স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক এবং সুপারভাইজারকে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নিদের্শ প্রদান করেছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: মাহবুবুর রহমান।
‘রাজশাহীর একমাত্র কেন্দ্রিয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা (শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা’র) পরিবেশ দূষণ রোধ, পশু-পাখির যথার্থ পরিচর্যা ও পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ এবং দর্শনার্থীদের অধিকার সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন না করার কারণে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না’ এ মর্মে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধির ২৫ ধারার বিধান মোতাবেক তিনি এ নির্দেশ প্রদান করেন। ১২ মার্চ বৃহস্পতিবার তাদের দালিলিক সাক্ষ্যসহ এ লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের দিন ধার্য্য করা হয়।
আদালতের লিখিত এ নির্দেশনায় জানা যায়, দর্শনার্থীদের মৌখিক অভিযোগ এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসীর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, কেন্দ্রিয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় পূববর্তী সময়ে বাঘ, সিংহ, শিয়াল,বন বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রাণি থাকলেও বর্তমানে তা নেই। আবার অনেক খাঁচায় যে প্রাণিগুলোর নাম লেখা আছে সেখানে তা নেই। কিছু প্রাণি থাকলেও তা সঠিক পরিচর্যা ও পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হয় না। আবার যা সরবরাহ করা হয় তা মান সম্মত নয়। আদালত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ১৪,১৫,১৬,১৭,১৯ অনুযায়ী এটিকে অপরাধ বলে গণ্য করেন।
আদালতের লিখিত এ নির্দেশনায় আরো জানানো হয়, উদ্যানের ভিতরের লেকটির পানি ময়লা-আবর্জনা, দূষিত পদার্থ দর্শনার্থীদের ফেলা বর্জ্য দ্বারা পরিপূর্ণ। যা পরিবেশ আদালত আইন-২০১০ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী অপরাধ। আর এই উদ্যানে একটি পুকুর থাকলেও তা দীর্ঘদিন যাবত মরা পুকুর হয়ে আছে। এ ছাড়াও চিড়িয়াখানার বিভিন্ন যায়গায় পিকনিক স্পট তৈরী করা হয়েছে। এখানে বহিরাগত দর্শনার্থিদের কাছ থেকে গাড়ি পার্কিং করার জন্য নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর এটিকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন দর্শনার্থীরা।
চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র থেকে জানাযায়, এই কেন্দ্রিয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় শিশু-কিশোরদের চিত্ত-বিনোদনের জন্য লিজ গ্রহিতাদের রাইড চালু থাকলেও পার্ক কতৃপক্ষে পর্যাপ্ত রাইড নেই, আর যেগুলো রয়েছে তার অধিকাংশই নষ্ট এবং অকেজো।
সূত্র আরো জানান, চিড়িয়াখানার কিছু অসৎ কর্মচারী অধিক বকশিষের লোভে স্কুল চলাকালীন সময়ে উঠাতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের ভেতরে ঢুকতে দিয়ে অসামাজিক কার্যক্রমের সুযোগ করে দিচ্ছে, যা রাজশাহী মহানগরী অধ্যাদেশ-১৯৯২ অনুযায়ী অপরাধ। এ ছাড়াও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে পশু-পাখির বিভিন্ন খাচা খালি রাখা হয়েছে, যা চিড়িয়াখানার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। এর ফলে দর্শনার্থিরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানায়, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা’র সার্বিক দিক পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে ফৌজদারী কার্যবিধির ২৫ ধারার বিধানের অধিনে আদালত তার ক্ষমতাবলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক এবং সুপারভাইজারকে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নিদের্শ প্রদান করেছেন।
এই আদেশের অনুলিপি রাজপাড়া ও বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ১০ মার্চের মধ্যে জারি করা হয়েছে। আশাকরি কর্তৃপক্ষ তাদের সঠিক চিন্তা এবং উদ্যোগের দ্বারা আদালতের উপ¯ি’ত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করবেন। আদেশর অনুলিপি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং আএমপির পুলিশ কমিশনারকে প্রেরণ করা হয়েছে।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.