জেলা প্রতিনিধি, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে মিয়ানমার বাহিনীর গোলা এসে পড়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। রোববার টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সাথে পতাকা বৈঠকে সীমান্ত প্রটোকল মেনে চলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। প্রায় তিন মাস ধরে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলির কারণে সীমান্তে অস্থিরতা চলছে। সীমান্তের এপারে বাংলাদেশের বাসিন্দারাও আতঙ্কে রয়েছেন। মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা গোলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার সকাল ন’টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে পৌঁছায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিজিপি'র দুইটি স্পিডবোট। তিন কর্মকর্তাসহ বিজিপি প্রতিনিধি দলে ছিল ৯ সদস্য। সকাল দশটায় শাহ পরীর দ্বীপ বিওপিতে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির ৮ সদস্যের সাথে শুরু হয় পতাকা বৈঠক। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের পিউন ফিউর ১১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো।বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা ও মিলিটারী হেলিকপ্টারের নানা কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। এই প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে সীমান্ত প্রটোকল মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেয় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট সংলগ্ন বিজিবির সোদান রেস্ট হাউজে এ পতাকা বৈঠক সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকাল ৩টায় শেষ হয়।
তিনি বলেন, বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তের গোলাগুলি বিষয়ে আলোচনা করে। সেখানে একাধিকবার বাংলাদেশের ভেতরে গোলা পড়া ও মিয়ানমারের হেলিকপ্টারের আকাশসীমা লংঘনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। এজন্য বিজিপির পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করে এরূপ ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এই বিজিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে। বৈঠক অনুপ্রেবশ রোধ, মাদক চোরাচালন বন্ধ করতে কাজ করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয় বলেও তিনি জানান।শেখ খালিদ বলেন, বৈঠকে বিজিপির পক্ষে অভিযোগ করা হয়– মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, কখনও কোনো সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো প্রকার সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সন্ত্রাসীদের কোনো সহায়তা করে না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
বিজিবির রামুর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ জানান, পতাকা বৈঠকটি নিয়মমাফিক বৈঠকের একটি অংশ। গত তিন মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিলো। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজী হয় এবং বৈঠককে আন্তরিক পরিবেশে শেষ হয়।
[embed]https:\/\/preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//preview-xupnewsc.uttorbongoprotidin.com//youtu.be/9Ug9eebvnAQ[/embed]
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com