আন্তর্জাতিক রিপোর্ট, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: পাকিস্তানের কোষাগার গড়ের মাঠ। তলানিতে ঠেকেছে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার। আর এই সুযোগেই ঋণের পসরা সাজিয়ে ফের হাজির হয়েছে সুযোগসন্ধানী চীন। আগে থেকেই চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের জেরে ইসলামাবাদের ঢাকের দায়ে মনসা বিকিয়ে যাওয়ার জোগাড়। এবার চিন থেকে আরও ঋণ নিলে ঢাক ও মনসা দুই বেচেও কূল পাবে না পাকিস্তান বলেই মত বিশ্লেষকদের। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলারের প্যাকেজ দিতে রাজি হয়েছে চীনের (China) ব্যাংকগুলি।
কোন শর্তে ওই টাকা দেওয়া হবে সেই আলোচনাও শেষ হয়েছে এবং সমস্ত শর্ত চূড়ান্ত করে ফেলা হয়েছে। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পাক অর্থমন্ত্রী লেখেন, “দু’দিক থেকে কিছু নিয়মমফিক সম্মতিপত্র প্রদানের কাজ শেষ হলেই পাকিস্তানের হাতে টাকা আসা শুরু হবে। এর ফলে আমাদের বিদেশি মুদ্রাভাণ্ডার কিছুটা বাড়বে।” বলে রাখা ভাল, দেনার দায়ে জর্জরিত পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রাভাণ্ডার বা ডলারের পরিমাণ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। এক বিবৃতিতে পাকিস্তান স্টেট ব্যাংক জানিয়েছে, পাকিস্তানের অর্থনীতি প্রবল চাপের মুখে রয়েছে। মে মাসের ৬ তারিখ দেশের ফরেন রিজার্ভ ১৯৩ মিলিয়ন ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ১০.৩ বিলিয়ন ডলারে।
করোনা মহামারীর জেরে পাক অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। ‘ট্রেড ডেফিসিট’ অর্থাৎ রপ্তানির তুলনায় আমদানি বিপুল হারে বেড়ে যাওয়ায় বিদেশি মুদ্রার ব্যয়ের পরিমাণ আয়ের চাইতে বেশি দাঁড়িয়েছে। তার উপর রাজনৈতিক ডামাডোলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। সবমিলিয়ে পাকিস্তান কার্যত দেউলিয়া। চীনের ঋণের ভারে নুয়ে পড়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। কিছুতেই দেনা শোধ করা সম্ভব নয় বলে কার্যত মেনে নিয়েছে ইসলামাবাদ।
তাই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাংশ চীনের হাতে তুলে দিতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার বলেও কয়েকদিন আগে জানা গিয়েছিল। ওই খবর প্রকাশ্যে আসতেই পাক শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গিলগিট-বাল্টিস্তানের বাসিন্দারা। সূত্রে খবর, শীঘ্রই অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) গিলগিট-বাল্টিস্তান প্রদেশের হুনজা উপত্যকা চিনকে লিজ দিচ্ছে পাকিস্তান। ফলে প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডার ওই অঞ্চলের খনিজ পদার্থ আহরণ করতে পারবে বেজিং। এভাবেই দেনা শোধ করতে চলেছে শাহবাজ সরকার।
উল্লেখ্য, ভারতের বিরোধিতা সত্বেও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC) প্রকল্পের অন্তর্গত পাক অধিকৃত কাশ্মীর-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন। তবে এই প্রকল্পের যে বিপুল খরচ তার ফলে ক্রমে বেজিংয়ের ঋণের বোঝায় কার্যত চাপা পড়েছে ইসলামাবাদ বলেই মত বিশ্লেষকদের। আর সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয় তার প্রমাণও মিলেছে। গতবছর এক রিপোর্টে বলা হয়, চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্প থেকে বিপুল লাভ করে চলেছে চীন। লাভের অঙ্ক নিয়ে পাকিস্তানকে বোকা বানাচ্ছে তারা। পাকিস্তানের শীর্ষ আমলারা এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অডিট রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তৎককালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে।
International News Source & Ref : CNN। BBC। AL-Jazira। AP। NY TIMES
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.