থানা প্রতিনিধি, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ‘কুমারগাঁও উপকেন্দ্রের চারপাশে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের ভেতরের পানি সেচে বাইরে ফেলা হয়েছে। এখন এই কেন্দ্র অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত বলা যায়। রোববারই উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রকে একইভাবে ঝুঁকিমুক্ত করা হয়।’সিলেট নগরী ও সুনামগঞ্জ শহরের বেশির ভাগ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ। সিলেটের বেশ কিছু উপজেলাতেও সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনও অন্ধকারে আছে দক্ষিণ সুরমা, কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা। সুনামগঞ্জের উপজেলাগুলো এখনও বিদ্যুৎহীন।
বাঁধ নির্মাণ শেষে সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইনের উপকেন্দ্রকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে সোমবার। পানিতে তলিয়ে যাওয়া এই উপকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয় শনিবার। উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে পানি সরিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। গত রোববার থেকে দক্ষিণ সুরমা উপকেন্দ্রের পানি নিষ্কাশন ও বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির। বন্যায় গত বুধবার তলিয়ে যায় উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র। আর বৃহস্পতিবার থেকে জাতীয় গ্রিড লাইনের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রেও পানি ঢুকতে শুরু করে। এই উপকেন্দ্র থেকেই সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
উপকেন্দ্রের পানি নিষ্কাশন ও চারপাশে বাঁধ নির্মাণে শুক্রবার সকাল থেকে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে শনিবার দুপুরে উপকেন্দ্রের সুইচবোর্ড তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পানি সেচে সেদিন সন্ধ্যা থেকেই নগরীর কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ‘কুমারগাঁও উপকেন্দ্রের চারপাশে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের ভেতরের পানি সেচে বাইরে ফেলা হয়েছে। এখন এই কেন্দ্র অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত বলা যায়।
‘রোববারই উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রকে একইভাবে ঝুঁকিমুক্ত করা হয়। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়। এখন দক্ষিণ সুরমা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে বাঁধ নির্মাণ ও পানি সেচার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি মঙ্গলবারের মধ্যে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’ তিনি জানান, সিলেটে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে এখন ৪০ হাজারের মতো বিদ্যুৎহীন আছেন। মঙ্গলবারের মধ্যে আরও ৪০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য কাজ চলছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার রায় জানিয়েছেন, সিলেট-২-এর অধীনে আছেন ২ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট এখনও বিদ্যুৎহীন। সোমবার কোম্পানীগঞ্জের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর কাজ চলছে। তবে পানি না নামলে সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যাবে না। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর আওতাধীন ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় সবাই বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় চলে এসেছেন বলে জানান সমিতির জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী।
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যার এই বিপদে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত, তবে আমরা নগরবাসী আরেকটি মহাসংকটের মধ্যে পড়ে যেতাম। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ত। কেউ কারও কোনো খোঁজ নিতে পারতাম না। পানিবন্দি মানুষসহ নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যেত অনেকাংশে।
‘তাই অতি জরুরি বিবেচনায় সিলেট সিটি করপোরেশন কুমারগাঁও কেন্দ্রটি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়। এই চেষ্টায় সিলেটের সব প্রশাসন, দপ্তর সংস্থাসহ সেনাবাহিনী প্রসংশনীয় ভূমিকা পালন করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্লাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঞ্চালন অব্যাহত রাখার উপযোগী করতে সক্ষম হয়।’ সুনামগঞ্জ শহরের অর্ধেক এলাকাতেও সোমবার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com