নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের দ্বিতীয় ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও দেহরক্ষী মো. জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ সোমবার সন্ধ্যায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ রাজধানীর চকবাজারে হাজি সেলিমের বাসার নিচে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আশিক বিল্লাহ জানান, অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস এবং মাদক রাখা ও সেবনের দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এ ছাড়া তাঁর কক্ষ থেকে লাইসেন্স বিহীন বিদেশি অস্ত্র, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফ কেইস, মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেহরক্ষী মো. জাহিদের কাছ থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ৩৮ থেকে ৪০টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।
আশিক বিল্লাহ বলেন, এ ছাড়া আমরা তাঁদের কাছ থেকে গুলি, হ্যান্ডকাফ, একটি ড্রোন এবং কন্ট্রোল রুম থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ভেরি হাই সিকিউরিটি সেট (ভিএইচএস) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা ওয়াকিটকির একটি আধুনিক সংস্করণ। এ ছাড়া ওই বাসায় টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এর আগে আজ দুপুর থেকে চকবাজারের ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’ ঘিরে রাখেন র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। পরে তাঁরা বাসায় প্রবেশ করেন। ২৬, দেবীদাস ঘাট লেনের বাড়িটি ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের।
অভিযানকালে ওই বাড়িটিকে ঘিরে শত শত মানুষ জড়ো হয় চকবাজার এলাকায়। আটতলা বিশিষ্ট বাড়িতে হাজি সেলিম নিজে এবং তাঁর ছেলেরা থাকেন। হাজি সেলিমের তিন ছেলে। তাঁর মেজ ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম থাকেন পঞ্চম তলায়। চতুর্থ তলায় থাকেন ইরফান সেলিমের স্ত্রী, বাড়ির দ্বিতীয় তলায় হাজি সেলিম এবং ষষ্ঠ তলায় থাকেন বড় ছেলে সুলাইমান সেলিম। ছোট ছেলে আশিক সেলিম অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখা করেন। বাকি তলাগুলো ভাড়া দেওয়া রয়েছে।
হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম গতকাল রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদের ওপর হামলা মামলার প্রধান আসামি। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদ মামলার ৩ নম্বর আসামি। ওই মামলার আসামি হাজি সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইরফান সেলিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় হত্যা চেষ্টার মামলা করেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী মিয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল রাতের ঘটনায় আজ সোমবার সকালে একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৬। এ মামলার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওয়াসিফ আহমদকে রক্তাক্ত দেখা যায়। ভিডিওতে তাঁকে মারধর করে তাঁর দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে বলেও দাবি করেন।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com