গ্রেফতার বানিজ্য আড়াল করতেই রাজশাহী মহানগর ডিবি ছেড়ে দিল সেই রক্তাক্ত আসামীকে
নিজস্ব প্রতিবেদক,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন : হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় আসামীকে পেটাতে পেটাতে জনসম্মুখে রক্তাক্ত করার পর রাজশাহী মহানগর ডিবির এসআই জুবায়ের সেই আসামীকে স্থানীয় কাউন্সিলরের জিম্মায় দিয়েছেন।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর আনু: ২ টার দিকে রাজশাহী মহানগর ডিবির এসআই জুবায়ের ২ জন কন্সটেবলসহ মিজানের মোড় এলাকায় রানা নামে এক ব্যাক্তির বাসায় অভিযান চালায়। কোন মাদক না পাওয়ার পরও রানাকে বেধড়ক পেটাতে পেটাতে গর্তে ফেলে দেন কন্সটেবল কাউসার ও শাকিব। এসময় গর্তে পড়েই রক্তাক্ত হন রানা নামের ঐ যুবক। এরপর রাজশাহী মহানগর ডিবির ঐ তিন সদস্যকে ঘিরে ফেলেন এলাকার শত শত মানুষ।
তাদের সকলেরই একই প্রশ্ন ছিল – আপনি যদি রানা নামের এই ব্যাক্তির কাছে মাদক পেয়ে থাকেন তবে তাকে ধরে নিয়ে যান কিন্তু তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে এভাবে নির্যাতন করছেন কেন? এসময় উপস্থিত উত্তেজিত জনতার তোপের মুখে পড়েন এসআই জুবায়েরসহ কন্সটেবল শাকিব ও কাউসার।
অবস্থা বেগতিক দেখে এসআই জুবায়ের রাজশাহী মতিহার থানার সহযোগীতা চেয়ে পাঠান। এসময় স্থানীয় থানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে – এসআই জুবায়ের রানা নামের ঐ যুবকের কাছে থেকে উদ্ধারকৃত মালামাল দেখাতে না পেরে উপস্থিত সকলের সামনে বলেন – সে পালানোর চেস্টা করছিল।
তাই পালানোর সময় সে গর্তে পড়ে যায়। কিন্তু উক্ত ঘটনার সময় এলাকার অসংখ্যা ব্যাক্তি সাক্ষী দেয় যে, রানা নামের ঐ যুবক পালানোর চেস্টা করেনি বরং তাকে ডিবি পুলিশের ৩ সদস্য পেটাতে পেটাতে রক্তাক্ত করেছিলেন।
এখন প্রশ্ন এসআই জুবায়ের কি রানা নামের ঐ যুবকের কাছ থেকে সত্যি মাদক উদ্ধার করতে পেরেছিলেন কি? ভিডিও দেখলেই এর সহজ উত্তর পাওয়া যায় – অবশ্যই না। কারন উপস্থিত জনতার মাঝে কোন আলামত দেখাতে পারেননি ডিবির ঐ ৩ সদস্য।
তাহলে রানা নামের ঐ যুবকের কাছে কোন অপরাধ ছাড়াই তার হাতে হ্যান্ডকাফ কেন ? আর যদি সে অপরাধী হয়েই থাকে তাহলে কাউন্সিলরের জিম্মায় কেন দিতে হবে ? অবশ্যই এ প্রশ্নের সদোত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কেহই ।শুধু তাই নয় মহানগর ডিবির সদস্যরা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রানাকে ৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিও আদায় করেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেলের একটি সূত্র জানিয়েছে।যে ভিডিও দেখলেই স্পস্ট বোঝা যায় তাকে দিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়া হচ্ছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন – কেউ যদি অপরাধ করে তবে তার বিচারের জন্য কোর্ট রয়েছে কিন্তু তাই বলে পুলিশ যে কাউকে এভানে পেটাতে পারেনা। এঈ কাজটা ঠিক করেনি ঐ অফিসাররা।
মোহাইমিনুল নামের সবজি বিক্রেতা বলেন – রানাকে আমি চিনি সে মাদক সেবন করে কিন্তু মাদক বিক্রি করে বলে কারোও জানা নেই। আর এভাবে হাতে হাতকড়া পরিয়ে কুকুরের মত আসামী পেটানোর ক্ষমতা পুলিশকে কে দিল ?
গৃহিনী জাহানারা বেওয়া বলেন – রানা আমার প্রতিবেশী। আমি চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি যে, ৩ জন মিলে রানাকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে।আর এ সময় রানার হাতে পুলিশের হ্যান্ডকাফও দেখতে পাই।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহীতে আ’লীগের ভরাডুবি
বিষাক্ত মদপানে এবার রুয়েট ছাত্রের মৃত্যু
বিদায়ী ২০২১ সালে যা কিছু আলোচিত সমালোচিত ছিল রাজশাহীতে
নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :চলতি বছরের সকল সফলতা ও ব্যার্থতা নিয়ে সকলেই বরন করল ২০২২ সালকে । এরই মধ্যে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও। পিছিয়ে নেই শিক্ষা নগরী রাজশাহী। ২০২১ সালের বিদায়ী বছরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন রাজশাহীর বেশ কিছু বিষয় ও ব্যাক্তিবর্গ। এসকল ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর কারও কারও কপালও পুড়েছে বৈকি ।
রাজশাহীতে এবার ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং’র চাঁদাবাজি
নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন : দেশের শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে এবার ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি। তবে অধিকাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগের তীর কিশোর গ্যাং এর দিকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায়ই কিশোর গ্যাং-এর কবলে পড়ে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে অনেকেই।
অনেকেই তাদের ভয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ কিংবা কথা বলতেও সাহস পান না। এলাকাবাসির অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব অপর্কম হলেও অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে এসব কিশোরেরা।
এর কারণ হিসেবে দেখা যায় রাজনৈতিক ছত্রছায়া, এলাকার কথিত বড় ভাইদের অনুচর হিসেবে সক্রিয় থাকছে এসব উঠতি বয়সি বিপদে যাওয়া তরুণ। এলাকাভিত্তিক গড়ে তোলা হচ্ছে ছোট-বড় অপরাধী গ্যাং। তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ফেসবুকে বিভিন্ন নামে গ্রুপ খুলে। যার কারণে অল্প সময়ে এরা সংঘটিত হয়ে অপরাধ ঘটান।
গত কয়েক মাসে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের অপ্রতিরোধ্য অভিযানে কিশোর গ্যাং অনেকাংশে বিধস্ত।
কিন্তু বছরের বিশেষ দিন কিংবা বিশেষ বিশেষ মূহুর্তগুলোতে এই কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
রাজশাহী উপশহর এলাকার ২ নং সেক্টরের প্রফেসর হারুনর রশীদ অভিযোগ করে জানান – সকাল ১০ টার দিকে স্থানীয় উপশহর ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সংঘের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন কিশোর হ্যাপি নিউ ইয়ারের পিকনিকের চাঁদা দাবি করে। আমি তাদের দেখেই বুঝতে পারি এরা বখাটে ও কিশোর গ্যাং এর সদস্য। এসময় স্থানীয় ফাঁড়িকে ফোন দিতে গেলে ঐ সকল কিশোর পালিয়ে যায়।
রাজশাহী সপুরা এলাকার ঔষুধের ব্যবসায়ী ইমরুল কায়েস বলেন – গত ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে কয়েকজন কিশোর এসে টাকা দাবি করলে আমি তাদের ৫০০ টাকা দিই কিন্তু পরবর্তীতে অর্থাৎ ২৮ তারিখে সন্ধ্যার সময় উপশহর এলাকার কয়েকজন কিশোর এসে পিকনিকের টাকা চাইলে, আমি দিতে অস্বীকার করি। এমন সময় তারা আমাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। তবে এরা প্রায় প্রায় স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম করেও বলেন বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে বলেও অভিযোগ জানান এই ক্ষুদে ব্যবসায়ী।
অন্যদিকে রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত এলাকা উপশহরে অবস্থিত একমাত্র তিন তারকা হোটেল ও রিসোর্ট রাজশাহী ইনন রেসিডেন্সিয়ালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক – গত তিন দিন ধরে হ্যাপি নিউ ইয়ারের পিকনিকের ওসিলায় কয়েকজন কিশোর বারংবার টাকা দাবি করে আসছে। এমতবস্থায় আমি তাদের সবিনয়ে অনুরোধ জানিয়ে বলি আমি নতুন একজন উদ্যোক্তা আমাকে প্লিজ একটু সময় দিয়ে সহযোগীতা করুন আমি আপনাদের জন্য মাঠে খেলাধূলার জন্য ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন কিংবা কেরাম বোর্ড দিয়ে সহযোগীতা করব। কিন্তু তারপরও তারা আমার কাছে টাকা দাবি করে আসছে যা আমাদের সমাজে আগামী প্রজন্মের জন্য এক ভয়াবহ রুপ ধারন করতে পারে।