রাজশাহী কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর জিম্মি এখন উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান হাতে

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: পাহাড় সমান অনিয়ম আর অভিযোগ নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর । সংবাদ প্রকাশ হলেও অজ্ঞাত কারণে সেই সংবাদের কোন তদন্ত বা দাপ্তরিক কোন পদক্ষেপ নেন না উদ্ধর্তন মহল । ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দপ্তরটি নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও, এ পযন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি সংশ্লিষ্টরা । এর মধ্যে নতুনভাবে যোগ হয়েছে রাতে অফিস করা । এমনিতেই দপ্তরটি লোক চক্ষুর অন্তরালে হওয়ায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দপ্তরটি না চললেও রাতে অস্বাভাবিকভাবে দপ্তরটি চালাচ্ছেন দপ্তরের উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান ।

অভিযোগ আছে দিনের বেলায় অফিস ঠিকমত না করলেও রাতের বেলায় তিনি নিয়মিতভাবে অফিস করেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে রাতের বেলায় সরকারী দপ্তরের কাজ কি? অনুসন্ধানে জানা যায়, অফিসের উচ্চমান সহকারী ও ডি আই জি মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ভুয়া বিল ভাইচার তৈরীর কাজ করেন রাতের বেলায় । দিনের বেলায় অফিসের কাজ না করে মাসিক মাসোয়ারা তুলতে পরিদর্শকের ভূমিকায় বিভিন্ন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানে যান উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান । তাই দপ্তরিক কাজ রাতের বেলায় শেষ করেন তিনি । অভিযোগ আছে, অফিসের কেনা কাটায় নানা অনিয়ম করেছেন তিনি ।

কম্পিউটার ক্রয়সহ অফিসিয়াল আসবাবপত্র, থেকে শুরু করে নানা কেনাকাটায় করেছেন পুকুর চুরি । দশ টাকায় জিনিস কিনে ২০ টাকার ভাউচার ঘরে বসেই তৈরী করেন এই উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান । সম্প্রতি অফিসের পিয়ন হাফিজাকে নিয়ে রাতেই অফিস করেন এই উচ্চমান সহকারী । হাফিজার নামেও আছে অগনিত অভিযোগ । অভিযোগ আছে উচ্চমান সহকারীর নির্দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়নকারী আগন্তুকদের ঘুষের টাকা লেনদেন করেন হাফিজার মাধ্যমে ।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই রাজশাহী আঞ্চলিক কায্যলয়ের উচ্চমান অফিস সহকারী খাইরুল ও ডি আই জি মাহফুজুর রহমানের যোগসাজেশে চলছে এই অনিয়ম দুর্নীতি । উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান ও ডি আই জি মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও অজ্ঞাত কারনে বহাল তবিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অনিয়ম । রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান ও ডি আই জি । নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙুল ফুঁলে কলা গাছ হয়ে গেছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল । রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসটি একমাত্র ক্ষমতা ধর উচ্চমান সহকারী ডি আই জির একান্ত আস্থাভাজন ও অপরাধী কর্মকাণ্ডের অংশিদার খায়রুজ্জামান। সমগ্র রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ এলাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মাসিক মাসোহারা উত্তোলন, সহ লাইসেন্স নবায়ন বাবদ মোটা অংকের টাকা নিচ্ছে খায়রুজ্জামান । আর এগুলো করাচ্ছেন খোদ ডিআইজি মাহফুজুর রহমান ।

অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে বলেন, দপ্তরের উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামান ও ডি আই জির যোগসাজশে পরিদর্শকের রিপোর্ট ছাড়াই কারখানার লাইসেন্স অফিস সহকারীর নোটের পরিপেক্ষিতে দিয়ে দেন, যা নিয়ম বহিভুত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা । পূর্বে এই দপ্তরটি রাজশাহী বিসিক শিল্প নগরী এলাকার ম্যাচ ফ্যাক্টরীর মোড়ে ছিল । এখন তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে আবাসিক এলাকায়, অনেকটা নিরিবিলি পরিবেশে । অনেকটা লোক চক্ষুর আড়ালেই অফিসটি ।মহানগরীর নওদাপাড়ার রায়পাড়া নামক স্থানে অফিসটির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয় ।

সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন, বিল ভাউচার সরেজমিনে তদন্ত করলে মিলবে পুকুর চুরি মত বড় ঘটনা । প্রতিটি ক্রয়ে আছে বিস্তর ফারাক । বাৎসরিক বাজেটের হিসাব কষলে বেড়িয়ে আসবে নানা দূর্ণীতি ।

উল্লেখ্য যে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ক্রমবর্ধমান বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবি মানুষের আইনগত অধিকার, নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব দপ্তরটির । কিন্তু সেখানে আইনের প্রয়োগ হয় অর্থের বিনিময়ে, অর্থ দিলে সঠিক আর না দিলেই বেঠিক । শ্রমিকদের কল্যাণ, পেশাগত স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থাসমুহ বাস্তবায়নসহ শ্রম ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা সমুন্নত রেখে মালিক, শ্রমিক, সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সমুন্নত রেখে কাজ করে থাকে দপ্তরটি । সরকারের শ্রম নীতির আলোকে কাজ করার কথা থাকলেও সেখানে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন সেই শ্রমিকরাই ।

এ বিষয়ে উচ্চমান সহকারী খায়রুজ্জামানকে ফোন করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন । তবে রাতে অফিস করার কথা তিনি স্বীকার করেন ।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.