ষ্টাফ রিপোর্টার || উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী শেখ হাসিনা ভারতে বৈধভাবে ৪৫ দিন আশ্রয়ে থাকতে পারবেন। তবে সেই ৪৫ দিন শেষ হচ্ছে শুক্রবার অর্থাৎ ২০/০৯/২০২৪ ইং তারিখে। এরপর তিনি সেখানে কী হিসেবে অবস্থান করবেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ভারত জন্মের পর থেকেই একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, আর সেটি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপ্রধানদের ও বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ নেতাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে বরাবর। সে কারণে ভারত শেখ হাসিনাকে বিশেষ বিবেচনায় রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। আর সেটা হবে তিব্বতের ধর্মগুরু দালাই লামার মতোই বলে ধারনা করছেন রাজনীতিবিদরা।
তিব্বতে বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু ১৯৫৯ সাল থেকে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন। ভারতের ইতিহাসে কোনো বিদেশি ধর্মীয় নেতাকে বিশেষ রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ঘটনা ছিল সেটিই প্রথম। তার পর থেকে ৬৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতেই আশ্রয়ে রয়েছেন দালাই লামা। এবার প্রতিবেশী দেশ হিসেবে শেখ হাসিনাও ভারতে দালাই লামার মতোই আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন।
ভারতের প্রতিবেশী দেশের রাজনীতিবিদদের আশ্রয় দেওয়ার অতীত ইতিহাসও রয়েছে। শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালের পর ভারতেই আশ্রয়ে ছিলেন। সে সময় দীর্ঘ ৬ বছর তিনি সেখানে থেকেছেন। ১৯৯২ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নজিবুল্লাহর পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। তবে সে সময় নজিবুল্লাহ দিল্লিতে আসতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। ২০১৩ সালে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় ভারত।
এ ছাড়া ১৯৫০ সালে নেপালের মহারাজা ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহকেও আশ্রয় দিয়েছিল দেশটি। ভারতে শেখ হাসিনা কী স্ট্যাটাসে অবস্থান করছেন, সেটা এখনো অজানা। এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। অবশ্য এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কূটনৈতিক পাসপোর্টের আওতায় ভারতে ৪৫ দিন অবস্থান করতে পারবেন। অবশ্য তার সেই পাসপোর্ট ইতিমধ্যেই বাতিলও করা হয়েছে। এখন শেখ হাসিনার সামনে ৩টি পথ খোলা রয়েছে।
▶ প্রথমত, তিনি ভারতে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় পেতে পারেন।
▶ দ্বিতীয়ত, বিশেষ রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারেন।
▶ তৃতীয়ত, তিনি তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় পেতে পারেন।
তবে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনাকে ভারতের নয়া দিল্লির একিটি পার্কে বিকেলে ঘুরতে দেখা গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন দেশ শেখ হাসিনাকে ভিসা দিতে রাজি হয়নি। শেখ হাসিনার ভিসার আবেদন জানালেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভিসা দিতে স্বীকৃতি জানিয়েছে।
এদিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত আনার বিষয়ে বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। এটি অনুযায়ী ভারতে যদি আমাদের কোনো দোষী মানুষ থাকেন, উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোন আর যা-ই হোন না কেন, ওনার প্রত্যর্পণ আমরা চাইতে পারি। শেখ হাসিনার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলে তাকে ফেরত চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.