সেফহোম ছেড়ে সন্তানসহ শ্বশুর বাড়িতে কিশোরী

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিনিধি,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন : একমাস বয়সী শিশু সন্তানসহ রাজশাহী সেফহোম ছেড়েছে বগুড়ার পনেরো বছর বয়সী এক কিশোরী মা। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে ৪টার দিকে কোলে শিশু সন্তান নিয়ে শ্বশুর সাইদুর রহমানের সঙ্গে ওই কিশোরী সেফহোম ছেড়ে যায়।

রাজশাহী সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক হাসিনা মমতাজ সেফহোম থেকে ওই কিশোরীর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি ওই কিশোরীর মুক্তি সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের কপি তাদের হাতে এসে পৌঁছায়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে বুধবার বিকেলের দিকে সে চলে গেছে।

রাজশাহী সমাজসেবা অধিদফতর সূত্র জানায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া ওই কিশোরী ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর জেএসসি পরীক্ষা শেষে নানা বাড়ি বেড়াতে যায়। পরদিন নানির সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার বাসিন্দা মিন্টু মিয়া (২১) তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।

অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিন্টুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের জুনে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন মেয়েটির বাবা।

উদ্ধারের পর থেকে কিশোরী তার বাবার কাছেই ছিল। তবে সন্তান হওয়ার পর তাকে মামলায় বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়। ওই সময় মিন্টু তার স্ত্রীকে নিজ হেফাজতে নিতে আবেদন করেন। আবেদন নামঞ্জুর করে শিশুসহ ভুক্তভোগীকে রাজশাহীর সেফহোমে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

ওই মামলায় ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ঘটনার এক বছর পর গত ২০ ডিসেম্বর মিন্টু ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। কিন্তু আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেয় ভিকটিম কিশোরী। ওই জবানবন্দিতে ভিকটিম দাবি করে, আসামি মিন্টুসহ ৪-৫ জন তাকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরে জোরপূর্বক বিয়ে ও শারীরিক সম্পর্ক করে। তাকে পরিবারের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগও করতে দেয়নি।

আদালতের নির্দেশে পরে ওই কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা হয়। সেখানে ভিকটিম দাবি করে, আসামির সঙ্গে তার আড়াই মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। উভয়ের সম্মতিতে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

এদিকে, নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান অভিযুক্ত মিন্টু মিয়া। এরপর গত ৭ জানুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মিন্টু মিয়ার এক বছরের জামিন দেন।

একই সঙ্গে, সেফহোমে পাঠানো সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছা অনুসারে বাবা-মা কিংবা স্বামীর জিম্মায় মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে বাবা-মায়ের কাছে না গিয়ে ওই কিশোরী সন্তানসহ শ্বশুরের সঙ্গে সেফহোম ছেড়ে গেছে বুধবার।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.