রমজান আলী, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহীতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের বিরুদ্ধে ভিডিও কেলেংকারী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ডের (পশ্চিম) যুবলীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান সুজনকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের কমিটি নিয়ে শোরগোল, আবার রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানার নারী কেলেঙ্গকারীর অডিও ভাইরাল নিয়ে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছে রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগ। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোই যেনো সকল বিতর্কের উর্ধ্বে। তারাই যেনো এখন আওয়ামীলীগের পথের কাঁটা।
তদ্রুপ বর্তমানে রাজশাহী কাটাখালী পৌর যুবলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, বালুমহাল দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ নানান অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাটাখালী পৌর যুবলীগের ঐ নেতার নাম শরিয়ত। তার বাবার নাম মহসিন আলী । তার ভাইয়ের নাম আবু শামা। আবু শামা রাজশাহী কাটাখালী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি। শরিয়ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও রাজশাহী কাটাখালী পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদে আছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর কাটাখালী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নুর মোহাম্মদ সরদারের বিরুদ্ধে ৩৫ কেজি গাঁজা আত্নসাৎতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত এস আই নুর মোহাম্মাদ সরদার চলতি বছরের৩ জুলাই গভীর রাতে কাটাখালী থানা এলাকার দেওয়ান পাড়া মাদ্রাসার গেটে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একটি পিকাআপ ট্রাক থেকে ৪০ কেজি গাঁজা আটক করেন। কিন্তু থানায় জমা দেন ৫ কেজি গাঁজা। রাতের অন্ধকারে পুলিশ ড্রাইভার ও হেল্পারকে ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।
সার্বিক বিষয়ে ড্রাইভার ও হেল্পার একটি সংবাদ চলমান ও একটি জাতীয় দৈনিককে ভিডিও বক্তব্যে জানিয়েছেন - এরপর এসআই নুর মোহাম্মাদ সরদার প্রথমে ফোনে কারো সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষনের মধ্যে একজন লোক এসে গাঁজার ৭টি প্যাকেট সরিয়ে নেন। আর একটি ৫ কেজির প্যাকেটের ভেতরে রাখা প্লাস্টিকের জড়ানো ৫টি প্যাকেট গাড়িতে সাজিয়ে মোবাইলে ভিডিও করছেন আবার কাউকে ভিডিও তে দেখানো হচ্ছে।
অন্যদিকে আটককৃত গাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া ড্রাইভার ও হেলপারের পরিচয় পাওয়া গেছে। পিকাআপ ড্রাইভারের নাম মানিক তার বাড়ি সুচারন হরিয়ান চিনিকল মিলের পাশেই আর হেল্পারের নাম তাজু। তার বাড়ি - রনহাট, পবা কিন্তু থাকেন রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায়। তবে গাঁজা যে অটো রিক্সায় পিক আপ থেকে ডেলিভারী হতো ঐ অটোরিকশা চালকের নাম সিরাজুল ইসলাম কালু। তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে উক্ত চক্রের এক সদস্য জানান ৪০ কেজী গাঁজা কাটাখালী থানা এলাকার বিবিজান নামের একজন মহিলার বাড়িতে পৌছানোর কথা ছিল। বিবিজান কাটাখালী এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
উল্লেখ্য যে, অটোরিক্সাচালক - সিরাজুল ইসলাম কালুকে বাঁচাতে পিক আপ ড্রাইভার ও হেল্পার তাজু সাবেক আনসার সদস্য মেরাজের নাম নেয় বলে জানিয়েছে। কেননা অটোরিক্সায়ালা - সিরাজুল ইসলাম কালু তাদের বিজনেস পার্টনার ছিল এবং আছে কিন্তু ড্রাইভার ও হেল্পার সাবেক আনসার সদস্য মেরাজুলের নাম এই কারনে নেয় যে, এতে তদন্তে মেরাজ নির্দোস প্রমানিত হবে এবং সেই সাথে বেঁচে যাবে অটোরিক্সাচালক সিরাজুল ইসলাম কালু ।
কিন্তু এরই মধ্যে ০৪/০৭/২০২৩ ইং তারিখে রাজশাহী কাটাখালী যুবলীগ নেতা শরিয়তের চেম্বারে মাদক ব্যবসায়ী বিবিজান, ড্রাইভার মানিক, হেল্পার তাজু মিলে এক মিটিং বসে। যা মোবাইল নেটওয়ার্ক পর্যালোচনা করলেই পাওয়া যাবে। উক্ত মিটিং এর মাধ্যমে পুলিশের কাছে গাঁজা কেনাবেচার চেস্টা চলে। এরই মধ্যে কাটাখালী যুবলীগ নেতা শরিয়ত সাবেক আনসার সদস্য মেরাজকে নিয়ে একটি বানিজ্য করারও চেস্টা করেন। উল্লেখ্য যে, যদিও সাবেক আনসার সদস্য মেরাজ ও অটোরিক্সায়ালা সিরাজুল ইসলাম কালু আপন ভাই তদুপরি মেরাজ ছোট বেলা থেকেই বাড়ির বাইরে বড় হয়।
আরোও উল্লেখ্য যে, অটোরিক্সায়ালা - সিরাজুল ইসলাম কালুর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে কিন্তু অপর পক্ষে সাবেক আনসার সদস্য মেরাজ নিজের ছোট ভাই অটোরিক্সাচালক - সিরাজুল ইসলাম কালুকে বাঁচাতে যুবলীগ নেতার কাছে ধন্যা দেয়।
অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, রাজশাহী কাটাখালী পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শরিয়তুল্লাহ শরিয়তের কিছু অডিও রেকর্ড উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন পত্রিকার হাতে এসেছে। আর এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সাহায্যে তথ্যগুলো উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন পত্রিকার অনুসন্ধানী টিমের সংগ্রহ করে। তবে রেকর্ডগুলো অনলাইনে ট্রাস্টেড ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, রেকর্ডগুলো এডিটেড কিংবা ফেক নয়। এক্ষেত্রে পূর্নাঙ্গ সতর্কতা এড়াতে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেকর্ডগুলো বারংবার যাঁচাই করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরোও জানা যায়, রাজশাহী কাটাখালী পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শরিয়তুল্লাহ শরিয়ত গরু চুরির সিন্ডিকেট, বালু মহাল সিন্ডিকেট, রাবির আইবিএতে টেন্ডারবাজী, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ কাটাখালী থানার কিছু দূর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যের সাথে সক্ষ্যতা গড়ে তুলে এই আধিপত্য বজায় রেখে চলেছেন।
রাজশাহী কাটাখালি আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাফিজুর উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদ পাওয়ার পর থেকেই শরিয়ত ও তার বাহিনী অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেছে এবং দিন দিন বাড়ছে তাদের বাহিনীর দাপট ও সন্ত্রাস।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com