বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজশাহী শহরের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক থাকলেও এরপর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরও অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়ে। তবে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক ছিল।
রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, রানীবাজার ও মহিলা কলেজ এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এবং পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য আছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই পাঁচজনের মধ্যে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একজন এবং আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী রয়েছেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে এই শিক্ষার্থীর ঘাড়ে কোপ দেওয়া হয়েছে।
আহত অন্যদের মধ্যে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক মো. রানা, মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুবেল, যুবলীগ নেতা মো. নাইম, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাওন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট জমায়েত হওয়ার কথা ছিল কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের। এ জন্য তারা সাহেববাজার ও মালোপাড়া এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
পরে শিক্ষার্থীরা কিছুটা সরে গিয়ে রাজশাহী মহিলা কলেজ এলাকায় অবস্থান নেন। সেখানে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই গাড়িতে থাকা চালকসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হন ইটের আঘাতে। পরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে তারা পালিয়ে যান। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ এসে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়।
এদিকে আন্দোলনকারীরা যেন অবস্থান না নিতে পারে এ জন্য সকাল ১০টা থেকে রাজশাহী সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি।
এর আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে এসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বক্তব্য দেন রাকিব হাসান অর্ণব। তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জিরোপয়েন্ট থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের মধ্যে বিশৃঙ্খলাকারীরা ঢুকে অনেক ক্ষতি করেছে। কারা এরা কীভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করল, সেটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। আমরা বিশ্বাস করি সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়ে কোটা সংস্কার করবে। এটি ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তাই আমি জিরো পয়েন্ট থেকে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
দুপুর ২টা পর্যন্ত এ সমাবেশ চলে। ২টার পর রাজশাহীর বিভিন্ন সড়কে আন্দোলনকারী কিংবা ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা–কর্মীদের তেমন দেখা যায়নি। তবে শহরের আরডিএ মার্কেট, সাহেববাজার, নিউমার্কেট, বাটার মোড়, রানীবাজারসহ অন্যান্য এলাকায় বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে। এসব এলাকা ঘুরে অল্প কিছু দোকান খোলা দেখা গেছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com