স্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: নেপোটিসম ' শব্দটি হল ইংরেজি শব্দ।এর বাংলা অর্থ স্বজনপোষণ বা আত্মীয়পোষণ।এই ব্যাপারটা বলিউড ছাড়িয়ে এখন খোদ রাজশাহী মহানগরীর প্রত্যেকটি জায়গায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে।এর উদাহারন হিসেবে বলা যেতে পারে রাজশাহী মহানগর ডিবির ৪১ জন বদলী হলেও উপ- পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ মামুন সাহেবের স্নেহভাজন হিসেবে রয়ে গেছেন এস আই সালাম,এসআই জুবায়ের, এসআই সইফুল ও এসআই আমিন। বিতর্কিত এসআই সালাম ও এসআই জুবায়েরের কোন পরিবর্তন ঘটেনি। আর এটাইকেই বলা হয় নেপোটিসম'।
এবার এক নজরে দেখা যাক নেপোটিসমের কি কি উদাহারন রেখেছেন রাজশাহী মহানগর ডিবি।
নেপোটিসম সিন - ১ : ১০ জুলাই ২০২০ রাজশাহীর দুর্গাপুর থেকে রাজশাহী মহানগরীতে এক ব্যাক্তি পাওনা টাকা চাইতে এসে ইয়াবা মামলার আসামী বনে যান রাজশাহী মহানগর ডিবির ওসি খায়রুলের আশীর্বাদে। ঐ ব্যাক্তিকে ১০ পিচ ইয়াবা দিয়ে মামলা দেন ইন্সপেক্টর খায়রুল। পরবর্তীতে জানা যায়, দূর্গাপুরের ঐ ব্যাক্তি ইন্সপেক্টর খায়রুলের এক সোর্সের কাছে পাওনা টাকা চাইতে আসলে তাকে এই মিথ্যা মামলার শিকার হতে হয়। প্রশ্ন অভিভাবক কে ছিলেন?এরপরও ব্যবস্থা হয়নি সংশ্লিষ্ট ঐ টিমের বিরুদ্ধে কিংবা টিমের ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
নেপোটিসম সিন - ২ : ১৩ই জুলাই ২০২০ রাজশাহীতে ঘুষের বাকী টাকার গ্যারেন্টি হিসেবে চেক নহাটার এলাকার এক উপ প্রকৌশলীর কাছে থেকে ডিবির ওসি খায়রুল রাজশাহী মহানগর ডিবির ওসি খায়রুল। প্রশ্ন অভিভাবক কে ছিলেন? এরপরও ব্যবস্থা হয়নি সংশ্লিষ্ট ঐ টিমের বিরুদ্ধে কিংবা টিমের ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
নেপোটিসম সিন - ৩: ২০ জুলাই ২০২০ রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর খায়রুল তালাইমারীর শহিদ মিনার এলাকার কমলা নামের সাবেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে রাজশাহী মহানগর ডিবির সকলের জন্য মাস্ক কেনার নামে ২০ হাজার টাকা দাবী করলে সেই সংবাদ বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকাসহ জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেলেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অবশেষে ইন্সপেক্টর খায়রুলের সোর্সের হাতে ১২ হাজার টাকা দিয়েও মুক্ত হতে পারেননি ক্যান্সারের রুগী কমলা। তাকে অন্য থানার সহযোগীতায় মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যান ইন্সপেক্টর খায়রুল।কিন্তু কমলাকে পরবর্তীতে মামলা দেয়া হয় বোয়ালিয়া থানার মাধ্যমে। প্রশ্ন অভিভাবক কে ছিলেন ?এরপরও ব্যবস্থা হয়নি সংশ্লিষ্ট ঐ টিমের বিরুদ্ধে কিংবা টিমের ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
নেপোটিসম সিন - ৪: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ রাজশাহীর কাঁটাখালী থানার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়ার আকবর আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪২) ডিবির ওসি খায়রুল ইসলামে বিরুদ্ধে আর.এম.পি কমিশনার ও ডিআইজি বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল সকালে তিনি এই অভিযোগ প্রদান করেন। প্রশ্ন অভিভাবক কে ছিলেন?এরপরও ব্যবস্থা হয়নি সংশ্লিষ্ট ঐ টিমের বিরুদ্ধে কিংবা টিমের ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
নেপোটিসম সিন - ৫ : ৫ আগস্ট ২০২০ রাজশাহী মহানগর ডিবির ওসি খায়রুলের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটকের পর রাস্তা থেকেই ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠে। সংবাদ প্রকাশ হয় স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে । প্রশ্ন অভিভাবক কে ছিলেন?এরপরও ব্যবস্থা হয়নি সংশ্লিষ্ট ঐ টিমের বিরুদ্ধে কিংবা টিমের ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
[embed]https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//www.youtube.com/watch?v=3BEii0KbWoE[/embed]
টার্নিং মুভমেন্ট : অসংখ্যা জামাত- শিবিরসহ নাশকতা মামলার বাদী ও সাক্ষী হয়েছে রাজশাহী মহানগর ডিবি সেই সাথে মাদক বিরোধী অভিযানেও সফলতার শীর্ষে ছিল ডিবি। বিশেষ করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল থানার পাশাপাশি রাজশাহী মহানগর ডিবি ছিল জঙ্গী ও মাদক নির্মূলে শক্ত অবস্থানে। রাজশাহীতে জামাত – শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সদস্যরাও ছাড় পাননি রাজশাহী মহানগর ডিবির হাত থেকে। যে কারনে বারবার প্রশংসিত হয়েছে রাজশাহী মহানগর ডিবি ।
বিশেষ করে জাল টাকা উদ্ধার, কাস্টমস কর্মকর্তার বাড়ী থেকে নিয়োগ বানিজ্যের টাকা উদ্ধার,হাজার হাজার পিচ ইয়াবা উদ্ধার,শিবির সভাপতি মন্জুরকে অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার, কেন্দ্রীয় জামায়তের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমানকে জিহাদি বইসহ গ্রেপ্তার,সম্প্রতি রুয়েট শিক্ষকে হামলার মূল তিন আসামী গ্রেপ্তার, রাজশাহী পলেটেকনিক্যালে শিক্ষককে পুকুরে ফেলে দেয়া মামলায় ২৪ ঘন্টায় আসামী গ্রেফতার, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার, আন্তর্জাতিক কংকাল বাণিজ্য চক্রসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়ে যাওয়া ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ ছিল অত্যন্ত প্রশংসিত।
কিন্তু গত ৫ মাসে রাজশাহী মহানগর ডিবির এই অর্জন যে ম্লান হয়েছে তাতে কোনই সন্দেহ নেই।এসআই ও ইন্সপেক্টরদের ভয়ংকর থাবায় নিঃশেষ হয়ে গেছে মহানগর ডিবির অর্জন।
এ বিষয়ে আরএমপির মিডিয়া মূখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক যোগদানের পরই প্রত্যেকটি বিভাগে আমূল পরিবর্তন এনে আরএমপিকে গতিশীল এবং একটি যুগোপযোগী কার্যকর ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চারজন এসিকে রদবদল করা হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা বিভাগকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করে গড়ে তোলতে একযোগে এসিসহ ৪১ জনকে বদলি করা হয়েছে।তবে বিতর্কিত এসআই ও ইন্সপেক্টর প্রশ্নে কোন মন্তব্য করতে চাননি এই মুখপাত্র।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com