তানোর সংবাদদাতা, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তৃতীয় ঋণ কার্যক্রমের নাম প্রগতি। এই কার্যক্রম ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করে থাকে। তবে প্রগতির ঋণ পেতে দুই কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়েছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালার বাধাইড় ইউনিয়নের টকটকিয়া গ্রামের রইসুল ইসলামকে। রইসুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ এরিয়াভূক্ত ব্র্যাক প্রগতি’র মুন্ডুমালা শাখার সদস্য। তার সদস্য নম্বর ২৯৩।
এ বিষয়ে রইসুল ইসলাম সম্প্রতি প্রগতি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ রিজিওনাল ম্যানেজার (আরএম) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন- ব্র্যাক প্রগতি’র এরিয়া ম্যানেজার (এএম) আসাদুজ্জামান ও প্রোগ্রাম অফিসার (পিও) আলতাব হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রইসুল ইসলাম বছর পাঁচেক ব্র্যাক প্রগতি কর্মসূচীর সঙ্গে লেনদেন করছেন। বর্তমানে তার ঋণ নেয়া আছে ৮ লাখ টাকা। এই ঋণ গ্রহণের পূর্বে গত ১৬ আগস্ট তাকে ১২ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা অগ্রীম কিস্তি নিয়ে ১৮ আগস্ট দেওয়ার কথা বলে পিও আলতাব। তবে তাকে ঋণ না দিয়ে বিভিন্নভাবে ঘোরাতে থাকে; এবং রইসুলের কাছে একটি স্মার্ট ফোন দাবি করে। নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়িক স্বার্থে তাকে একটি মোবাইল স্যামসাং মোবাইল দেয় রইসুল। যার মডেল এ৩০এস ও দাম ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
এরপরও খাজনা-খারিজ জমির দলিল ছাড়া আপনার ঋণ পাস হবে না বলে রইসুলকে ঘোরাতে থাকে। খাজনা খারিজসহ একটি দলিল পিও আলতাবকে দিয়েও কাজ হয়নি। ঋণ দিতে গড়িমশি করে সে। এক পর্যায়ে এরিয়া ম্যানেজার (এএম) আসাদুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন রইসুল। তিনি তাকে আলতাবের সঙ্গেই যোগাযোগ করতে বলেন।
পিও আলতাব হোসেন আবার রইসুলের কাছে একটি স্বর্ণের চেইন দাবি করে; এবং এরিয়া ম্যানেজার আসাদুজ্জামানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে জানায়। এতে রইসুল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এরপর এরিয়া ম্যানেজারের ঘুষ বাবদ ৩০ হাজার টাকা দেন রইসুল। সেই সঙ্গে ঋণ পাওয়ার পর চেইন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে পিও আলতাব ঋণ পাস করে।
কিন্তু চেক পাওয়ার পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত রইসুল জানতেন না তাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে। চেক পাওয়ার পর তিনি দেখেন ১২ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে ৮ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। তারপরেও পিও আলতাব রইসুলের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গিয়ে বাঁধন জুয়েলার্স থেকে একটি চেইন কিনে নেয়। যার দাম ১২ হাজার ৯০০ টাকা। এই ঋণ পেতে পিও আলতাব হোসেন ও এএম আসাদুজ্জামান মিলে মোট ৫৯ হাজার ৪০০ টাকা ঘুষ নিয়েছে। স্বর্ণের চেইন কেনার রশিদসহ রিজিওনাল ম্যানেজার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন রইসুল ইসলাম।
জানতে চাইলে পিও আলতাব হোসেন অভিযোগ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, কে অভিযোগ করেছে? জানিনা তো। ঘুষ নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে এরিয়া ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, এটা মিথ্যা কথা। উনি ফেব্রুয়ারির পর থেকে নিয়মিত কিস্তি দিচ্ছিলেন না। তারপরেও আমাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ দিতে হবে। ১০ লাখের মতে তার চাহিদা ছিল, যেহেতু তার লেনদেন শেষ দিকে ভালো ছিল না, তাই তার সঙ্গে আলোচনা করেই ৮ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। আমরা তাকে বলেছি, আপনি ঠিকঠাক লেনদেন করেন আগামীতে বাড়ানো হবে। ব্র্যাক প্রগতি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ রিজিওনাল ম্যানেজার (আরএম) নিজাম উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমানিত হলে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com