প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ৭:০৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ১০, ২০২২, ৫:৫২ অপরাহ্ণ
রাজশাহীতে ঘরে ঘরে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস ভাইরাসের আক্রমণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহীতে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ। গত এক সপ্তাহে এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিনই চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। তবে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত পুরুষের সংখ্যাই বেশি। এদিকে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারের ফর্মেসিগুলোতে চোখের ড্রপের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে চাহিদা মতো ড্রপ না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা। চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাসজনিত চোখ ওঠা রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে এ রোগে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনই সরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞদের কাছে চোখ ওঠা রোগীরা ভিড় করছেন। বাড়ির একজন সদস্য আক্রান্ত হলে পরিবারের প্রায় সব সদস্যই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সাধারণত চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে ময়লা হওয়া, চোখে ব্যথা অনুভব ও খচখচ করা, রোদে অস্বস্তি লাগা লক্ষণ নিয়ে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা ৪-৫ দিনের মধ্যে ভালো হলেও বড়দের ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন- এই রোগ আগেও ছিল। এই চোখ ওঠা রোগটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেবল প্রয়োজন সতর্কতা। এই রোগটি ভাইরাসজনিত হলেও করোনা বা মহামারির মতো ভয়ংকর কিছু নয়। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ প্রয়োগ এবং নিয়ম মেনে চললে ৬/৭ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবেন রোগী। এদিকে হঠাৎ করেই চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোনোভাবে পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনো কখনো অ্যালার্জির কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সে সময় এ রোগটা বেশি হয়। সাধারণত কন্টাক্টের মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত ছড়ায়। যেমন- রোগীর ব্যবহৃত জিনিস (গামছা, তোয়ালে, রুমাল) অন্যরা ব্যবহার করলেও তার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। আবার হ্যান্ড টু আই কন্টাক্টের (হাত না ধুয়ে চোখ ছুঁলে) মাধ্যমেও ছড়ায়। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত জিনিস কেউ ধরার পর যদি না ধুয়ে হাত চোখে দেয়। তাই রোগ প্রতিরোধে দৈনন্দিন জীবনযাপনে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. নাইমুল হক। তিনি উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন, এটা সাধারণত মৌসুমি রোগ। সাধারণত ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যেই এই রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
তিনি বলেন - গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে প্রায় ৮ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যাই বেশি। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি চোখ পরিষ্কার রাখা এবং সূর্যালোকে কালো রঙের চশমা ব্যবহারের পরামর্শসহ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ড্রপের কোনো সংকট নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চোখ ওঠা রোগের প্রতিকার বা চোখ উঠা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে করণীয়ঃ
- ১। ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ভালোমতো পরিষ্কার করুন।
- ২। চোখে হাত না দেওয়া।
- ৩। চোখে কালো চশমা ব্যবহার করা।
- ৪। ধুলোবালি,আগুন এবং রোদে কম যাওয়া।
- ৫। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া।
- ৬। পুকুর বা নদী নালায় গোসল না করা।
- ৭। রুমালের পরিবর্তে নরম ও পরিষ্কার টিস্যু ব্যবহার করা।
- ৮। তোয়ালে বা গামছা সহ অন্যান্য জিনিস পরিবারের সবাই আলাদা ব্যবহার করা।
- ৯। চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য
- পরিবারের সবাই কাপড়, তোয়ালে ও অন্যান্য জিনিস আলাদা ব্যবহার করুন।
- ১০। যেসব জিনিসে অ্যালার্জিক তা থেকে দূরে থাকুন।
- ১১। আক্রান্ত হলে ঘরে বিশ্রাম নিন।
- ১২। সবসময় হাত চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে।
- ১৩। বাড়িতে কারও এ রোগ হলে কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতি অবলম্বন করা৷
- ১৪। চোখের সাজে অন্যের প্রসাধনী ব্যবহার না করা।
- ১৫। আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসা পরিহার করতে হবে।
- ১৬। চোখকে ধুলাবালি থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
- ১৭। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও টিস্যু সাথে রাখতে হবে।
- ১৮। চোখ ওঠা শিশুদের আলাদা বিছানায় শোয়াতে হবে।
- ১৯। বাইরের পানি দিয়ে চোখে ঝাপটা দেওয়া যাবে না।
[embed]https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//www.youtube.com/watch?v=8GsckqrHIx0[/embed]
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন Google Business And Google News Verified একটি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন উইকিপিডিয়ার নিবন্ধনভুক্ত হয়।২০২১ সালে উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন Trusted Site Certificate এবং DMCA সার্টিফিকেট পায়।