নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহীতে এক সৌদি প্রবাসীর দ্বিতীয় স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর দাশপকুর ডিসির মোড়ে অবস্থিত ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই সময় বাড়ির সিঁড়ির পাশে বিবস্ত্র অবস্থায় এই গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।ওই নারীর নাম রুপালি খাতুন (২৫)। তিনি সৌদি প্রবাসী হারুন অর রশিদের স্ত্রী। 

রুপালি  রাজশাহাই মহানগরীর দাশপকুর ডিসির মোড় এলাকায় মোসাদ্দেকুর রহমানের বাসার দ্বিতীয় তলায় একাই ভাড়া থাকতেন। স্বামী হারুন নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার মির্জাপুর ভাবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা। রুপালি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাজিয়াকোলা গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে অভিভাবকদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

এলাকাগত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুপালি একাই ওই বাসায় থাকতেন। তার কোনো সন্তান নেই। শুক্রবার সকালে বাড়ির মালিকের বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ফজরের নামাজের জন্য অজু করতে গেলে সিঁড়িতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে বাড়ির অন্যদের খবর দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে বাড়ির মালিকের স্ত্রী লাভলী বেগম থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।

লাভলী বেগম উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে জানান, তার বড় ছেলে ফজরের সময় নামাজের জন্য অজু করতে গেলে সিঁড়ির নিচে গেটের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তা পরিবারের অন্যদের জানান। তারা বিবস্ত্র লাশটি ওড়না দিয়ে ঢেকে দিয়ে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, রুপালির স্বামী বিদেশে থাকায় মোবাইলে যে কথা বলতেন সেটা তারাও শুনতে পেতেন। 

বাইরের কেউ যাওয়া-আসা করত না। তবে স্বামীর সাথে প্রায় ঝগড়াঝাটি হতো। তবে রুপালির ভাই রফিকের অভিযোগ, তার বোনের স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে বিদেশে থাকেন। তার বোনের সাথে প্রায় ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত। তার বোন হারুন অর রশিদের দ্বিতীয় স্ত্রী। তাকে ‘ভাত দেবে না’ বলে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাত। রাজশাহীতে তার অন্য স্ত্রীর শ্যালকরা থাকে। তার প্রথম স্ত্রীও এই হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

রাজশাহী রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে জানান, আমরা খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাড়ির তিনতলা থেকে পড়ে মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিকের তিন ছেলেকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে