নিজস্ব প্রতিনিধিঃ থানা এলাকায় আইনশৃংখলা এতটাই অবনতি হয়েছে যে একক থানায় এলাকায় ৭ টি জুয়ার বোর্ড চলে। একটি থানায় এলাকায় মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশের পালিত কিছু সোর্স ও দালাল। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (চন্দ্রিমা থানার) কিছু সদস্য গ্রেপ্তার বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা সাধারণ মানুষকে আটক করে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ব্যাপারে কয়েকজনের বিরম্নদ্ধে জেলা প্রশাসক ও আরএমপির কমিশনার হুমায়ুন কবিরের কাছে লিখিত অভিযোগও পড়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাসত্মা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাজশাহীর এক কলেজ ছাত্রকে মাদক মামলার আসামি করেছে পুলিশ। এর আগে ওই ছাত্রকে ছেড়ে দিতে তার পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ সদস্যরা। টাকা না পেয়ে দফায় দফায় থানায় আটকে রেখে নির্যাতনের পর মাদকের মামলায় আদালতে নেয়া হয়েছে ওই ছাত্রকে। গুরম্নতর এই অভিযোগ রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরম্নদ্ধে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, চন্দ্রিমা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীনুর ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলাম, মামুনুর রশীদ, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও রায়হান ফকির। ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র ফয়সাল আলী সাগরের (১৭) মা রোকসানা পারভীন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাগর নগরীর শহিদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের (বরেন্দ্র সরকারি মহাবিদ্যালয়) ব্যবসায় শিড়্গা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার খেলাধুলা করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়ি ফিরছিল সে। এ সময় শিরোইল কলোনীর ৩ নম্বর গলি খোদাবঙ মোড়ের কাছে অবস্থানরত একদল পুলিশ সাগরকে থামায়। সেখানে তার দেহ তলস্নাশী করে। কিন্তু কিছু না পেয়েও তাকে আটক করে রাখে। অকারণে আটকে রাখায় বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করে কলেজছাত্র সাগর। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই শাহীনুর ইসলাম তার জামার কলার ধরে গাড়িতে তুলে নেন। এর পর তাকে নির্যাতন করা হয়।
রোকসানা পারভীন আরও জানান, রাত ৯টার দিকে সাগরকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও দ্বিতীয় দফায় সাগরকে নির্যাতন করা হয়। এর পর পুলিশ সাগরকে বলেন, বাবা-মাকে ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা নিয়ে চন্দ্রিমা থানায় দেখা করতে বল। টাকা না দিলে হেরোইন মামলায় হাজতে পাঠিয়ে দেবার হুমকি দেন তারা। কিন্তু সাগরের গরীব মা-বাবার পক্ষে ২ লাখ টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে পুলিশ মাদক মামলায় সাগরকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ রোকসানা পারভীনের।
সাগরের বাবা হোটেল কর্মচারী সাহেব আলী জানান, ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য গেলে পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে সারারাত এখানে সেখানে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ায়। আর টাকা দেন বলে। এ সময় আমাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আমার ছেলে কোনভাবেই মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত না। এদিকে শিরোইল কলোনীতে সরেজমিনে গেলে জানা যায় চন্দ্রিমা থানা পুলিশের অগনিত অভিযোগ। চন্দ্রিমা থানার এস আই শাহীনুর ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা হয়রানি করে সাধারণ নাগরীক জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অনেক পুরাতন। তবে সকল অভিযোগ ওপেক্ষা করে গ্রেপ্তার বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন এই উপরোক্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্য। অভিযোগ আছে উপরোক্ত পুলিশ সদস্যরা একটি কুচক্রি মহলের ইন্দনে সকল অপকর্ম পরিচালনা করছেন তারা। কানার মোড়ের প্রায় ২০ -২৫ জন লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন সাংবাদিকের নিকট, কিভাবে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে দালাল মারফত আদায় করা হয়েছে মোটা অংকের অর্থ। অর্থ আদায় বা হয়রানি করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, জমি দখল, রাজনৈতিক নেতার ছত্র ছায়ায় বিত্তবানদের মিথ্যা মামলা দিয়েছে এই কতিপয় পুলিশ সদস্য। অজ্ঞাত কারনেই প্রতিবার অপকর্ম ও গ্রেপ্তার বানিজ্য করেও সেই একক থানায় দেখা যায় এস আই শাহীনুর ও মামুন নামের সেই পুলিশ সদস্যদের। ইতিপুর্বেও এস আই শাহীনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েছে উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কিন্তু বারংবার পারপেয়ে যান তিনি। তার নিজস্ব মোটর সাইকেল নিয়ে তার নিজস্ব দালাল নামের সোর্সরা ছিনতাইকবলে জনতার হাতে আটক হলে সেই খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পরও বহাত তবিয়ে থাকেন তারা।
অভিযোগ আছে হজ্ব কাফেলার এক ব্যাক্তিকে হজ্ব যাত্রা ব্যহত করতে যাত্রার ঠিক আগের মুহুতে সেই ব্যাক্তিকে আটক করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায় থানা পুলিশ। এছাড়াও রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে যখন তখন যাকে তাকে ধরে নিয়ে সেই নেতার মাধ্যমে চাওয়া হয় অর্থ অন্যথায় মিথ্যা মাদক মামলায় যেতে হয় জেলে। শিরোইল কলোনীতে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকার মুরুবিরা জানান,পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা চাইলে গোপনে এলাকায় খোঁজ খবর নিলে জানতে পারবে বর্তমানে পুলিশ কত ভয়ংনকভাবে নির্যাতন করছে সাধারন এলাকাবাসীকে। এক অভিভাবক আক্ষেপ করে বলেন টাকা না দিতে পারায় আমার ছেলেকে হিরোইন দিয়ে চালান করেছে থানা পুলিশ।
তিনি আরো বলেন আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোন মাদক মামলা ছিল না, তারপরও তারা মাদক মামলা দিয়ে আমার ছেলের সুন্দর ভবিষৎ যারা নষ্ট করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে। এদিকে এক দোকানী জানান এলাকায় থাকলে পুলিশকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে অন্যথায় হয়রানি, নির্যাতন, মিথ্যা মামলার আসামী হতে হবে। তিনি আরো জানান,পুলিশ তাদের সোর্স দিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা করছে, আবার তাদের সোর্স দিয়ে সাধারন মানুষের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে ফাসাচ্ছে। উক্ত বিষয়ে কথা বলতে আর এম পি মিডিয়া মুখপাত্র রুহুল কুদ্দুসের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি বলেন কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে তা তদন্তধীন আছে। কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com