
ষ্টাফ রিপোর্টার | উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: আজ সকালে ইন্টারনেট জগতে ঘটেছে এক বড় ধরনের ধাক্কা! বিশ্বের অন্যতম বড় ইন্টারনেট অবকাঠামো প্রোভাইডার ক্লাউডফ্লেয়ারে (Cloudflare) প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এই বিভ্রাটের ফলে চ্যাটজিপিটি (ChatGPT), এক্স (সাবেক টুইটার), স্পটিফাই, জুম, শপিফাই, ক্যানভা, গ্রাইন্ডার সহ অসংখ্য প্ল্যাটফর্মে ইউজাররা “Error 500” বা “সার্ভার ডাউন” মেসেজ দেখতে পান।
বাংলাদেশেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। অনেক বাংলাদেশি ইউজার জানিয়েছেন যে, ক্লাউডফ্লেয়ার-নির্ভর ওয়েবসাইটগুলো লোড হচ্ছে না, যার ফলে অনলাইন কাজকর্ম, শপিং, সোশ্যাল মিডিয়া এবং এআই টুলস ব্যবহারে বড় ব্যাঘাত ঘটেছে। ডাউনডিটেক্টর (Downdetector) ওয়েবসাইটে অভিযোগের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যায় – শুধমাত্র এক্স-এর জন্যই ১০ হাজারের বেশি রিপোর্ট আসে!
কী ঘটেছে এবং কেন এত বড় প্রভাব?
ক্লাউডফ্লেয়ার বিশ্বের প্রায় ২০% ওয়েব ট্র্যাফিক হ্যান্ডেল করে। এটি ওয়েবসাইটগুলোকে সাইবার আক্রমণ থেক সুরক্ষা দেয়, ডিডস অ্যাটাক প্রতিহত করে এবং হাই ট্র্যাফিকেও সাইট চালু রাখে। কিন্তু আজ (১৮ নভেম্বর ২০২৫) সকালে তাদের একটি অটোমেটিক কনফিগারেশন ফাইল অস্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে যাওয়ায় সিস্টেম ক্র্যাশ করে। ফলে বিশ্বব্যাপী “500 Internal Server Error” দেখা দেয়।
প্রভাবিত কিছু বড় নাম: চ্যাটজিপিটি (OpenAI চ্যাটবট), এক্স (X – Elon Musk-এর প্ল্যাটফর্ম), স্পটিফাই, জুম, মাইক্রোসফট টিমস, শপিফাই, ইনডিড, ক্লড (Anthropic-এর AI), গ্রাইন্ডার, ট্রুথ সোশ্যাল, লিগ অব লিজেন্ডস গেম সহ আরও অনেক এমনকি ডাউনডিটেক্টর নিজেও কিছুক্ষণ ডাউন হয়ে যায়!
ক্লাউডফ্লেয়ারের বাংলাদেশে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশের হাজার হাজার ওয়েবসাইট, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং অ্যাপ ক্লাউডফ্লেয়ার ব্যবহার করে। ফলে এই বিভ্রাটে দেশের ইন্টারনেট ইউজাররা ব্যাপক অসুবিধায় পড়েন। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছেন যে, কাজের মাঝে হঠাৎ সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে।
সমস্যা সমাধান হয়েছে!
ক্লাউডফ্লেয়ার কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ করে সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে। বাংলাদেশ সময় বিকেলের দিকে তারা ঘোষণা করে, “ফিক্স প্রয়োগ করা হয়েছে এবং ইনসিডেন্ট সম্পূর্ণ সমাধান হয়েছে।” কোম্পানির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এটি কোনো সাইবার অ্যাটাক নয় – শুধু অভ্যন্তরীণ টেকনিক্যাল ইস্যু। তবে কিছু ইউজার এখনও সাময়িক সমস্যা অনুভব করতে পারেন।
ক্লাউডফ্লেয়ারের সিইও ম্যাথিউ প্রিন্স-এর মতো কর্মকর্তারা ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, “আমরা আমাদের গ্রাহক এবং পুরো ইন্টারনেটের কাছে দুঃখিত। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও শক্তিশালী হব।”
এই ধরনের বিভ্রাট আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আধুনিক ইন্টারনেট কয়েকটি বড় কোম্পানির উপর কতটা নির্ভরশীল। গত মাসে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS)-এর বিভ্রাটের পর এটি দ্বিতীয় বড় ঘটনা।
