স্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
গতকাল শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৯টায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৮টার আগে থেকেই নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ৯টার আগেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে কেন্দ্র করে সড়কের নাইটিঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত রাস্তার উপর মাদুর বিছিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ গণঅনশনে অংশগ্রহণ করেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নামে।
নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার প্রতিকৃতি হাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে গণঅনশনে আসে এবং ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘জ্বালাও জ্বালাও আগুন জ্বালাও, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা তারা সরব করে রাখে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কের একপাশে অবস্থান নিলেও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির কারণে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় দলের সিনিয়র নেতারা কিছুক্ষণ পর পরই সড়কে যান চলাচলের সুযোগ করে দেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি মাইকে আহ্বান জানান।
জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নাই। আমি সাক্ষী, জিয়াউর রহমানের আমলে ৭৯ সালে আমাকে জার্মানীতে পাঠানো হয়েছিলো। আমি একবছর জার্মানীতে ছিলাম। আমার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিলো। আমি কী এই সরকারের কাছে জানতে পারি সংবিধানের কোন আর্টিক্যালে, কোনো চ্যাপ্টারে, কত পৃষ্ঠায় কোনো রাজনৈতিক বন্দিকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো যাবে না- এই কথা আমি জানতে চাচ্ছি।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ বেশ কয়েকজন নেতাও বার বার নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে কর্মসূচির সময় যতই গড়িয়েছে ততই নয়াপল্টনে বিএনপির গণঅনশনে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। দুপুরের দিকে নাইটিঙ্গেল-ফকিরাপুল মোড় সড়ক ছাড়াও আশপাশের গলিগুলোতেও লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলায়াতের পর খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনশন কর্মসূচিতে প্রথম দিকে অঙ্গসংগঠন, পেশাজীবী ও ২০ দলীয় জোটসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বলতে চাই, আপনারা যেকোনো সময় একবার শুধু ঘোষণা দেন, আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রস্তুত আছি, গণভবন ঘেরাও করব। আর আমাদের দেশনেত্রীর মুক্তি ও দেশ বাঁচানোর এই আন্দোলনে আমরা সফল হব ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, এই সরকার লুটেরা সরকার।
খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো না হলে সরকার হটানোর আন্দোলন শুরু করার হুশিয়ারি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এবার যে আন্দোলন শুরু হলো গণঅনশনের মধ্য দিয়ে সেই আন্দোলন আপনাকে গদিচ্যুত করবে। আমরা সোমবার সমাবেশ করবো। তারপরও না হলে আবার কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল বলেন, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে অবস্থান করছেন। আমরা ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি বার বার, বিদেশে ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাংলাদেশে চিকিৎসা দেয়া অসম্ভব।
গণতন্ত্রকে কুন্ঠিত করে এই সরকার আমাদের প্রিয় নেত্রীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা জানাতে চাই, আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত আছি। শুধু ঘোষণার অপেক্ষায়। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদও আন্দোলনের ঘোষণা দেয়ার জন্য হাইকমান্ডকে আহবান জানান।
সোমবার সারাদেশে সমাবেশ
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আগামীকাল সোমবার ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপি। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ এবং সারাদেশে মহানগর-জেলা-উপজেলাগুলো সমাবেশ হবে।
News Source : wiki BSS BBC Ref: Uttorbongo Protidin
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.