স্টাফ রিপোর্টার:: তথ্য গোপন করে ব্যাংক, বীমা, ইন্স্যুরেন্স খাতের ৩৯ প্রতিষ্ঠান ৯৭৭ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। শুধু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানও একই কায়দায় ভ্যাট আদায় করেও সরকারি কোষাগারে তা জমা দেয়নি। ফাঁকির দায় স্বীকার করে ইতোমধ্যে ৯ প্রতিষ্ঠান ১২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পরিশোধও করেছে। ভ্যাট গোয়েন্দার নিরীক্ষায় উঠে এসেছে এসব অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এ প্রসঙ্গে ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, গত আড়াই মাসে ৩৯ প্রতিষ্ঠানের বিবরণী নিরীক্ষা করা হয়েছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। সেখান থেকেও মোটা অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটিত হবে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
ভ্যাট
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভ্যাট ফাঁকি শনাক্ত করতে দুই পদ্ধতিতে এগোচ্ছে ভ্যাট গোয়েন্দা। প্রথমত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করা। দ্বিতীয়ত, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীর সঙ্গে ভ্যাট রিটার্নে জমা দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা।
যেসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে সেগুলো হচ্ছে- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা, এবি ব্যাংক ৭৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা, ডক্টর টি ফার্মাসিউটিক্যালস ৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, দ্য ইউএই বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট কোং ৩৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, হোটেল আমারি ঢাকা ২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, লংকা-বাংলা ফাইন্যান্স লি. ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা, নাভানা সিএনজি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ডিপিএস এসটিএস স্কুল ২৩ কোটি ২ লাখ টাকা, হাভাস মিডিয়া ১ কোটি ৮ লাখ টাকা, মেঘনা ব্যাংক ৬৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, হাবিব ব্যাংক ৪৫ লাখ ৭ হাজার টাকা, অ্যাকটেভেটেড মিডিয়া ৫০ হাজার ৩৩৫ টাকা, নাসির গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংক ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ২৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংক একশ’ কোটি টাকা, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ রেইস ম্যানেজমেন্ট ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা, আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, তানভীর পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ ৬২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা, মুন্নু সিরামিকস লিমিটেড ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ইউনিভার্সেল রিফাইনারি ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা, পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ ২ কোটি ২২ লাখ টাকা, গ্রান্ড ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ ২৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, বেঙ্গল মাইন্স ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ৪৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা, এলাহি নূর চা বাগান ১ কোটি ১ লাখ টাকা, এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ ৮৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪৬২ কোটি টাকা এবং প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
এর মধ্যে ফাঁকির দায় স্বীকার করে ৯ প্রতিষ্ঠান ১২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পরিশোধও করেছে।
এগুলো হল- ওয়ান ব্যাংক ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ রেইস ম্যানেজমেন্ট ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা, মুন্নু সিরামিকস ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ইউনিভার্সেল রিফাইনারি ১২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ ১ কোটি ৮ লাখ টাকা, গ্রান্ড ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ ১৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা।
এর মধ্যে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) ছাড়াও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এবং ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ রয়েছে। এসব বিভাগ দেশব্যাপী রাজস্ব ফাঁকি ধরতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে আকস্মিক অভিযান ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র জব্দ করে বিশেষায়িত নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি বের হয়েছে।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.