তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, বড় ধরনের দুর্নীতির তথ্য ধামাচাপা দিতে ফাইল গায়েব করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ৮-৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। নথি চুরির ঘটনার মূল হোতা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ক্রয় ও সংগ্রহ-২ শাখার একজন সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর।তিনি ঊর্ধ্বতন কারও নির্দেশে কাজটি করেছেন।
১৭টি নথিসহ ফাইল গায়েব হওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে গত ২৮ অক্টোবর। এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পাশাপাশি ফাইল গায়েবের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। জিডির ঘটনা তদন্তের জন্য দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তদন্তের অংশ হিসেবে ৩১ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের ছয় কর্মচারীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত সংস্থাটি। পরবর্তীতে আরও পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দুই ঠিকাদারকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুই ঠিকাদারকে ওই দিনই ছেড়ে দেওয়া হলেও ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কয়েক দিন রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত-সংশ্নিষ্টরা। পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।
যে ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তারা হলেন- জোসেফ সরদার, আয়শা সিদ্দিকা, বাদল চন্দ্র গোস্বামী, বারী, মিন্টু মিয়া, ফয়সাল প্রমুখ। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ক্রয় ও সংগ্রহ-২ শাখার সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর আয়েশা সিদ্দিকা ও জোসেফ সরদার, প্রশাসন-২ এর (গ্রহণ ও বিতরণ ইউনিট) অফিস সহায়ক বাদল চন্দ্র গোস্বামী এবং প্রশাসন-৩ শাখার অফিস সহায়ক মিন্টু মিয়াকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জিডির তথ্য অনুযায়ী, গায়েব হওয়া ফাইলগুলো যে কক্ষে রাখা ছিল সেখানে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শাহাদৎ হোসাইনের তত্ত্বাবধানে ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা-২ এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ওই কক্ষে বসেন সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর জোসেফ সরদার এবং আয়েশা সিদ্দিকা। ফাইলগুলো এই দুই কর্মীর কেবিনেটে ছিল।
চুরি হওয়া নথির মধ্যে রয়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ আরও কয়েকটি মেডিকেল কলেজের কেনাকাটা-সংক্রান্ত নথি, ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ট্ক্রিনিং কর্মসূচি, নিপোর্ট অধিদপ্তরের কেনাকাটা, ট্রেনিং স্কুলের যানবাহন বরাদ্দ ও ক্রয়-সংক্রান্ত নথি।
নথি গায়েবের ঘটনায় অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. শাহ্ আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপরই চার কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর বলেন, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চার কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। মামলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com