poba-dolil-lekhok-sovapiti-ainal
নাশকতা মামলার আসামী ও সীমাহীন দূর্নীতি করেও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল

নাশকতা মামলার আসামী ও সীমাহীন দূর্নীতি করেও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

ষ্টাফ রিপোর্টার || উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::  রাজশাহীর পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হক ২০১৫ সালের মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ বায়াবাজার থেকে তাকে আটক হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও নাশকতা মামলার আসামী হয়েও রাতারাতি খোলস পালটে হয়ে গেছেন হাইব্রিড আওয়ামীলীগার। 

 

 

একজন নাশকতার মামলার আসামী যখন দলিল লেখক সমিতির মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনে সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন তবে আমরা তার কাছ থেকে কি আশা করতে পারি তা সহজেই অনুমেয়। 

 

 

এবার দেখা নাশকতা মামলার আসামী হয়েও পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হক কি কি অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন তা এক নজরে দেখা যাক।

 

 

প্রতিবন্ধীর জমি জালিয়াতি 

২০২১ সালের জুলাই মাসে ভূগরোইল সন্তোষপুর পশ্চিম পাড়ার সাড়ে সাত শতক জমি গৌরস্থান নামে আর এস রেকর্ড হয়। কিন্তু  উক্ত জমির মালিক মৃত্য হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বাক্প্রতিবন্ধী মুক্তার আলী ও তার দুই বোন শেফালী বেগম ও লতিফা বেগম। মুক্তার আলী পবা উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত বাক্প্রতিবন্ধী ও ভাতাপ্রাপ্ত।

 

আরোও উল্লেখ্য যে, গত ২০২১ সালের ১৫ ই জুলাই সারা দেশে যখন কঠোর লক ডাউন সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ২৫ জুলাই দলিল লেখক সভাপতি আয়নালের চেম্বারে সেই দিন করা হয় দলিলের রেজিস্ট্রেশন । তাদের সাড়ে সাত শতক জমি রেজিস্ট্রারী করে নেন ভূগরইল এলাকার সুনিলের ছেলে জাহিদ ও হোসেনের ছেলে ইমন। এদের সহযোগীতাকারী দুর্নীতি দায়ের বহিষ্কার হওয়া পবা উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাইট গাড কবির, রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী পিওন আমিনুল হক ও দলিল লেখক সভাপতি আয়নাল হক।

 

নিম্নে পূর্বে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের লিংক দেয়া হল

রাজশাহীতে গোরস্থানের জমি দলিলে ভিটা উল্লেখ করে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ – দৈনিক সময়ের কন্ঠ

https://somoyerkontha.com/archives/17642

পবায় সভাপতির বিরুদ্ধে দলিল জালিয়াতির অভিযোগ সিল্কসিটি নিউজ

https://silkcitynews.com/%E0%A6%AA%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%B8%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A6%B2/

রাজশাহীতে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আটক

https://www.banglanews24.com/public/politics/news/bd/373272.details

 

 

 

পবা সাব রেজিস্টার অফিসের দুর্নীতির কর্নধার আইনাল

অনুসন্ধানে জানা জানা গেছে, রাজশাহী পবা সাব রেজিস্টার অফিসে সপ্তাহে মঙ্গলবার বাদে ৪ দিন দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। বেশির ভাগ দলিল হেবাবিল এওয়াজ, আমমোক্তার নামা, দানপত্র ও ঘোষণাপত্র দলিল। এতে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরের রেজিস্ট্রি করা দলিল পরীক্ষা করলে এর সন্ধান পাওয়া যাবে।

 

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, দলিলের ফি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও সেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। তার চাহিদামতো টাকা না পেলে বিভিন্ন কাগজপত্রের অজুহাতে হয়রানি করা হয়। আবার টাকা পেলে সব কাগজ বৈধ হয়ে যায়। একাধিক দলিল লেখক জানান, সেরেস্তা না দিলে জমি রেজিস্ট্রি তো দূরের কথা সীমাহীন হয়রানির স্বীকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের।

 

তাই বাধ্য হয়েই সেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হয়। তবে কাগজপত্রে ঝামেলা থাকলে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রত্যেক দলিল থেকে সেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলেও সিন্ডিকেটের ভয়ে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। 

 

সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দলিল করতে আসা মাসুম আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তি জানান, সরকারি সকল ফি বাদ দিয়ে তার অতিরিক্ত ৮ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। এরমধ্যে দলিল লেখক সমিতির ২ হাজার, ভেন্ডার ৪ হাজার আর বাকি টাকা অফিস খরচের জন্য দেয়া হয়েছে। 

 

অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, শুধু মাসুম আহম্মেদ নয় দলিল রেজিস্ট্রি করতে আসা প্রত্যেক লোকের কাছ থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও দলিলের নকল তুলতে গেলে সরকারি ফি’র দ্বিগুণ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। আর এসকল কিছুর কারিগর রাজশাহীর পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হক।

 

ভুক্তভোগীরা আরোও জানায়, পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবাবিল এওয়াজ, অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আমমোক্তারনামা দলিল রেজিস্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।

 

পবার হুজরিপাড়া এলাকার আশরাফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, কয়েকদিন আগে এই সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে ৮ কাঠার একটি জমির ২৫ লাখ টাকা মূল্য ধরে রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু দলিল লেখক সমিতিই অতিরিক্ত ৮০ হাজার টাকা আদায় করে নেয়।

জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের লিংক

বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রাজশাহীতে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রি – দৈনিক জনকণ্ঠ

https://www.dailyjanakantha.com/national/news/311941

 

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হকের ০১৭১১৮১১১৬৬ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে আয়নাল হক জানান – কি আজবাজে কথা বলে মিয়া, আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই নেই। এরপরে বিভিন্ন পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি অসদাচরণ করে ফোন কেটে দেন।

 

তবে শুধু জমি দখল নয় জমি আত্মসাৎ নিয়ে যত রকমের পচেস্টা আছে তার কোনটাই বাদ রাখেননি রাজশাহীর পবা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আয়নাল হক। তবে জমি দখল ও জালিয়াতি নিয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। বিধায় ২ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে  আরোও বিস্তারিত আসছে। 


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.