রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক খায়রুলের বিরুদ্ধে আবারো অভিযোগ

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার :: সম্প্রতি রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর খায়রুল তালাইমারীর শহিদ মিনার এলাকার কমলা নামের সাবেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে রাজশাহী মহানগর ডিবির সকলের জন্য মাস্ক কেনার নামে ২০ হাজার টাকা দাবী করলে সেই সংবাদ বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকাসহ জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেলেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অবশেষে ইন্সপেক্টর খায়রুলের সোর্সের হাতে ১২ হাজার টাকা দিয়েও মুক্ত হতে পারেননি ক্যান্সারের রুগী কমলা। তাকে অন্য থানার সহযোগীতায় মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যান ইন্সপেক্টর খায়রুল।

এদিকে আজ মঙ্গলবার বেলা ২ টার দিকে রাজশাহী মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরারবর রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর খায়রুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন শরিফুল ইসলাম নামের জনৈক এক ব্যাক্তি।

ভুক্তভুগীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন – গত ইং-২৭/০৭/২০২০ইং তারিখে দুপুর ১২.০০ ঘটিকার সময় আমার বাড়িতে উপস্থিত হয় ডিবির ওসি মো: খায়রুল ইসলাম সহ নাম না জানা অফিসার ফোর্স । আমি বাড়িতে না থাকায় আমার স্ত্রী মোছাঃ মালাকা বেগম ও আমার বড় মেয়ে নুপুর, ছোট মেয়ে সুকতারাকে আটক করে। পরে আমি মোবাইল ফোনে জানিতে পারি আমার পরিবারের লোকদের পুলিশ আটক করেছে। পরে আমি জানতে চাই কি জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলে তোর বাড়িতে হিরোইন ও ইয়াবা পাওয়া গেছে। কিন্তু আমার বাড়িতে কোন হিরোইন ও ইয়াবা পাওয়া যায়নি বিষটি আমার বাড়ির আশাপাশের লোকজন জানে। লোক মারফত আমাকে প্রস্তাব দেয় যে তোর বাড়ির লোকদের ছাড়াতে হলে ৩ (তিন) লক্ষ টাকা দিতে হবে। না দিলে তোর পরিবারের সবাইকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে মামলা দিবো। আমি আমার পরিবারের কথা চিন্তা করে কামরুলের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ওসির সঙ্গে কথা বলে। পরে কামরুল জানায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিতে পারিলে তোদের সবাইকে ছেড়ে দেবে এবং কোন মামলা দিবে না। আমি টাকা দিতে স্বীকার করি এবং ৩ দিন সময় নিয়ে আমার বাড়ির ২ কাঠা জমি মো: সুকেস এর কাছে বিক্রয় করি এবং আমার স্ত্রীর গলার স্বর্ণের চেন কামরুলের কাছে ৩০ হাজার টাকায় বন্ধক রাখি। আমি ওসিকে নিজ বাড়িতে ডেকে তার হাতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আমি ও আমার পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে দেই এবং আমার বাড়ির আশেপাশের লোক জানে। ওসি খায়রুল বলে এই কথা আর কাউকে জানাবিনা, যদি জানাস তাহলে তোদেরকে তুলে নিয়ে গিয়ে মামলা দেব। তাই আমি কাউকে কোন কিছু বলতে পারিনাই। এখন আবার আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে মামলা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এবং আমাকে খোজাখুজি করছে। আমি তার ভয়ে এলাকায় থাকতে পারছি না এবং আমার পরিবার তার অত্যাচারে নিরাপদ নয়।

এদিকে আরো জানা যায় , মাত্র কয়েকদিন আগেই দুর্গাপুর থেকে রাজশাহীতে এক ব্যাক্তি পাওনা টাকা চাইতে এসে ইয়াবা মামলার আসামী বনে যান ইন্সপেক্টর খায়রুলের আশীর্বাদে।ঐ ব্যাক্তিকে ১০ পিচ ইয়াবা দিয়ে মামলা দেন ইন্সপেক্টর খায়রুল। পরবর্তীতে জানা যায়, দূর্গাপুরের ঐ ব্যাক্তি ইন্সপেক্টর খায়রুলের এক সোর্সের কাছে পাওনা টাকা চাইতে আসলে তাকে এই মিথ্যা মামলার শিকার হতে হয়।এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামীলিগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও সেই সময় মিডিয়ায় এই সকল অফিসারদের দ্রুত অপসারণও দাবী করেন।

২০১৪ সালে রাজশাহী বোয়ালিয়া থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর থাকাকালীন রাজ ও শাহী নামের ২ ছাত্রকে ধরে উলঙ্গ করে শারিরীক নির্যাতনকারী হিসেবে সংবাদের শিরোনাম হন ।সে সময় রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনও ২ সহোদর ভাইকে দেখতে ছুটে যান হাসপাতালে। শুধু তাই নয় ভারসাম্যহীন পুলিশ আখ্যা দিয়ে ততকালীন পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করেন ইন্সপেক্টর খায়রুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে।এরপরই পানিশমেন্ট বদলী হন ইন্সপেক্টর খায়রুল।

উক্ত বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি রুহুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- আপনারা জানেন পুলিশ আইনের উর্ধে নন। যেই অপরাধ করুক না কেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করা হবে। সেই সাথে আমাদের নব্য যোগদানকৃত পুলিশ কমিশনার স্যার দূর্নীতি দমনে বদ্ধ পরিকর।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.