ষ্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক ওসি, এসআই ও কন্সটেবলসহ ১০ জন পুলিশ সদস্যসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন রাজশাহী জেলা মহিলা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক লাইলা সুলতানা লিজা ।
রাজনৈতিক কারণে তার বাসায় অভিযানের নামে ভাঙচুর, শারীরিকভাবে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ মামলাটি করেন লাইলা সুলতানা লিজা নামের ওই নারী। আদালতে বাদীর আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মাহমুদুর রহমান রুমন।
রাজশাহী জেলা মহিলা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক লাইলা সুলতানা লিজা উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের প্রতিবেদককে জানান, আদালতের বিচারক ফয়সাল তারেক মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন।
উক্ত মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ। ২০১৭ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারির এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা করা হয়।
মামলায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের যে ১০ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে তাঁরা হলেন— রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন, তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা, উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম, এসআই মো. শাহিন, বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ মনির ও কনস্টেবল হৃদয় কুমার, কনস্টেবল আনোয়ার, কনস্টেবল আফাজ, কনস্টেবল সাবিনা ও কনস্টেবল রুমিনা।
মামলার অন্য ৪২ আসামির মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. টুলুর নামও আছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, মামলার বাদী দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিগত সময়ে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা এবং নাজেহাল করার চেষ্টা করতেন। বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ওসি শাহাদাত ও ওসি তদন্ত বাদশা তাঁকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য এবং ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন।
উক্ত বিষয়ে আতঙ্কিত হয়ে লাইলা সুলতানা ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। তখন ওসি শাহাদত হোসেন জিডি না নিয়ে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
এরই জেরে পরবর্তীতে ৩রা ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য লাইলার পৈতৃক বাড়ি গিয়ে তাঁকে টানাহেঁচড়া করে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। অন্য আসামিরা বাড়িটি ভাঙচুর করতে থাকেন। ওই সময় ওসি শাহাদত লাঠি দিয়ে লাইলার মাথায় আঘাত করলে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে তাঁর মাথায় পাঁচটি সেলাই দেওয়া হয়। মামলার ২ নম্বর আসামি পুলিশ পরিদর্শক সেলিম বাদশা লাঠি দিয়ে লাইলাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। ৪ নম্বর আসামি মনির টানাহেঁচড়া করেন। তিনি লাইলাকে শ্লীলতাহানি করেন।
উক্ত সময় লাইলার বোন শামীমা সুলতানা লাকী তাঁকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন। ৩০-৪০ মিনিট ধরে অন্য আসামিরা তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
ঘটনার পর লাইলাকে পুলিশের পিকআপে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল থেকে তাঁকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়।
মামলার আরজিতে আরও বলা হয়েছে, ওসি শাহাদত হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের সঙ্গে নিয়ে লাইলাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন এবং বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। ওই সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও আসামিরা তাঁর চিকিৎসার কাগজপত্রও তাঁকে দেননি।
পরে লাইলা জামিন পেলে আসামিরা আবারও নানাভাবে হুমকি দেন। রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় আসামিদের ভয়ে এত দিন মামলা করতে পারেননি লাইলা।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com