Import-of-Indian-onion-to-Bangladesh-is-stopped.
বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ

বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::  ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের কৃষকরা পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর দাবিতে এই প্রতিবাদ জানাচ্ছে। খামারে সারি সারি পেঁয়াজ পড়ে পড়ে পচছে।ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্র রাজ্যের কৃষকরা পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ নামার পর মুম্বাই অভিমুখে ২০০ কিলোমিটার পদযাত্রা শুরু করেছে। বিক্ষোভের মুখে কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ চাষীদের জন্য কিছু আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করলেও কৃষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

 

বিবিসি জানায়, মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার নামদেব ঠাকরের পারিবারিক খামারে সারি সারি পেঁয়াজ পড়ে পড়ে পচছে। এই কৃষক বলেন, মাঠ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ এবং বাজারজাত করতে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে অর্থ খরচ করতে চান না তিনি। কারণ, পেঁয়াজ বিক্রি করে সেই খরচ তিনি তুলতে পারবেন না। গত কয়েক সপ্তাহে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার পর থেকে মহারাষ্ট্রের যে হাজার হাজার কৃষক প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে, নামদেব তাদেরই একজন।

 

প্রতিবাদী কৃষকদের একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ পাঠানোর পর হতাশায় তার ফসল পুড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যরা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পেঁয়াজের পার্সেল পাঠিয়েছেন। প্রায় দিনই এমন কিছু না কিছু করছেন কৃষকরা।

 

কর্মকর্তারা বলছেন, মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজ নিয়ে কৃষকদের এমন অবস্থায় পড়ার কারণ হল, উত্তরের রাজ্যগুলোতে পেঁয়াজের চাহিদা কমে যাওয়া। কারণ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, রাজস্থানের মতো রাজ্যেও এখন পেঁয়াজ চাষ করছে কৃষকরা।

 

এদিকে ভারতের কৃষি বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্ত কুয়ালেকার বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনও পেঁয়াজ উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। ভারতে সাধারণত বর্ষা ও শীত দুই মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম দিকের মধ্যে পেঁয়াজ তোলা হয়। পচনশীল হওয়ায় এই পেঁয়াজের কম সময় সংরক্ষণ করা যায়। তাই দ্রুত বাজারে পৌঁছাতে হয়। তবে শীতের সময় চাষ করা পেঁয়াজ মার্চের মাঝামাঝি তোলা হলে দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।

 

কৃষি বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্ত আরও জানিয়েছেন , “২০২২ সালে ভারতে জুলাই ও অগাস্ট মাসে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকরা দেরিতে পেঁয়াজ রোপণ করেছিলেন। ফলে মার্চ মাসে পেঁয়াজের ফলন উদ্বৃত্তের দিকে গেছে,  অন্যথায় যা ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বাজারে আসতে পারত। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শীতের ফসল যখন বাজারে পৌঁছবে তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”

 

আরেকদিকে মহারাষ্ট্রের নাসিকের কৃষকরা বলছেন, তারা পাইকারি বাজারে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের জন্য মাত্র ২০০-৪০০ রুপি পাচ্ছেন।  চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ ভারত। বছরে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ভারতে। দেশের অর্ধেকের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রেই। উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়।

 

ভারতে পেঁয়াজের দামে বিরাজ করছে অস্থিরতা। দেশটির বেশিরভাগ রাজ্যেই পেঁয়াজ রান্নার প্রধান উপাদান এবং পচনশীলতার জন্য এটি খুব বেশিদিন সংরক্ষণও করা যায় না। পেঁয়াজ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাড়তি সরবরাহ দামের পতন ঘটাতে পারে, হাজার হাজার কৃষককে সংকটে ফেলতে পারে। আবার পেঁয়াজের ঘাটতি দাম বাড়াতেও পারে, ভোক্তাদের ক্ষোভের জন্ম দিতে পারে, যা অতীতে এমনকী সরকার পতনেরও কারণ হয়েছিল।

 

 

অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার নতুন করে ইমপোর্ট পারমিট না দেওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ হচ্ছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি। ১৫ই মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে সরকারের এ নির্দেশনা। রাজশাহী সোনামসজিদ বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের একজন সদস্য বলেন, প্রতি বছর পেয়াজ আমদানির জন্য মার্চের ১৫ তারিখ পর্যন্ত আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) মেয়াদ থাকে। আজকের পর থেকে সেই মেয়াদ না থাকায় ব্যবসায়ীরা পেয়াজ আমদানি করতে পারবেন না। সরকার নতুন করে আইপি দিলে তারপর আমদানি করা সম্ভব হবে।


 


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.