সুইডেনে কেবল প্রধানমন্ত্রী গাড়ি পান,এমপি মন্ত্রীদের জন্য গণপরিবহন:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক সংবাদ ,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন::সুইডেনে রাজনীতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়, যা তাদের কাছে জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে একটি চাকরির মতো। এ কারণে খুব ভালো অংকের হাতখরচ আর নানারকম বাড়তি সুযোগ সুবিধা পাওয়া তো দূরের কথা, বরং জনগণের করের অর্থ ব্যয়ের ব্যাপারে সুইডেনে অত্যন্ত কড়াকড়ি রয়েছে পার্লামেন্ট সদস্যদের ক্ষেত্রে ওপরে।

এ বিষয়ে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একজন পার্লামেন্ট সদস্য প্রি-অর্নে হাকানসন বলেন, আমরা হচ্ছি দেশের সাধারণ নাগরিক। এমপির জন্য অতিরিক্ত সুবিধা পাবার বিষয়টি কোনভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়, কারণ আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা, তারা যে অবস্থায় বা যেভাবে বসবাস করছেন, সেটাকেই তুলে ধরা।

রাজনীতিবিদ হিসাবে শুধুমাত্র দেশটির প্রধানমন্ত্রী সরকারি গাড়ি পান। পার্লামেন্ট সদস্যরা পাবলিক পরিবহনে বিনামূল্যে যাতায়াত করতে পারেন। অন্য অনেক দেশের মতো তারা নিজের জন্য কোন গাড়ি বা চালক পান না। হাকানসন এমপি বলেন, আমরা শুধু এটা বলতে পারি, আমাদের সুবিধা এটাই যে, আমরা এই কাজটি করতে পারছি আর দেশ পরিচালনায় প্রভাব রাখতে পারছি। সুইডেনের এমপিরা মাসে আয় করেন গড়ে ৬৯০০ ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রের একজন কংগ্রেসম্যানের মাসিক বেতনের অর্ধেক।

যেসব এমপির নির্বাচনী এলাকা রাজধানী স্টকহোমের বাইরে, তারা ‘ট্রাটামেন্ট’ নামের একটি বিশেষ ভাতা দাবি করতে পারেন। সেটি হচ্ছে যে কদিন তারা রাজধানীতে থাকবেন, ততদিনের জন্য একটি দৈনিক ভাতা। প্রতিদিনকার জন্য প্রায় ১২ ডলার, যা দিয়ে স্টকহোমে একবেলার জন্যও খুব বিলাসী কোন খাবার কেনা যাবে না। কফি কেনার জন্যও তাদের নিজেদের অর্থ ব্যয় করতে হয়।

তবে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত সুইডেনের পার্লামেন্ট সদস্যরা কোন ভাতাও পেতেন না। তার বদলে দলের কর্মীরা এই এমপিদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতেন। ১৯৫৭ সাল থেকে সুইডেনের পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা ভাতা পেতে শুরু করেন। পার্লামেন্টের নথিপত্রে দেখা যায়, বেতন দেয়ার বিষয়টি এজন্য চালু করা হহয়েছে যাতে কোন নাগরিকের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে না পড়ে। কিন্তু সুইডিশরা এটাও চান না যেন এই বেতন আবার তাদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

বিশ্বের অনেক দেশের মতো সুইডেনের এমপিরা ভর্তুকি মূল্যের আবাসন পেতে পারেন। তবে শুধুমাত্র তারাই পাবেন, যারা স্টকহোমে থাকেন না। আর তাদের সেই থাকার জায়গাটি কোন বিলাসবহুল স্থান নয়। প্রি-অর্নে হাকানসন বলছেন, তিনি থাকেন মাত্র ৪৬ বর্গমিটারের একটি অ্যাপার্টমেন্টে। সরকারি পরিচালনার অনেক স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের আকার মাত্র ১৬ বর্গমিটার।

সরকার পরিচালিত অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে ওয়াশিং মেশিন বা ডিসওয়াশারের মতো আসবাবপত্রও থাকে না। আসবাব বলতে সেখানে শুধুমাত্র একজনের থাকার মতো একটি সিঙ্গেল বেড রয়েছে।

কারণ জনগণের অর্থ শুধুমাত্র একজন এমপির খরচের জন্য, এসব অ্যাপার্টমেন্ট একরাত থাকতে হলে তার সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যদের অর্থ দিতে হবে। যদি কোন সংসদ সদস্য যদি তার সঙ্গীর সঙ্গে থাকতে চান, তাহলে ভাড়ার অর্ধেক তাকে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।

পার্লামেন্টের কর্মকর্তা আনা অ্যাস্পেগ্রেন জানান, এমপি ছাড়া আর কাউকে এসব অ্যাপার্টমেন্টে থাকার খরচ দেয়া হয় না।এমপিরা ইচ্ছা করলে অন্য কোথাও থাকতে পারেন, তবে তার জন্যে প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৮২০ ডলার পাবেন, যা স্টকহোমের কেন্দ্রস্থলের ভাড়ার হারের তুলনায় অত্যন্ত কম। অবশ্য ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এমপিরা ভর্তুকি মূল্যে কোন আবাসন পেতেন না। তাদের তখন নিজেদের অফিসে ঘুমাতে হতো, যা ছিল মাত্র ১৫ বর্গমিটারের। ব্যক্তিগত সহকারী বা উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে এমপিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.