রাজশাহীতে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

লিয়াকত হোসেন :: যৌতুকলোভী স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার রাজশাহী কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকার পশ্চিম বালিয়া গ্রামের এক সন্তানের জননী মোছাঃ ইভা খাতুন মৌসি (২০)।

যৌতুকের টাকা বাবার বাড়িতে আনতে না যাওয়ার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি অমানষিক নির্যাতন চালায় গৃহবধূ ইভা খাতুন মৌসির ওপর।জানা যায় ইভা খাতুনকে হত্যার উদ্দেশ্য তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করেছিলো। প্রতিবেশীরা ইভা খাতুনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সে প্রাণে বেঁচে যায়। ইভা খাতুনের বাড়ি রাজশাহী পবা উপজেলার ৫ নং হড়গ্রাম ইউনিয়নের কাশিয়াডাঙ্গা পশ্চিম বালিয়া গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার মুকিত দীর্ঘদিন কোর্টে মুহুরি হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি মেয়ের সুখের জন্য ৪ বছর পূর্বে ধুমধাম করে ইভা খাতুনকে বিয়ে দেন তার বাবা।

আর পার্শ্ববর্তী রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানাধীন লক্ষিপুর আইডি গেট এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে সারোয়ার হোসেন(২৪) এর সাথে বিয়ে হয় ইভা খাতুনের। বিয়ের সময় ইভা খাতুনের বাবা আনোয়ার মুকিত সুখের জন্য বিভিন্ন আসবাপত্রসহ ৫০ হাজার টাকা উপহার দেন। দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও কিছুদিন পর যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর-শাশুড়ির জ্বালা-যন্ত্রণা ও নির্মম নির্যাতন শুরু হয় ইভা খাতুনের ওপর।

১.৫ বছরের মাথায় তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তার পরেও থেমে নেই স্বামী ও শাশুড়ির নির্মম অত্যাচার।এক পর্যায়ে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা হলে মেয়ে ইভা খাতুন আবার সংসার শুরু করে। স্বামী ও শাশুড়ির নির্মম অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে এরই ধারাবাহিকতায় ২ মাসের মাথায় এসে তাদের ডিভোর্স হয়।

২ বছর পর আবার বাচ্চার কথা চিন্তা করে মেয়ে পুনরায় সংসার করতে রাজি হয়।

উল্লেখ্য,২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে বিয়ে হয়।১.৫ বছর সংসার করার পর ৪ মাসের মাথায় বাচ্চাসহ ডিভোর্স হয়। মেয়ের বড় ভাই নাইম প্রতিবেদককে জানান ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আবার পুনরায় ছেলের বাসায় আমার খালা আমাদের অনুমতি ছাড়ায় বিয়ে দেন। ৭/৮ মাস সংসার করা কালীন সময় ৬/৭ বার নির্যাতন করে।

৮ মাসের মাথায় গত ১৮/৮/২০ তারিখে গলায় ফাঁস দিয়ে স্বামী ও শাশুড়ির পক্ষের লোকজন ইভা খাতুনকে হত্য করতে চেয়েছিলো।

তখন জরুরি ১০৯ এ ফোন দিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে রাজশাহী মেডিকেলের ওসিসিতে ভর্তি করানো হয় এবং সে পাঁচ দিন যাবত ওসিসিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত ৫ জনের বিরুদ্ধে গত ২৫/৮/২০ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি মেয়ের স্বামী সারোয়ার হোসেনকে গত ২৬ আগস্ট গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আর বাকী ৪জন আসামি আপোষ মিমাংসার শর্তে গত বৃহস্পতিবার জামিন নিয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন মেয়ের আত্মীয়-স্বজন ও পশ্চিম বালিয়া গ্রামের এলাকার  বাসিন্দারা।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.