ষ্টাফ রিপোর্টার, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিলুপ্ত হয় আওয়ামী সমর্থিত রাজশাহীর দলিল লেখক সমিতির মত গুরুত্বপূর্ণ সমিতিসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের কমিটি। সেই সাথে গা ঢাঁকা দেয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা।
কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে রাজশাহী মহানগরীতে আওয়ামী ঘরানার অনেকেই আবার এলাকায় ফিরে এসে সাধারণ মানুষের তকমা নিয়ে ভাড়ায় ও মহল্লায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অন্যতম উদাহারন চলতি বছরের ২রা নভেম্বর রাজশাহী কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার সংঘর্ষের ঘটনা।
এরই মধ্যে রাজশাহী কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বার্তা সংস্থা ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায়। কিন্তু আড়ালে থেকে গেছে এই সংঘর্ষের ঘটনার নেপথ্যের মূল খলনায়ক।
সরেজমিন অনুসন্ধানে এলাকাবাসী জানায়, রাজশাহী মহানগরীর উপকন্ঠে কাঁঠালবাড়িয়া এলাকাবাসী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সর্বজ্যেষ্ঠ সন্তান আরাফাত রহমান কোকো । সেই আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে অত্র এলাকার যুব ও তরুন সমাজ। আর এখানেই বিপত্তি বাধে কাঁঠালবাড়িয়া সাহাজীপাড়া এলাকার সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা ও দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামিম হাসানের। তিনি সাধারণ মানুষের সেজে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে দিয়েছেন সাক্ষাৎকারও। এই শামীম হাসানের আসল পরিচয় না জেনে অনেকেই তাকে সাধারণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
নিম্নে রাজশাহী দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসানের বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছবি ও র্যালিতে উপস্থিত থাকার ছবিও গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে যেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি আওয়ামী কর্মী ছিলেন এবং আছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী কাঠালবাড়িয় অবস্থিত একটি ফুটবল মাঠ রয়েছে। যে মাঠটি দীর্ঘ দিন সাবেক কাউন্সিলর রজবের নিয়ন্ত্রণে ছিল বিধায় সেখানে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যতীত কেউ কোনদিন কোন অনুষ্ঠান কিংবা দলীয় প্রোগ্রাম ব্যতীত খেলাধুলাও করতে পারত না। ৫ ই আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে দখল মুক্ত হয় সেই মাঠ। আর সেই মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির নির্বাহী সদস্য সাজিম।
আর এই টুর্নামেন্ট কে বানচাল করতে উঠে পড়ে লাগেন আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী দলিল লেখক সমিতির প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান। পরবর্তীতে শামীম হাসানের নির্দেশে সর্বপ্রথম রাজশাহী মহানগর বিএনপি‘র যুবদল নেতা সাজিমের লোকজনের উপর হামলা চালায় কানন, ডাবলু, ও জনি নামের কতিপয় যুবলীগ কর্মী যারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত ছিল।
এ বিষয়ে ঘটনার দিন অর্থাৎ ০১/১১/২০২৪ ইং তারিখ রাতে রাজশাহী মহানগর যুবদলের নির্বাহী সদস্য আকলেসুর রহমান সাজিম রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । নিম্নে অভিযোগের কপিটি দেওয়া হলো।
কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান তার দলবল নিয়ে রাজশাহী কাঠালবাড়িয়া সাহাজিপারা এলাকায় বাড়ির সামনে একটি মানববন্ধন করেন।
এদিকে এই মানববন্ধন নিয়ে জনমনে ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।কেননা একজন আওয়ামী পন্থী নেতা ও আওয়ামী সমর্থিত দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান কিভাবে, কার অনুমতিক্রমে এই মানববন্ধনের আয়োজন করল সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন।
তবে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংঘ আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্ট ও খেলার মাঠকে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন নেতাও কর্মীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এরই মধ্যে তীব্র নিন্দা জানিয়ে রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনসহ রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ফায়সাল সরকার ডিকো। তারা বলেছেন – স্বৈরাচারী হাসিনার বাহিনী এখনও সাধারন মানুষের ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা পাড়ায় মহল্লায় ছোট ছোট করে গ্রুপ তৈরী করে নাশকতা তৈরীর প্রস্তুতি চালাচ্ছে। এর অন্যতম উদাহারন আওয়ামী সমর্থিত দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসান। সে আওয়ামীলীগের লোক হয়ে প্রাকাশ্যে ছাত্র জনতার উদ্ধার করা মাঠ নিয়ে যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে তা বরদাস্ত করা হবেনা। আর এই সকল ব্যাক্তিদের যারা সহায়তা করবে তারাও সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের দোষর।
তবে উল্লেখ্য যে, রাজশাহী কাঁঠালবাড়িয়া এলাকাবাসী সকলেই দাবী জানিয়েছেন – সর্বপ্রথম হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী দলের লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসানসহ তার গ্রুপকে অতি শীঘ্রই আইনের আওতাই না নিয়ে আসলে আরো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
তবে সংঘর্ষের বিষয়ে সার্বিক ঘটনা জানার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ও দলিল লেখক সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে রাজশাহী সুশীল সমাজসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন – যারা রাজশাহীর মহানগরীর যেকোনো এলাকার পরিবেশকে অস্থিতিশীল ও সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাবে আইন অনুযায়ী তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা উচিত নতুবা শিক্ষা নগরী রাজশাহীর পরিবেশ অচিরেই অশান্ত হয়ে পড়বে।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.