অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে রাজশাহীর পবা উপজেলার হড়গ্রাম এলাকায় বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদার হিসেবে সাবেক বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে হাজী রিপন কাজটি পেয়েছিলেন।
কাজ চলাকালে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে পানি কমে এসেছে। তবে আই বাঁধের পাশ দিয়ে পানির স্রোত যাচ্ছে। এই স্রোতের তোড়ে আই বাঁধের পশ্চিম অংশের প্রায় ৪০ মিটার ধসে গেছে।
বালু দিয়ে করা এ বাঁধের ওপরের অংশে থাকা জিও ব্যাগ পানিতে নেমে গেছে। জিও ব্যাগের নিচে থাকা কাপড়ের কার্পেটও ছিঁড়ে নেমে গেছে। এ কারণে বাঁধের বালু বের হয়ে গেছে। রোদে শুকিয়ে যাওয়া এসব ঝুরঝুরে বালুও প্রতিনিয়ত নিচে নামছে। ফলে একটু একটু করে বাঁধ ভাঙছেই। এ ছাড়া বাঁধের বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় ফাটল। এই বাঁধের কিছুটা পশ্চিমের এলাকাটির নাম নবগঙ্গা। সেখানেও ভাঙন চলছে।
আই বাঁধে কাপড় কাঁচতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রাবেয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচদিন আগে হড় হড় কইরি বালুর বস্তা নাইমি গেল। অ্যারপর থাকি একটার পর একটা বস্তা নাইমছেই।’
এলাকার একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি জানালেন, নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ না থাকায় আই বাঁধের পশ্চিমে নবগঙ্গা এলাকাটি দেড় মাস ধরে ভাঙছে। দেড় মাসে অন্তত ৫০ ফুট জায়গা ভেঙে নদীতে নেমে গেছে। পদ্মার পানিটা প্রথমে নবগঙ্গার তীরেই ধাক্কা খাচ্ছে। তারপর পানি এসে আই বাঁধে আঘাত করছে। এ কারণে আই বাঁধও ভাঙছে।
অত্র এলাকায় বসবাস করা রাজশাহী কলেজের একজন প্রফেসর বলেন, মূলত আই বাঁধের পূর্বে হাইটেক পার্ককে রক্ষা করার জন্যই বাঁধটা করা হয়েছে। বাঁধের কারণে পূর্বে বাগানপাড়া এবং হাইটেক পার্ক এলাকার এখনও ক্ষতি হচ্ছে না। তবে বাঁধটা ভেঙে গেলে ওই এলাকা ঝুঁকিতে পড়বে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছেন। কেউ কেউ ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষক্র অবগত করলেও বিষয়টি আমলে নেননি কেউই।
কিন্তু এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, বাঁধের ভাঙনের বিষয়টি তাঁরা অবগত। এক বছরের মধ্যে বাঁধের ক্ষতি হলে নির্মাণকারী ঠিকাদার নিজ খরচে সংষ্কার করে দিতেন।
কিন্তু এক বছর পার হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদারকে ধরা যাচ্ছে না। এখন তাঁরা এটি সংষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। ১৫ দিনের মধ্যে বাঁধটি সংষ্কারের জন্য একজন ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com