Jessore-Court-judgement
বিচারকের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করলেন কর্মচারীরা

বিচারকের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করলেন কর্মচারীরা

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বিচারক কিছুই জানেন না। অথচ আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন তিন আসামি। কেবল খালাসই পাননি, নকলখানা থেকে এ আদেশের কপিও দেওয়া হয়েছে আসামিদের। সেখানে রয়েছে বিচারক, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের স্বাক্ষর! ঘটনাটি ঘটেছে যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে। 

 

এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনায় হতবাক হয়েছেন বিচারক, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা। সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের কর্মচারীরাই। এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে।

 

যশোর আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২ মে চৌগাছা উপজেলার বর্ণি গ্রামের স্নেহার খাতুন চৌগাছা থানায় একই এলাকার তাজউদ্দিন, রজনী খাতুন ও রাব্বি হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আসামিদের সঙ্গে বাদীর বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল আসামিরা স্নেহার খাতুনের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় তাকে মারধর, জখম ও শ্লীলতাহানি করা হয়। মামলা তদন্তের পর এসআই নজরুল ইসলাম ওই তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এ মামলার চার্জগঠনের জন্য ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দিন ধার্য ছিল। এর আগে আসামিরা আদালত-সংশ্লিষ্ট একটি চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এ মামলা থেকে খালাস পাওয়ার জন্য। চক্রটি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ওই তিন আসামিকে খালাস দেয়।

 

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, আসামিরা ওই খালাসের নকল তুলতে গত ২১ মে নকলখানায় আবেদন করেন। ২৩ মে আসামিদের খালাসের পক্ষে আদালতের আদেশের একটি কপি দেওয়া হয়। আদেশের ওই কপিতে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর রয়েছে। এ ছাড়া নকলখানা থেকে উঠানো ওই আদেশের নকলে রয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, প্রধান তুলনাকারক, তুলনা-সহকারী ও নকলকারকের স্বাক্ষরও। এ কারণে আসামিরা সবাই ওই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হন। এভাবে কেটে যায় দুই মাস।

 

এদিকে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক গত ৩ আগস্ট আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ মামলার চার্জ গঠন করেন। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও আগামী ২৭ নভেম্বর সাক্ষী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। এর পরই জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।

 

 

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, গত ২ আগস্ট আসামিদের তিনি ফোন করে চার্জ গঠনের বিষয়টি জানান। ওই সময় তাকে আসামিরা জানান, ওই মামলা থেকে তারা তিনজনই খালাস পেয়েছেন, তাদের আর এ মামলায় হাজিরা দিতে হবে না। এ কথা শুনে তিনি বিস্মিত হন। কেমন করে খালাস পেয়েছেন জানতে চাইলে আসামিরা এসব বিষয় গোপন করেন। পরবর্তী সময়ে তারা বুঝতে পারেন, জালিয়াত চক্রের খপ্পরে পড়েছেন। এরপর গত ৯ আগস্ট তাদের আদালতে আত্মসমর্পণ করিয়ে জামিন নেওয়া হয়েছে বলে জানান অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন। তিনি আরও জানান, এর নেপথ্যে আদালত-সংশ্লিষ্ট একটি চক্র জড়িত। এ বিষয়ে তিনি সঠিক তদন্তের দাবি জানান।

 


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.