নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহী নগরে অটোরিকশা ভাড়া ন্যূনতম ১০ টাকার দাবিতে হঠাৎ করে দুই দিন ধর্মঘট করার পর আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে পুরোদমে অটোরিকশা চলাচল করছে। আকস্মিক ধর্মঘটে নগরবাসীর দুর্ভোগ বিবেচনায় নিয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে ৩০টি বাস দিয়ে সিটি সার্ভিস বাসসেবা চালু করে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ। এরপর গতকাল সন্ধ্যার দিক থেকেই অটোরিকশা নিয়ে রাস্তায় নামেন চালকেরা। একাধিক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে তাঁদের আয়–রোজগার নেই। নিজেদের প্রয়োজনেই অটোরিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। তবে তাঁরা চান, অল্প কিছু হলেও ভাড়া বাড়ানো হোক।
এদিকে বাসসংখ্যা কমিয়ে সিটি সার্ভিস চালু রেখেছে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ। এই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাফকাত মঞ্জুর আজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুর্ভোগ কমাতে মূলত সিটি সার্ভিস চালু করেছেন। সেটা এখনো চলছে। তবে বাসের সংখ্যা কমানো হয়েছে। এটা তাঁরা চালু রাখতে চান। এর আগে কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই গত রোববার সকাল থেকে অটোরিকশাচালক ও মালিকদের একটি পক্ষ অটোরিকশা চালানো বন্ধ করে দেয়। এই খবর পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়লে বেশির ভাগ অটোরিকশার চালক আর গাড়ি বের করেননি।
চালক ও মালিকেরা অটোরিকশাভাড়া ন্যূনতম ১০ টাকা করার দাবিতে সেদিন বেলা ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। গতকাল দুপুরে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে কোনো চালক বা মালিক আলোচনায় যোগ দেননি।
অটোরিকশা নির্ভর রাজশাহী শহরে হঠাৎ করে এই যান বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। প্রথম দিন কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে তাঁদের দুই সিটের অটোরিকশায় করে চলাফেরা করতে হয়েছে। দ্বিতীয় দিন সিটি বাস সার্ভিস চালু হলে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমে।বাস চালুর পর অটোরিকশা নিয়ে বের হন আবদুল মালেক নামের এক চালক। তিনি বলেন, দুই দিন তিনি বাড়িতেই ছিলেন। কাজে যাননি। বাস চালু হয়ে গেলে তাঁদের কি অবস্থা হবে, সেটা ভেবে তিনি আজ অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছেন। তবে তিনি চান, আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের ভাড়া বাড়ানো হোক।
নিজের কেনা অটোরিকশা চালান মজিবর রহমান। তিনি উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাজশাহীতে একমাত্র কর্মসংস্থান বলতে পারেন এই অটোরিকশা চালানো। এর বাইরে তো কাজই নেই। তবে এতে আর পুষে না। পাঁচ টাকার ভাড়ায় কি হয়! তবে বাস চালু হলে না খেয়ে মরতে হবে।’
রাজশাহী অটো রিকশাচালক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা সাংগঠনিকভাবে এই আন্দোলনের ঘোষণা দেননি। একটি বিছিন্ন পক্ষ এই আন্দোলনের ডাক দিয়ে দুই দিন মানুষকে দুর্ভোগে রেখে এখন মাঠ ছেড়েছে। তিনি জানান, আজ বিকেলে তাঁরা নগর ভবনে আলোচনায় বসবেন। তবে সেখানে তাঁদের পক্ষ থেকে ভাড়ার বিষয়ে কিছু বলবেন না। কারণ, দুই দিনের ধর্মঘটে অটোরিকশার চালকেরা সেই আলোচনার জায়গাটা নষ্ট করে দিয়েছেন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ইজিবাইক-অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক সরিফুল ইসলাম উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন, অটোরিকশার মালিক ও চালকদের একটি পক্ষ কোনো ধরনের আগাম ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট ডাকে। এ নিয়ে তারা কোনো দাবি–দাওয়াও আগে জানায়নি।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com