকল ভূমিদস্যু সমাজ তথা রাজশাহী মহানগরীর জন্য হুমকি স্বরুপ। বিধায় সে সরকারি চাকুরীজীবি হোক কিংবা বেসরকারি দফতরের চাকুরীজীবি হোক কিংবা নেতাই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কারন ভূমিদস্যু কোন দলের হতে পারেনা কিংবা অফিসেরও হতে পারেনা তারা দেশ তথা জাতির শত্রু।



উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.