স্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ করা কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিল না। নির্বাচন কমিশন চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেই নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, আপনারা সবাই জানেন গতকাল ১২ (অক্টোবর) গাইবান্ধা-৫ আসনের একাদশ জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন ছিল। এ নির্বাচনটি যেন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা গত ২৮ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা সার্কিট হাউজে উপস্থিত থেকে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় বক্তব্য দেন।
‘সভায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর স্থানীয় প্রধান, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। পরে আমি নিজে ও কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি যেন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা আরও জানেন যে আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর যতগুলো নির্বাচন করেছি সবগুলো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আপনারা আরও জানেন যে আমরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছিলাম যেন কেউ অবৈধ ভোট দিলে আমরা দেখতে পাই।
‘সব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিসিটিভি স্থাপনের ফলে এই অপরাধ একেবারেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল। তারই আলোকে এবং গাইবান্ধা- ৫ আসনের উপ-নির্বাচনের গুরুত্বের কারণে এখানেও ইভিএমে ভোটগ্রহণ ও ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। গতকাল সকাল ৮টায় যথারীতি ভোট শুরু হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, আগারগাঁওয়ে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে আমিসহ অন্য কমিশনাররা, দায়িত্ব পালনকারী সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কারিগরি সহায়তাকারী এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।’
তিনি বলেন, ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা তিনটি কেন্দ্রে দেখতে পাই ভোটকক্ষে প্রার্থীর পুরুষ এজেন্টরা একই রকম গেঞ্জি বুকে ও পিঠে প্রার্থীর মার্কা প্রিন্ট করা পরে আছেন এবং নারী এজেন্টরা একই রকম শাড়ি পরা, যা আচরণ বিধিমালার ১০ (ঙ) ভঙ্গের মধ্যে পড়ে। এসব এজেন্ট ছাড়াও আরও অনেক অবৈধ লোকজন ভোটকক্ষে অবস্থান করে ভোটারদের ভোট দিতে প্রভাবিত করছেন।
সিইসি বলেন, ভোটারদের কন্ট্রোল ইউনিটে আঙুলের ছাপ দেওয়ার পরপরই এজেন্টরা গোপন ভোটকক্ষে প্রবেশ করে ভোটারকে ভোট দিতে সুযোগ না দিয়ে নিজেই ভোট দিচ্ছেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ একই কাজ করছেন। তখন কমিশন থেকে ফোন দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোট কক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ভোট কক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তখন ওই তিনটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার নির্দেশনা কমিশন থেকে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, এরপর একে একে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৫০টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের অবস্থা একই রকম দেখা যায়। এরই মধ্যে রিটার্নিং অফিসার একটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেন। আমি এবং বেগম রাশেদা সুলতানা রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। অন্য কেন্দ্রগুলোতেও সিসিটিভি দেখার সময় পেলে দেখা যেত যে ওই কেন্দ্রগুলোতেও একই অবস্থা। কমিশন মনে করে যে এ ধরনের একটি আইনবহির্ভূত ভোগগ্রহণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ‘তাই কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
news source: Ref: BSS। UP। PNS। BNA। UNB । dbcnews । Google News। Yahoo news । Bing news ।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.